নাগরাকাটা: উত্তরবঙ্গের অর্থনীতির অন্যতম চালিকা শক্তি ক্ষুদ্র চা চাষের ওপর তৈরি করা ৫৯ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ স্ট্যাটাস রিপোর্ট রাজ্যের শিল্প মন্ত্রী শশী পাঁজার হাতে তুলে দিল কনফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান স্মল টি গ্রোয়ার্স অ্যাসোসিয়ে্শন (সিস্টা), ওয়েস্ট বেঙ্গল ইউনাইটেড ফোরাম অফ স্মল টি গ্রোয়ার্স অ্যাসোসিয়ে্শন ও জলপাইগুড়ি জেলা ক্ষুদ্র চা চাষি সমিতি। সোমবার কলকাতার ক্যামাক স্ট্রিটের শিল্প সদন ভবনে মন্ত্রীর চেম্বারে গিয়ে তাঁর হাতে ওই রিপোর্ট তুলে দেওয়া হয়। তাতে উত্তরবঙ্গের ক্ষুদ্র চা চাষ ও এর সঙ্গে জড়িত চাষিদের প্রকৃত পরিস্থিতি বিশদে ব্যাখা করা হয়েছে। উত্তরের ক্ষুদ্র চা চাষ অধ্যুষিত সবকটি জেলার চাষিদের বাংলা ফসল বিমা যোজনা, বাংলা কৃষি সেচ যোজনা, কৃষক বন্ধু প্রকল্প ও পেনশন প্রকল্পের আওতায় আনার আর্জি জানানো হয়েছে। পাশাপাশি ক্ষুদ্র চা চাষিদের উৎপাদিত কাঁচা পাতার অভাবী বিক্রি রুখতে রাজ্য শিল্প দপ্তর যাতে ন্যূনতম সহায়ক মূল্য ঘোষণার বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রীয় শিল্প বাণিজ্য মন্ত্রকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে এমন কথাও স্ট্যাটাস রিপোর্টে উল্লেখের পাশাপাশি মন্ত্রীকেও বলা হয়। সিস্টা-র সভাপতি বিজয় গোপাল চক্রবর্তী বলেন, ‘শিল্প মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে আমরা আশ্বস্ত। তিনি সমস্ত রকম সহযোগিতার বার্তা দিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রীর গোচরেও আমাদের দাবি দাওয়ার বিষয়টি দ্রুত তুলে ধরবেন বলে জানিয়েছেন।’
এদিন মন্ত্রীকে পেশ করা স্ট্যাটাস রিপোর্টে ক্ষুদ্র চা চাষিরা জানিয়েছে বর্তমানে উত্তরবঙ্গের ৪২ হাজার হেক্টর জমি ক্ষুদ্র চা চাষের আওতাভুক্ত। মোট চাষির সংখ্যা ৫০ হাজারের বেশি। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে রুটি-রুজির সংস্থান হচ্ছে এমন মানুষের সংখ্যা সব মিলিয়ে ১০ লক্ষ। বর্তমানে উত্তরবঙ্গের মোট চা উৎপাদনের শতকরা ৬৪ শতাংশই আসছে ক্ষুদ্র চা চাষিদের কাঁচা পাতা থেকে। ক্ষুদ্র চা চাষিরা বর্তমানে শুধু কাঁচা পাতার যোগানদার হিসেবেই কাজ করছে না, নিজেরাও স্বনির্ভর গোষ্ঠী গড়ে কিংবা বাড়িতে চা উৎপাদন করছে। ওয়েস্ট বেঙ্গল ইউনাইটেড ফোরাম অফ স্মল টি গ্রোয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রজত রায় কার্জী বলেন, ‘ক্ষুদ্র চাষিদের কাঁচা পাতার ন্যূনতম সহায়ক মূল্য ঘোষণা বর্তমান পরিস্থিতিতে সময়ের চাহিদা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ন্যয্য দাম না পাওয়ার কারণে চাষিদের প্রতি বছর পথে বসার যোগাড় হয়। অসম সরকার বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই কেন্দ্রকে চিঠি দিয়েছে। আমাদের রাজ্য সরকারও এব্যাপারে পদক্ষেপ করবে বলে এদিন মন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার পর আমরা আশাবাদী।’