সাগর বাগচী, শিলিগুড়ি: সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court docket) নির্দেশে চাকরি হারিয়ে বিপাকে পড়েছেন শিক্ষক-শিক্ষিকাদের পাশাপাশি শিক্ষাকর্মীরাও। নিজেদের সমস্যার কথা তুলে ধরে এবার দেশের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে (Droupadi Murmu) চাকরি বাঁচাতে চিঠি দিলেন তাঁরা।
বৃহস্পতিবার শিলিগুড়ির (Siliguri) চাকরিহারা শিক্ষাকর্মীরা আলাদা আলাদাভাবে নিজেদের সমস্যা নিয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে চিঠি পাঠান। শিলিগুড়ি মহকুমার মাটিগাড়ার বাসিন্দা বিভাস ধর কোচবিহার জেলার হলদিবাড়ি নবকিশোর হাইস্কুলে শিক্ষাকর্মী হিসাবে কর্মরত ছিলেন। বিভাস বলেন, ‘আমরা দুর্নীত বা অনিয়মের আশ্রয় নিয়ে চাকরি পাইনি। আমাদের বিরুদ্ধে কোনও এফআইআর কিংবা সিবিআই কোনও চার্জশিট দেয়নি। সেখানে রাজ্য সরকার সুপরিকল্পিতভাবে যোগ্য-অযোগ্যদের মিলিয়ে দিয়ে দুর্নীতি থেকে আড়াল হতে চাইছে।’ বিভাসের সংযোজন, ‘বর্তমানে যা পরিস্থিতি তাতে স্বেচ্ছামৃত্যু ছাড়া আমাদের কাছে আর কোনও পথ খোলা নেই। রাষ্ট্রপতি পারেন আমাদের বর্তমান পরিস্থিতি থেকে উদ্ধার করতে। কেননা রাজ্য সরকার ভাঁওতা দিয়েই চলছে।’
এদিন দুপুরে শিলিগুড়ির প্রধান ডাকঘরের সামনে চাকরিহারারা জড়ো হন। এরপর তাঁরা রাষ্ট্রপতির ভবনের উদ্দেশ্যে চিঠি পোস্ট করেন। চাকরি পাওয়ার পর অনেক শিক্ষাকর্মী ঋণ করে বাড়ি বানিয়েছিলেন, ফ্ল্যাট ও গাড়ি কিনেছিলেন। কিন্তু মাইনে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অনেকে কিস্তির টাকা দিতে পারছেন না।
শিলিগুড়ি শিক্ষা জেলার কৃষ্ণকান্ত হাইস্কুলে চাকরি করতেন সজল তালুকদার। তাঁর কথায়, ‘পরিবার নিয়ে মানসিক চাপের মধ্যে রয়েছি। সাধারণ পরিবার থেকে উঠে আসা। সত্য উদঘাটন না করেই আমাদের চাকরি বাতিল করে দেওয়া হল। আমরা কেউ অপরাধী নই। তাই দুর্নীতির তদন্ত করে যোগ্যদের যাতে চাকরিতে বহাল রাখা হয়, সেই আবেদন রাষ্ট্রপতির কাছে রাখা হয়েছে।’
শিলিগুড়ির বাসিন্দা হওয়া সত্ত্বেও অনেকে রয়েছেন, যাঁরা অন্য জেলায় কর্মরত ছিলেন। সুচিত্র ঈশ্বরী, সন্তোষকুমার দাস, প্রীতিকনা সিনহাদের মতো চাকরিহারাদের কথায়, ‘বিনা অপরাধে এমন শাস্তি কার্যত আমাদের মৃত্যু মুখে ঠেলে দিয়েছে। চরম আর্থিক সংকটে পড়ে গিয়েছি। এখন কেবল রাষ্ট্রপতি আমাদের কিছু গতি করতে পারবেন।’