উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: শনিবার সংসদে বাজেট পেশ করেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। আর এবারের কেন্দ্রীয় বাজেটে (Union Finances 2025) আগের তুলনায় মালদ্বীপের (Maldives) সাহায্যের পরিমাণ বাড়িয়েছে ভারত। ২০২৪ সালের বাজেটে মালদ্বীপের উন্নয়নে সাহায্যের পরিমাণ কমানো হয়েছিল। তবে এবছর অর্থমন্ত্রীর পেশ করা বাজেটে তা প্রায় ২৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে দুই দেশের সম্পর্কের মধ্যে যে তিক্ততা তৈরি হয়েছিল, তা কমছে বলে মনে করা হচ্ছে।
বাজেটের নথি অনুসারে, ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষে মালদ্বীপের উন্নয়নের জন্য ৬০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে দ্বীপরাষ্ট্রটির জন্য বরাদ্দ ছিল ৪৭০ কোটি টাকা। তবে যদিও ২০২৪ সালের অন্তর্বর্তীকালীন বাজেটে মালদ্বীপকে ৬০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল। লোকসভা ভোটের পর মোদি সরকার ফের ক্ষমতায় এলে গত জুলাই মাসে পেশ করা বাজেটে মালদ্বীপের বরাদ্দ কমিয়ে ৪০০ কোটি টাকা করা হয়েছিল। পরবর্তীতে সেটি সংশোধন করে আবার ৪৭০ কোটি টাকা করা হয়। গত বছর জানুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদির লাক্ষাদ্বীপ সফর নিয়ে মালদ্বীপের মুইজ্জু সরকারের তিন মন্ত্রী কুমন্তব্য করেছিলেন। তারপর থেকেই ভারত ও মালদ্বীপের সম্পর্কের অবনতি ঘটে। ভারতীয়রা মালদ্বীপ বয়কটের ডাক দেন। যার জেরে মালদ্বীপের পর্যটন ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়। তবে গত বছর অক্টোবরে ভারত সফরে আসেন মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুইজ্জু। মোদির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকও করেন তিনি। তারপর থেকেই ভারত-মালদ্বীপ সম্পর্কের কিছুটা উন্নতি হয়। এবার কেন্দ্রীয় বাজেটেও বাড়ানো হল মালদ্বীপের বরাদ্দ।
এদিকে গত বছর অগাস্টে শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকেই ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কও তলানিতে ঠেকেছে। সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর অত্যাচার, বাড়িঘর ভাঙচুরের মতো একাধিক ঘটনা সামনে এসেছে। তবে এসবের প্রভাব যদিও পড়েনি কেন্দ্রীয় বাজেটে। কারণ বাংলাদেশের (Bangladesh) অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য বরাদ্দ সাহায্যের পরিমাণে কোনও কাটছাঁট করা হয়নি। ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে বাংলাদেশের জন্য বরাদ্দ ছিল ১২০ কোটি টাকা। এবারেও তাই রাখা হয়েছে।
অন্যদিকে উন্নয়নে সাহায্যের জন্য সবচেয়ে বেশি অংশ বরাদ্দ করা হয়েছে ভুটানকে। ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষে প্রতিবেশী দেশটির জন্য বরাদ্দ ২,১৫০ কোটি টাকা। যদিও ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে ভুটানের জন্য বরাদ্দ ছিল ২,৫৪৩.৪৮ কোটি টাকা। এরপরেই নেপালের উন্নয়নের জন্য ৭০০ কোটি টাকা সাহায্যের প্রস্তাব রাখা হয়েছে। যা আগেরবারের মতোই রয়েছে। চলতি অর্থবর্ষে মরিশাসের সাহায্য বরাদ্দ ৫৭৬ কোটি টাকা থেকে কমিয়ে ৫০০ কোটি টাকা করা হয়েছে। অশান্ত মায়ানমারের জন্যও বরাদ্দ ৪০০ কোটি টাকা থেকে কমিয়ে ৩৫০ কোটি টাকা করা হয়েছে। শ্রীলংকার জন্য বরাদ্দ ৩০০ কোটি টাকা অর্থাৎ একই রাখা হয়েছে। আফ্রিকার দেশগুলিতে সাহায্যের প্রস্তাব ২০০ কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে ২২৫ কোটি টাকা হয়েছে। এছাড়াও মঙ্গোলিয়া এবং আফগানিস্তানকে দেওয়া হচ্ছে যথাক্রমে ৫ কোটি এবং ১০০ কোটির সাহায্য।