Tuberculosis | টিবির সঙ্গে জিনের সম্পর্ক নেই

Tuberculosis | টিবির সঙ্গে জিনের সম্পর্ক নেই

ব্লগ/BLOG
Spread the love


উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: যক্ষ্মা বা টিউবারকিউলোসিস (Tuberculosis) নিয়ে এখনও মানুষজনের মধ্যে বহু ভুল ধারণা রয়েছে। সেইসঙ্গে রয়েছে সচেতনতার অভাবও। তবে রোগটি সম্পর্কে সচেতন হতে গেলে আগে চিনতে হবে উপসর্গ। টিবি সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে জানালেন কোচবিহারের পিকে সাহা হাসপাতালের কনসালট্যান্ট ডাঃ দ্বৈপায়ন ঘোষ।

প্রশ্ন: টিবি মানেই কি ছোঁয়াচে?

উত্তর: টিবি আমাদের শরীরের যে কোনও অংশেই হতে পারে। হাড়ে হলে বোন টিবি, বুকে হলে পালমোনারি টিবি, মস্তিষ্কে হলে টিবি মেনিনজাইটিস এবং চোখে হলে তাকে অকুলার টিবি বলে। বুকে যদি টিবি হয় এবং কফের মধ্যে যদি টিবির জীবাণু পাওয়া যায়, তাহলে একমাত্র হাঁচি-কাশির মাধ্যমে তা ছড়ায়, অন্যথায়  নয়।

প্রশ্ন: ঠিক কখন একজন মানুষ সন্দেহ করবেন যে তাঁর টিবি হতে পারে?

উত্তর: টিবি রোগের কিছু কনস্টিটিউশনাল উপসর্গ রয়েছে যেটাকে বলা হয় ‘১০-এস’। এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ- দুই সপ্তাহের বেশি জ্বর ও কাশি, ওজন কমে যাওয়া, খিদে কমে যাওয়া, গা-হাত-পায়ে ব্যথা এবং ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়া।

এছাড়া শরীরের যে নির্দিষ্ট অংশে টিবি হয়েছে, সেই অংশবিশেষে নির্দিষ্ট উপসর্গ হবেই, যেমন পালমোনারি টিবি হলে কিছু ক্ষেত্রে কাশির সঙ্গে রক্ত বেরোতে পারে। অনেকেই ভাবেন টিবি মানে কাশির সঙ্গে রক্ত। কিন্তু এটা যে সবসময় হবেই, এমনটা নয়।

প্রশ্ন: টিবি তো আমাদের বংশে ছিল না ডাক্তারবাবু, তাহলে কীভাবে হল?

উত্তর: এটা দারুণ বলেছেন। রোজ কত মানুষ যে এই প্রশ্নটি করেন! টিবি বা টিউবারকিউলোসিস জীবাণুঘটিত রোগ, জীবাণুটির নাম মাইকোব্যাকটেরিয়াম টিউবারকিউলোসিস, যেটি আসে অন্য একজন আক্রান্ত ব্যক্তির সংক্রামিত জৈবিক নমুনার মাধ্যমে, যেমন কফ, থুতু ইত্যাদি। এর সঙ্গে বংশ বা জিনের প্রায় কোনও সম্পর্কই নেই।

প্রশ্ন: কী কী পরীক্ষায় টিবি ধরা পড়বে এবং কোথায় তা করানো যায়?

উত্তর: বুকের টিবি (পালমোনারি)-র ক্ষেত্রে কফ পরীক্ষা করতেই হবে। প্রাথমিকভাবে AFB বা ZN স্টেইন করানো হলেও, এখন আমরা বেশি জোর দিই CBNAAT বা TRUNAAT কফ পরীক্ষায়। এতে অনেক সহজে এবং অনেকটা প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ ধরা যায়।

এই পরীক্ষা সরকারি হাসপাতালে উপলব্ধ। এছাড়া অনুমোদিত বেসরকারি ল্যাবেও হয়। যে অংশে টিবি সন্দেহ করা হচ্ছে, সেই অংশবিশেষে রস, পুঁজ, টিস্যু ইত্যাদির আরও নানা পরীক্ষা করতে হয়।

প্রশ্ন: টিবি ধরা পড়লে কি সেরে যায়? কীভাবে শুরু হয় চিকিৎসা?

উত্তর: টিবি দুই ধরনের- সাধারণ বা ড্রাগ সেনসিটিভ টিবি এবং জটিল বা ড্রাগ রেজিস্ট্যান্ট টিবি। তাই চিকিৎসা শুরু করার আগেই জানা দরকার কোন ধরনের টিবি হয়েছে। এটা জানার জন্য CBNAAT পরীক্ষার গুরুত্ব অপরিসীম।

যদি সাধারণ টিবি হয়, তাহলে শরীরের ওজন অনুযায়ী ৪এফডিসি (4FDC) ওষুধ শুরু করা হয়। আর যদি জটিল টিবি ধরা পড়ে, সেক্ষেত্রে LPA, MGIT90 CDST ইত্যাদি পরীক্ষার পরই নির্দিষ্ট ওষুধ ঠিক করা উচিত।

প্রশ্ন: বাড়িতে টিবি রোগী থাকলে কী সাবধানতা মেনে চলা উচিত?

উত্তর: ওষুধ শুরু হওয়ার প্রথম এক মাস অবশ্যই রোগীকে এবং পরিচর্যা যিনি করছেন তাঁকে মাস্কের ব্যবহার করা, রোগীকে সঠিক ডায়েট চার্ট মেনে খাওয়ানো, তার কফ-থুতু যত্রতত্র না ফেলা, মাসে মাসে ডাক্তারবাবুর পরামর্শমতো অল্প কিছু টেস্ট করানো প্রয়োজন।

আরও একটি কথা, রোগীর সংস্পর্শে যাঁরা আসছেন তাঁদের কিছু নিয়ম ও গাইডলাইন মেনে কিছুক্ষেত্রে প্রোফাইলেক্টিক ওষুধ খেতে হতে পারে। এর জন্যও ডাক্তারবাবুর পরামর্শ প্রয়োজন।

ভারত এখনও টিবি রোগের মূলস্থল হলেও গত কিছু বছরে টিবি এলিমিনেশন প্রোগ্রামে আমরা অনেক উন্নতি করেছি। এর সঙ্গে শুধু প্রয়োজন সাধারণ কিছু সচেতনতাবোধ ও ঠিক সময়মতো রোগ নির্ধারণ করে সত্বর চিকিৎসা শুরু করা।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *