পূর্ণেন্দু সরকার, জলপাইগুড়ি: জেলার ধর্মীয় ও ঐতিহাসিক স্থাপত্যগুলিকে নিয়ে সম্প্রীতি পর্যটন (Tourism) চালুর উদ্যোগ নিল জেলা প্রশাসন। আগামী সপ্তাহ থেকেই সেই সম্প্রীতি পর্যটন চালু করা হবে বলে জেলা শাসক শামা পারভিন জানান। এব্যাপারে সচেতনতা বাড়াতে ইতিমধ্যে ১ মিনিট ২৭ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ক্যাপসুল বানিয়ে প্রচার শুরু করেছে প্রশাসন। সেই ভিডিওতে মন্দির, মসজিদ, গির্জা, বৌদ্ধ গুম্ফাগুলিকে রাখা হয়েছে। খুব শীঘ্রই সম্প্রীতি পর্যটন পরিষেবা সংক্রান্ত দ্বিতীয় ভিডিওটি প্রকাশ্যে আনা হবে।
গত জুন মাসে পর্যটন ব্যবসায়ী, বন দপ্তর, পঞ্চায়েত সমিতি, জেলা পরিষদ, জেলা প্রশাসনের পর্যটন বিভাগ সহ এনবিএসটিসি-কে নিয়ে বৈঠক করেছিল জেলা প্রশাসন। সেখানে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, ‘সর্বদর্শন সম্প্রীতি’ নামে পর্যটন পরিষেবা ২৭ জুন থেকে চালু করা হবে। কিন্তু তা হয়নি। গত ২৬ জুন জেলা প্রশাসনের পর্যটন বিভাগ থেকে সেই পরিষেবা চালু করার বিষয়টি স্থগিত করে দেওয়া হয়।
জেলা শাসক বলেন, ‘ঐতিহাসিক স্থানের পাশাপাশি ধর্মীয় জায়গাগুলিকে সম্প্রীতি পর্যটনের মধ্যে রাখা হয়েছে। বাসে করে একদিনে ভ্রমণ করানো হবে। খাওয়ার ব্যবস্থাও থাকবে। খরচ সকলের সাধ্যের মধ্যেই থাকবে।’
সাতসকালে এনবিএসটিসি’র বাসে যাত্রা শুরু হবে শহর থেকে। শহরের মধ্যে থাকা যোগমায়া কালীবাড়ি, সেন্ট মাইকেল অ্যান্ড অল অ্যাঞ্জেল চার্চ, রাজবাড়ি ঘুরে, গোশালার দেবী চৌধুরানি মন্দিরে পর্যটকদের নিয়ে যাওয়া হবে। সেদিনই ময়নাগুড়ির জটিলেশ্বর, জল্পেশ, বটেশ্বর মন্দির ঘুরিয়ে তিনবিঘা করিডর ভ্রমণ করানোর পর মেখলিগঞ্জ ও হলদিবাড়ির মাঝে তিস্তার উপর জয়ী সেতু দিয়ে হলদিবাড়ি হয়ে দক্ষিণ বেরুবাড়ির সাতকুড়ার ত্রিস্রোতা মহাপীঠে পর্যটকদের নিয়ে যাওয়া হবে। তারপর জলপাইগুড়ি ফেরার পথে মালকানির ঢোলোগ্রামের মন্দিরে নিয়ে যাওয়া হবে। সবশেষে শহরের মধ্যে থাকা কালু সাহেবের মাজার ঘুরিয়ে সম্প্রীতি পর্যটন শেষ করা হবে।
হিমালয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড ট্যুরিজম ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্কের সাধারণ সম্পাদক সম্রাট সান্যাল জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসনের এই উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন। জলপাইগুড়ি নেচার অ্যান্ড ট্রেকার্স ক্লাবের কোঅর্ডিনেটর ভাস্কর দাস মনে করছেন, এই ধরনের ধর্মীয় পর্যটনে বয়স্ক ব্যক্তিরা বেশি করে আগ্রহী হবেন। আর জলপাইগুড়ি ট্যুর অপারেটর ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের উপদেষ্টা সব্যসাচী রায় বলেন, ‘আমরাও চাই প্রশাসনিক সহযোগিতায় আমাদের নিজস্ব প্যাকেজে এই সম্প্রীতি পর্যটন চালু করতে।’