উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: গত ১৪ মার্চ হোলির দিন দিল্লি হাইকোর্টের (Delhi Excessive Courtroom) প্রাক্তন বিচারপতি যশবন্ত ভার্মার বাংলোতে অগ্নিকাণ্ডের (Hearth) সময় রাশি রাশি নগদ উদ্ধারের ঘটনায় শোরগোল পড়েছিল সারা দেশে। বিচারপতির বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ খতিয়ে দেখতে তিন বিচারপতির কমিটি গঠন করেন দেশের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না। সেই তদন্ত চলছে। এরই মধ্যে ফের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত সামনে এল। সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Courtroom) তরফে সিদ্ধান্ত হয়েছে, সমস্ত বিচারপতিরাই এবার থেকে তাঁদের সমস্ত সম্পত্তি প্রকাশ্যে ঘোষণা করবেন। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতিকে উদ্দেশ্য করে জারি এই ঘোষণাপত্র শীর্ষ আদালতের ওয়েবসাইটে আপলোড করা হবে।
সূত্রের খবর, ১ এপ্রিল আদালতের পূর্ণাঙ্গ বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যদিও এখনও সেই সিদ্ধান্ত আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়নি। বিচারপতি যশবন্ত ভার্মার বাংলো থেকে টাকা উদ্ধারের ঘটনায় যখন বিচারব্যবস্থার সততা ও পবিত্রতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে তখন এই সিদ্ধান্ত অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। এতদিন সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে ‘অ্যাসেটস অফ জাজেস’ নামে একটি পেজ থাকলেও তা সাধারণ মানুষ জানতে পারতেন না। এবারের সিদ্ধান্তের ফলে সাধারণ মানুষ বিচারপতিদের সম্পত্তির বিষয়ে এক ক্লিকেই জানতে পারবেন।
১৯৯৭ সালে, সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়াম প্রধান বিচারপতির কাছে বিচারকদের সম্পদ প্রকাশ করার সিদ্ধান্ত নেয়। ভারতের তৎকালীন প্রধান বিচারপতি জে এস ভার্মার সভাপতিত্বে এক সভায়, সুপ্রিম কোর্ট প্রস্তাব গ্রহণ করে যেখানে বলা হয়েছিল, ‘প্রত্যেক বিচারকের উচিত তাঁদের নামে, তাঁদের স্ত্রী বা তাঁদের উপর নির্ভরশীল অন্য কোনও ব্যক্তির নামে, রিয়েল এস্টেট বা বিনিয়োগের আকারে সমস্ত সম্পদের ঘোষণা প্রধান বিচারপতির কাছে করা।’ ২০০৯ সালে, আরেকটি পূর্ণাঙ্গ আদালত আদালতের ওয়েবসাইটে বিচারকদের সম্পদ ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নেয়। তবে পুরোটাই ছিল স্বেচ্ছাকৃত, কেউ জমা না দিলে তাঁর বিরুদ্ধে পদক্ষেপের কোনও ব্যবস্থা ছিল না। কিন্তু গোপনীয়তা রক্ষার কারণে তা প্রকাশ্যে আনা হয়নি। আর যেহেতু বিষয়টি বাধ্যতামূলক ছিল না তাই অনেক বিচারপতি তা ঘোষণাও করেননি। তবে ২০১৯ সালে সুপ্রিম কোর্টের এক নির্দেশে বলা হয় বিচারপতিদের ‘ব্যক্তিগত সম্পত্তি’ ‘ব্যক্তিগত তথ্য’ নয়। এবার যে সিদ্ধান্ত হয়েছে তাতে সব বিচারপতিই তাঁদের সম্পত্তির তথ্য সর্বসমক্ষে আনতে সম্মত হয়েছেন। যাতে বিচারব্যবস্থা ও বিচারপতিদের ব্যক্তিচরিত্র নিয়ে প্রশ্ন না ওঠে সেদিকে তাকিয়েই এই সিদ্ধান্ত বলে মনে করা হচ্ছে।