নাগরাকাটা: প্রচণ্ড গরমে অস্বস্তিকর পরিস্থিতি এড়াতে অসমের চা বাগানের (Tea Backyard) শ্রমিকদের কাজের সময় পরিবর্তন করেছে সেখানকার শ্রম দপ্তর। একইরকম হাঁসফাঁস পরিস্থিতি উত্তরঙ্গের ডুয়ার্স-তরাইয়েও (Dooars-Terai)। এমন আবহে এখানেও কাজের সময় বদলের দাবি জোরালো হতে শুরু করেছে। যদিও চা বণিকসভাগুলি জানাচ্ছে, সরকারিভাবে কোনও নির্দেশিকা তাদের কাছে আসেনি। শ্রমিক সংগঠনগুলির কাছ থেকেও কোনও প্রস্তাব মেলেনি।
অসমের বাগানগুলিতে কাজের রীতি সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। সেটা আপাতত বদল করে সকাল ৬টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত করা হয়েছে। ডুয়ার্স-তরাইয়ে কাজ শুরু হয় সকাল ৭টা থেকে। সাড়ে ৭টা পর্যন্ত কিছু বাগান কাজে যোগ দিতে অনুমতি দেয়। এর থেকে দেরি হলে আর কাউকে সচরাচর সেদিন নেওয়া হয় না। ১২টায় মধ্যাহ্নভোজনের জন্য ছুটি দেওয়া হয়। ফের ১টা থেকে ৩টা পর্যন্ত কাজ করার পর শ্রমিকরা কাঁচা পাতা ওজন করাতে চলে যান। কিছু বাগানে মধ্যাহ্নভোজনের পর কাজ শুরু হয় ২টা থেকে। চলে ৪টা পর্যন্ত। শ্রম আইন অনুযায়ী ৮ ঘণ্টা কাজ বরাদ্দ থাকে শ্রমিকদের। অসম বা উত্তরবঙ্গে সর্বত্র একই নিয়ম।
সম্প্রতি রাজ্যজুড়ে স্কুলে অতিরিক্ত দু’দিনের ছুটি দেওয়া হয়েছে। শনিবার থেকে উত্তরের জেলাগুলিতে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টিপাত হয়েছে। এর জেরে দিনের তাপমাত্রা কিছুটা কমেছে। তবে ফের পারদ চড়তে শুরু করলেই সমস্যা হবে। চা শ্রমিক সংগঠনগুলি জানাচ্ছে, গনগনে রোদে চা শ্রমিকদের কাজ করতে হয়। তাঁদের অসুবিধে তাই আরও বেশি।
তৃণমূল (TMC) চা বাগান শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির চেয়ারম্যান নকুল সোনার বলেন, ‘বর্তমানে যেমন পরিস্থিতি চলছে তাতে শ্রমিকদের পক্ষে কাজ করা কঠিন হয়ে দাঁড়াচ্ছে। পরিস্থিতি দেখে নিয়ে আমরা কাজের সময় নিয়ে অবশ্যই ভাবনাচিন্তা করে রাজ্যের দৃষ্টি আকর্ষণ করব।’ ভারতীয় টি ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও সাংসদ মনোজ টিগ্গার কথায়, ‘শ্রমিক-মালিক দু’পক্ষেরই যাতে ভালো হয় এমন কোনও সিদ্ধান্ত এখানে নেওয়া যেতেই পারে। দ্রুত চা বণিকসভাগুলির সঙ্গে কথা বলব।’ মালিকদের অন্যতম সংগঠন ডিবিআইটিএ-র সচিব শুভাশিস মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘তপ্ত আবহাওয়ার উদ্বেগ অবশ্যই রয়েছে। তবে এটা নিয়ে এখনও পর্যন্ত কেউ কোনও দাবি জানায়নি। সরকারি নির্দেশিকাও আসেনি।’