সুস্মিতা গঙ্গোপাধ্যায়, কলকাতা : তিন বছরের উপর জাতীয় দলে। কিন্তু কোথাও একটা খামতি ছিলই। অবশেষে এল প্রথম গোল! ম্যাচ শেষে তাই সবথেকে বেশি উচ্ছ্বসিত লাগে লিস্টন কোলাসোকেই। বারবার চেষ্টা করেও নীল জার্সিতে গোল আসছিল না। অবশেষে বুধবার শুধু নিজে গোল করলেন না, অধিনায়ক সুনীল ছেত্রীর ফিরে আসা স্মরণীয় করতে তাঁর গোলের বলও বাড়ালেন।
ম্যাচ শেষে তাই খুশি উপচে পড়ে লিস্টনের বক্তব্যে, ‘গত তিন বছর ধরে দেশের জার্সিতে একটা গোল পাওয়ার চেষ্টা করছিলাম। অবশেষে মালদ্বীপের বিরুদ্ধে দল যেমন লম্বা ১৭ মাস বাদে জয়ে ফিরল তেমনি আমিও নিজের প্রথম গোলটা পেলাম। দেশের হয়ে গোল করার অনুভূতিই আলাদা।’ এবার যে নিজের উপর আস্থা ছিল, সেকথাও বলছেন মোহনবাগানের এই উইঙ্গার, ‘এই মরশুমে ক্লাবের হয়েও ভালো খেলেছি। তাই নিজের উপর বিশ্বাস ছিল। তাছাড়া মানোলোও আমাদের আত্মবিশ্বাস জুগিয়েছেন। অনেকটা সময় পাওয়া গেছে একসঙ্গে প্রস্তুতির। কোচ একটা বিশেষ পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়েছেন। সবমিলিয়ে জয়ে ফিরতে পেরে সত্যিই ভালো লাগছে। আমার পরিবার সবসময় আমার পাশে থেকেছে। তাই এই গোলটা আমি পরিবারকে উৎসর্গ করছি।’
সুনীলের জন্য গোলের বল বাড়াতে পারায় তৃপ্তি বেড়েছে স্বাভাবিকভাবেই। হাসিখুশি লিস্টনের মন্তব্য, ‘সুনীল ভাইয়ের ফিরে আসাটা দলের জন্য আশীর্বাদ। কারণ উনি প্রকৃত অধিনায়ক। প্রত্যেককে আলাদা করে অনুপ্রাণিত করতে পারেন। ওঁকে গোলের বল বাড়াতে পেরে গর্বিত বোধ করছি।’ ম্যাচ সেরার আশা, এই জয় বাংলাদেশ ম্যাচে কাজে লাগবে।
এই ম্যাচে দলের ৩-০ গোলে জয়ে খুশি হলেও ম্যাচে চোট পেলেন ব্র্যান্ডন ফার্নান্ডেজ। যা নিয়ে চিন্তায় মানোলো মার্কুয়েজ রোকা। এত চোট-আঘাতে যে দলের ক্ষতি হচ্ছে সেকথা গোপন করেননি তিনি। বাংলাদেশের বিপক্ষে যে ব্র্যান্ডনকে না পাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি, সেকথাও জানান মানোলো। আগেই ছিটকে গিয়েছেন আনোয়ার আলি, লালিয়ানজুয়ালা ছাঙ্গতে, আশিস রাই ও মনবীর সিং। পোলো গ্রাউন্ডের মাঠকে ঘুরিয়ে খানিকটা দায়ী করেন মানোলো। তিনি বলেছেন ‘বাংলাদেশের বিপক্ষে ব্র্যান্ডনকে পাওয়া যাবে না, এটা প্রায় নিশ্চিত। নতুন করে কাউকে ডাকতে হবে দলে। মাঠ এদিন ঠিকই ছিল। কিন্তু আপনারা মনে করে দেখুন, নর্থইস্ট ইউনাইটেড এফসি-র বিপক্ষে বেঙ্গালুরু এফসি এবং মুম্বই সিটি এফসি ম্যাচে বহু ফুটবলার পা পিছলে পড়ে গিয়েছে। এদিনও ম্যাচে ব্র্যান্ডনের চোটটা হল, নিজে থেকে আছাড় খেয়ে পড়ে। এটাই বিপজ্জনক।’
সুনীলকে দলে ডাকা নিয়ে তিনি সমালোচিত হয়েছেন। স্বাভাবিকভাবেই খুশি মানোলো। তবে তাঁর থেকেও সুনীল নিজে বেশি খুশি হয়েছেন বলে জানান এই স্প্যানিশ কোচ, ‘আমি তো খুশিই। তবে সুনীল আমার থেকেও বেশি খুশি। ওর কারও কাছে আর কিছুই প্রমাণ করার নেই।’ মালদ্বীপ ম্যাচের এই উজ্জীবিত পারফরমেন্স এশিয়ান কাপ যোগ্যতার্জন পর্বে সুনীলরা ধরে রাখুন, এই প্রার্থনায় এখন ভারতের সব ফুটবলপ্রেমী।