তুফানগঞ্জ: তুফানগঞ্জে তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দলের জেরে ভোগান্তি বাড়ছে পুরবাসীর। তুফানগঞ্জ পুরসভায় ডামাডোল শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে চেয়ারপার্সনের বিরুদ্ধে অনাস্থা এনেছেন দলেরই ১০ কাউন্সিলার। বর্তমানে দু’পক্ষেরই যেন মুখ দেখাদেখি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। কাউন্সিলাররা অনাস্থা আনার পর থেকে কেউই পুরসভায় যাচ্ছেন না। ফলে অনেক ক্ষেত্রেই নাগরিক পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বাসিন্দারা।
পুরসভায় না এলেও সকালসকাল ওই ১০ কাউন্সিলার জনসংযোগে বেরিয়ে পড়ছেন। শহর ব্লক সভাপতির উদ্যোগে বিভিন্ন ওয়ার্ডে চলছে সেই কর্মসূচি। সেখানে আবার চেয়ারপার্সন ও ভাইস চেয়ারম্যানের দেখা মিলছে না। সবমিলিয়ে চেয়ারপার্সনের বিরুদ্ধে অনাস্থার পর যতই দিন গড়াচ্ছে ততই রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরি হচ্ছে নীচুতলার কর্মীদের মধ্যে। শহর ব্লক সভাপতি ইন্দ্রজিৎ ধরের বক্তব্য, ‘এটা পুরোপুরি সাংগঠনিক কর্মসূচি। বিগত বিধানসভা নির্বাচনে তুফানগঞ্জ শহরে আমরা ৩৬৭৫ ভোটে পিছিয়ে রয়েছি। সেই ঘাটতি মেটাতেই কাউন্সিলার ও ওয়ার্ড সভাপতিদের সঙ্গে বাড়ি বাড়ি গিয়ে জনসংযোগ শুরু করেছি।’
এদিকে, অনাস্থা প্রস্তাবের দু’সপ্তাহের মাথায় সামাজিক মাধ্যমে প্রথম প্রতিক্রিয়া জানান ভাইস চেয়ারম্যান তনু সেন। শুক্রবার রাতে ফেসবুকের একটি পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘সময় এলে সব বলব, প্রসঙ্গ তুফানগঞ্জ পুরসভা’। দলের এই অস্বস্তির মধ্যে আগুনে ঘি ঢালায় হইচই পড়ে গিয়েছে। চেয়ারপার্সনের সঙ্গে বিক্ষুব্ধ কাউন্সিলারদের দূরত্ব বাড়তে থাকায় নাগরিক পরিষেবা ব্যাহত হতে পারে বলে অনুমান অনেকেরই।
এ ব্যাপারে ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার অম্লান বর্মার কথায়, ‘ওয়ার্ডের উত্তর পাশে দীর্ঘদিনের পানীয় জলসমস্যা এপর্যন্ত কাটেনি। পাশাপাশি দোলমেলা ময়দান সংলগ্ন এলাকার লাইটগুলো বিকল হয়ে পড়ে রয়েছে। চেয়ারপার্সনকে আগেও বহুবার জানিয়েছিলাম। কিন্তু লাভ হয়নি। এভাবে পুরসভা চলতে পারে?’ এ ব্যাপারে চেয়ারপার্সন কৃষ্ণা ঈশোর বলেন, ‘কাউন্সিলারদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। ৫ নম্বর ওয়ার্ডের পানীয় জলের সমস্যা নিয়ে কাউন্সিলারের সঙ্গে আগেই আলোচনা হয়েছে। লাইটের সমস্যাটিও নজরে রয়েছে। গ্রিনসিটি প্রকল্পের লোক এলেই খুব তাড়াতাড়ি কাজ শুরু করা হবে।’ নির্দিষ্ট দিনের মধ্যে দলের নির্দেশ না পেলে সেক্ষেত্রে কী করবেন? এর উত্তরে চেয়ারপার্সন বলেন, ‘দলের প্রতি আস্থা রয়েছে। দল নিশ্চই কিছু একটা জানাবে। অতএব দল যা ভালো মনে করবে আমি সেটাই মেনে নেব।’
দলীয় সূত্রে খবর, সম্প্রতি চেয়ারপার্সনের ঘোষিত দেড় কোটির গ্রিনসিটি প্রকল্পও নিয়েও কটাক্ষ ছুড়েছেন ওই কাউন্সিলাররা। শুক্রবার বিক্ষুব্ধদের হয়ে ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার সুধাংশুশেখর সাহা বলেন, ‘অনাস্থা নিয়ে আমাদের সিদ্ধান্ত অনড়। নির্দিষ্ট দিনের ভিতরে তলবি সভা না ডাকলে, পুর আইন মেনে সম্মিলিতভাবে আমরা পদক্ষেপ করব।’ সবমিলিয়ে দু’পক্ষের দড়ি টানাটানিতে তুফানগঞ্জ পুরসভায় নাজেহাল পরিস্থিতি সাধারণ মানুষের।