সামসী: উত্তরে বর্ষা ঢুকেছে কয়েকদিন আগেই। আর তাতেই চাঁচল-২ ব্লকের চন্দ্রপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের খানপুর গ্রামের বাসিন্দারা সমস্যায় পড়েছেন। নিকাশি ব্যবস্থা নেই। জল জমে গ্রামের পাকা রাস্তা যেন পুকুর। টোটো চলার পাশাপাশি চরছে হাঁস। ফলে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে।
খানপুর গ্রামে আব্দুর রশিদের বাড়ি থেকে মিকাইল ডিলারের বাড়ি পর্যন্ত প্রায় ১০০ মিটার রাস্তা বেহাল। বাসিন্দাদের অভিযোগ, নিকাশির কোনও ব্যবস্থা না থাকায় ওই রাস্তায় বর্ষাকালে প্রায় মাস তিনেক জল জমে থাকে। কিন্তু প্রশাসন নির্বিকার। এনিয়ে চরম দুর্ভোগের শিকার গোটা খানপুর সহ আশপাশের আরও পাঁচটি গ্রামের মানুষ।
স্থানীয় বাসিন্দা জাহেদুর রহমানের কথায়, ‘গ্রামের আজাদ মোড় থেকে মিকাইল ডিলারের বাড়ি পর্যন্ত ৫০০ মিটার ঢালাই পাকা রাস্তা। তার মধ্যে আব্দুর রশিদের বাড়ি থেকে মিকাইল ডিলারের বাড়ি পর্যন্ত প্রায় ১০০ মিটার রাস্তার অবস্থা খুবই বেহাল। এক হাঁটু জল জমে রয়েছে। বৃষ্টির জলে পুকুরের আকার ধারণ করেছে। রাস্তা না পুকুর চেনাই যায় না। সাঁতার কাটার মতো জল রয়েছে।’
গ্রামবাসীরা জানালেন, প্রায় ৮ বছর ধরে এই সমস্যা। প্রশাসনের সব মহলে একাধিকবার বলা হয়েছে। তবুও প্রশাসন সব কিছু জেনেশুনে নিশ্চুপ রয়েছেন। এলাকার জেলা পরিষদ সদস্য আবদুল হাই বড় নর্দমা তৈরি করা দরকার বলে স্বীকার করেছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘হাইড্রেন নির্মাণের জন্য খরচের পরিকল্পনা করে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন পর্ষদে পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ মিললেই খুব শীঘ্রই হাইড্রেন নির্মাণের কাজ চালু করা হবে।’
সেই রাস্তায় চলতে গিয়ে প্রতিদিন সমস্যা পোহাতে হয় এলাকার বাসিন্দাদের। বাসিন্দারা হাট, বাজার, অফিস, কাচারি, ব্যাংক নিত্য প্রয়োজনে যাতায়াত করতে গিয়ে সমস্যায় পড়ছেন। বেহাল রাস্তার উপর হাঁটুসমান জল দিয়ে কবরস্থানে মরদেহ নিয়ে যেতে হয়। চপ্পল হাতে, লুঙ্গি, প্যান্ট গুটিয়ে যাতায়াত করতে হয়।
ওই রাস্তা দিয়ে দুটি বেসরকারি স্কুল, একটি প্রাথমিক স্কুল ও একটি হাইস্কুলের কয়েক হাজার ছাত্রছাত্রী যাতায়াত করে। গোয়ালপাড়া হাইস্কুলে একাদশ শ্রেণিতে পাঠরত এক ছাত্রী সায়েমা খাতুনের বক্তব্য, ‘সাইকেল রয়েছে। কিন্তু রাস্তায় জল জমে থাকায় সাইকেল নিয়ে আর স্কুল যেতে পারছি না। খুব কষ্ট করে স্কুল যাচ্ছি। ওই রাস্তার সমস্যা মিটলে খুব ভালো হয়।’
খানপুর গ্রাম কৃষিপ্রধান এলাকা। ফসল বিক্রি করে অনেকেই পেট চালান। এক কৃষক আব্দুর রশিদের হতাশা, ‘ওই রাস্তার উপর দিয়ে মাঠের ফসল বাড়িতে এবং বাড়ির উৎপন্ন ফসল হাটবাজারে নিয়ে যেতেও চরম সমস্যা হচ্ছে।’