তুফানগঞ্জ: গত কয়েকমাসে দুষ্কৃতী দৌরাত্ম্যের বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটে গেল তুফানগঞ্জে। সোমবার রাতের ঘটনায় ফের এলাকার নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন দেখা গিয়েছে। বালাভূত গ্রাম পঞ্চায়েতের গোপালের কুঠির ঘটনা। বাড়ি ফেরার পথে মমিনুর আলি নামে এক ব্যবসায়ীকে মারধর করে টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগ উঠেছে। মমিনুর প্রথমে টাকা দিতে অস্বীকার করলে রড দিয়ে মাথায় আঘাত করে তাঁর পকেটে থাকা ২২ হাজার টাকা নিয়ে চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা। অজ্ঞান অবস্থায় মমিনুরকে উদ্ধার করে তুফানগঞ্জ হাসপাতালে নিয়ে যান স্থানীয় লোকজন। মঙ্গলবার তুফানগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন তিনি। তুফানগঞ্জ এসডিপিও কান্নিধারা মনোজ কুমার জানান, অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।
সাম্প্রতিক অতীতে তুফানগঞ্জে এমন ঘটনা কিন্তু আরও ঘটেছে। তারপরও হেলদোল নেই প্রশাসনের। যা নিয়ে ক্ষোভ বাড়ছে বাসিন্দাদের মধ্যে। দিন দশেক আগে দিনদুপুরে তুফানগঞ্জের শিকারপুরে এক স্কুল শিক্ষিকার গলা থেকে হার ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায় বাইক আরোহী দুষ্কৃতীরা। সম্প্রতি ডিটারজেন্ট পাউডার বিক্রির নামে তুফানগঞ্জ শহরের এক মহিলাকে প্রতাড়িত করে দুষ্কৃতীরা সোনার গয়না হাতিয়ে চম্পট দেয়। মাসখানেক আগে অফিসের কাজকর্ম সেরে সন্ধ্যায় বাইকে চেপে বাড়ি ফেরার পথে তুফানগঞ্জ-দিনহাটা রাজ্য সড়কে ছিনতাইবাজদের খপ্পরে পড়েছিলেন অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক। অভিযোগ, বিয়ারের কাচের বোতল ভেঙে, সেই ভাঙা কাচের টুকরো গলায় ঠেকিয়ে তাঁর সর্বস্ব লুঠ করা হয়। কিছুদিন আগে ইটভাটায় কাজ করে পরিবারকে সঙ্গে নিয়ে অটোতে বাড়ি ফেরার পথে ওই বলরামপুর চৌপথিতে জাতীয় সড়কে নগদ ছয় লক্ষ টাকা ও ঠিকাদারকে অপহরণের ঘটনা ঘটেছিল।
যদিও অবর বিদ্যালয় পরিদর্শককে ছিনতাই ও ইটভাটার ঠিকাদারকে অপহরণের ঘটনার কিনারা করেছে পুলিশ।
ঠিক কি ঘটেছিল সোমবার রাতে? মধ্য বালাভূতের বাসিন্দা মমিনুর পেশায় কাঠ ব্যবসায়ী। পাওনা টাকা আনতে সোমবার অসমের খেরবাড়িতে গিয়েছিলেন তিনি। টাকা কালেকশন শেষে প্রতিদিনের মতো বাইকে করে গোপালের কুঠি-বালাভূত রাজ্য সড়ক হয়ে বাড়ি ফিরছিলেন।
অভিযোগ, পথে আচমকা একটি টোটো তাঁর পথ আটকে দাঁড়ায়। রাস্তা থেকে টোটো সরাতে বলায় তিন দুষ্কৃতী তাঁকে ঘিরে ধরে টাকা চায়। টাকা দিতে অস্বীকার করায় রড দিয়ে মাথায় সজোরে আঘাত করা হয় বলে অভিযোগ। মারধরও করা হয়। এতে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন মমিনুর। এরপর তাঁর পকেটে থাকা ২২ হাজার টাকা নিয়ে চলে যায় দুষ্কৃতীরা। সংজ্ঞাহীন অবস্থায় রাস্তার ধারে তাঁকে ফেলে রাখা হয়। স্থানীয়রা মমিনুরকে উদ্ধার করে নিয়ে যান তুফানগঞ্জ মহকুমা হাসপাতালে।
চিকিৎসাধীন অবস্থায় ব্যবসায়ীর দাবি, দুষ্কৃতীরা প্রত্যেকে অসমের কামানডাঙ্গার বাসিন্দা। অভিযুক্তদের শাস্তির দাবিতে ও টাকা ফেরতের আশায় থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন তিনি।