অরিন্দম বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাত: হিউজ গ্রাউন্ড। বাট ভেরি হট অ্যান্ড হিউমিড হিয়ার ইন কলকাতা! সূর্য তখনও অস্ত যায়নি। বিকেল এগিয়ে চলেছে গোধূলির পথে। ক্রিকেটের নন্দনকাননে কলকাতা নাইট রাইডার্স ও লখনউ সুপার জােয়ন্টসের অনুশীলন তখন চলছে পুরোদমে। এমন সময় ইডেন গার্ডেন্সের ক্লাব হাউসে হাজির হলেন তিন বিদেশি। খোঁজ নিয়ে জানা গেল, চমকপ্রদ তথ্য। তিনজনই অস্ট্রেলিয়ার পারথের বাসিন্দা। তিনজনই লখনউ সুপার জায়েন্টসের কোচ জাস্টিন ল্যাঙ্গারের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। চমকের শেষ এখানেই নয়। বরং শুরু।
সৌজন্যে টড পিয়ারসেন। তিনি অস্ট্রেলিয়ার অলিম্পিয়ান। ২০০০ সালের সিডনি ও ২০০৪ সালের এথেন্স অলিম্পিকের আসরে সাঁতারে সোনা ও রুপো জয়ের নজির রয়েছে টডের। এহেন টড আচমকা কেন কলকাতার ইডেনে? পরিচয় করে প্রশ্ন করতেই চওড়া হাসি নিয়ে অজি অলিম্পিয়ান টড বলে দিলেন, ‘জাস্টিন আমার অনেকদিনের বন্ধু। মূলত ওর আহ্বানেই পারথ থেকে লখনউয়ে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স-এলএসজি ম্যাচ দেখে এসেছি কলকাতায়। কিন্তু দুর্ভাগ্য, মঙ্গলবারের ম্যাচটা দেখা হবে না। কারণ ম্যাচের দিন বদলে যাওয়ায় আমাদের কালই কলকাতা থেকে ফিরতে হচ্ছে দেশে।’
স্যর ডন ব্র্যাডম্যানের দেশে ক্রিকেটের জনপ্রিয়তার কথা সবারই জানা। কিন্তু সেই দেশের অলিম্পিক সোনাজয়ী সাঁতারু নিখাদ ক্রিকেট ও বন্ধুত্বের টানে পারথ থেকে কলকাতায় পৌঁছে গিয়েছেন, নিশ্চিতভাবেই বিরল ঘটনা। উত্তরবঙ্গ সংবাদের সঙ্গে কথার মাঝেই তিন বন্ধুকে ইডেনের ক্লাব হাউসের গ্যালারিতে দেখে লখনউ কোচ দলের সাজঘরের সামনে চলে এলেন। তাঁদের দিকে ছুড়ে দিলেন জলের বোতলও। কথা দিয়ে গেলেন, অনুশীলন শেষে তাঁদের সঙ্গে আড্ডা দেবেন। বন্ধু ল্যাঙ্গারকে নিয়ে মুগ্ধ অজি অলিম্পিয়ানও। বলে দিলেন, ‘আমাদের তিনজনের মধ্যে রয়েছে পল ফিগলিওমেনি। জাস্টিনের স্কুলের সহপাঠী ও। ওর সুবাদেই অনেক বছর আগে জাস্টিনের সঙ্গে আমাদের পরিচয়। মানুষ হিসেবে দুর্দান্ত।’
ল্যাঙ্গারের ডাকে লখনউয়ের সমর্থনে পারথ থেকে কলকাতায় হাজির হওয়া তিন সদস্যের অপরজন ম্যাকডোনাল্ড। তিনি ল্যাঙ্গারের পাশে লখনউয়ের বিধ্বংসী ব্যাটার মিচেল মার্শেরও বন্ধু। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট নিয়ে মার্শের ভাবনা কী? চমকে দিয়ে জন বলছিলেন, ‘মার্শ হয়তো আর বেশিদিন খেলবে না আন্তর্জাতিক ক্রিকেট। পাকাপাকি অবসরের ভাবনা শুরু করে দিয়েছে ও।’ কবে অবসর নেবেন মার্শ? প্রশ্নের জবাব আপাতত নেই জনের কাছে। মজা করে তিনি বলে দিলেন, ‘মার্শকে বলেছি, কলকাতা হল সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের শহর। এখান থেকেই অবসরের কথা ভাববে পারো।’