বৈষ্ণবনগর ও মালদা: উন্মুক্ত সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ার কাজ শুরু হয়নি এখনও। তার মধ্যেই বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী সীমান্ত নিয়ে নিজের অবস্থান বুঝিয়ে দিলেন। প্রজাতন্ত্র দিবসের বিকেলে মালদার সুকদেবপুর সীমান্তে ‘তেরঙা যাত্রায়’ এসে শুভেন্দু বিএসএফের পাশে থেকে কাজ করার পরামর্শ দিলেন এলাকার বাসিন্দাদের। এদিকে সোমবারও সুকদেবপুরে বেড়া দেওয়ার কাজে বাধা দেয় বিজিবি ও বাংলাদেশিরা।
রবিবার বিকেলে সীমান্তের সুকদেবপুরে একটি সভায় শুভেন্দু বলেন, ‘ভারতের পাঁচটি রাজ্যে প্রায় চার হাজার কিলোমিটার বাংলাদেশ সীমান্ত রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গেই সবচেয়ে বেশি, প্রায় ২,২০০ কিলোমিটার। এই রাজ্যের সরকার ৫৯৬ কিলোমিটার এলাকায় বেড়া দেওয়ার জন্য জমি অধিগ্রহণ করে দেয়নি।’ বিরোধী দলনেতার অভিযোগ, ‘বিএসএফকে ১৭টি চৌকি ও ১১টি বড় ক্যাম্প করার জন্য জমি দেওয়া হয়নি।’ পাশাপাশি কাঁটাতারের বেড়ার জন্য জমি অধিগ্রহণ নিয়ে রাজ্য সরকারের সমালোচনা করে তাঁর দাবি, ‘রাজ্যকে জঙ্গিমুক্ত করতে আগামী বিধানসভা নির্বাচনে বৈষ্ণবনগর আসন চাই।’ স্থানীয় বাসিন্দাদের তাঁর পরামর্শ, ‘বিএসএফের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সীমান্ত রক্ষার কাজ করতে হবে।’
কালিয়াচক ৩ নং ব্লকের বৈষ্ণবনগর বিধানসভার সুকদেবপুর থেকে শবদলপুর পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার সীমান্ত কাঁটাতারবিহীন উন্মুক্ত রয়েছে। ৭ জানুয়ারি থেকে সেখানে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া নিয়ে উত্তেজনা তৈরি হয়। বিজিবি-র বিরুদ্ধে কাজে বাধার অভিযোগ ওঠে। এই মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহেও ‘জ়িরো পয়েন্টে’ থাকা ভারতীয় ভূখণ্ডের গম গাছ কেটে নেওয়ার ও জমিতে জল দেওয়ার পাম্প চুরির অভিযোগ ওঠে বাংলাদেশি দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। এখনও পর্যন্ত ওই উন্মুক্ত সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ার কাজ শুরু করা যায়নি।
সুকদেবপুরে ৬০০ মিটার অরক্ষিত বাংলাদেশ সীমান্ত গ্রামবাসী থেকে বিএসএফ, সবারই মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সোমবারও সীমান্তে অস্থায়ী বেড়া দেওয়ার কাজ করতে গেলে ওপারের গ্রামবাসী ও বিজিবির বাধায় শ্রমিকরা কাজ না করেই ফিরে যেতে বাধ্য হয়েছেন। স্থানীয়দের আশঙ্কা অনুপ্রবেশ, পাচার, এপারে ঢুকে জমির ফসল কেটে নিয়ে যাওয়ার জন্যই বাংলাদেশিরা বেড়া দিতে দিচ্ছে না।
আর এই বাধাটাই সুকদেবপুরে সীমান্ত সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দাদের বিএসএফের সঙ্গে একাত্ম করে তুলেছে। মুখ্যমন্ত্রী ক’দিন আগেই মালদা সফরে এসে পারামর্শ দিয়েছিলেন গ্রামবাসীরা যেন সীমান্তের উত্তেজনায় না জড়ান। এদিনও সুকদেবপুরের বাসিন্দা শিবলাল মণ্ডল স্পষ্ট বলেন, ‘আমরা এখানে একটা ছোট ফেন্সিং দেওয়ার চেষ্টা করছি৷ কিন্তু বিজিবি বারবার বাধা দিচ্ছে৷ আমরা সেই বাধা মানছি না৷ আমরা চাই, এখানে ফেন্সিং হোক৷ আমরা বিএসএফ-এর সঙ্গে আছি৷’