Siliguri | মেয়র পারিষদ পদ থেকে সরানো হল শ্রাবণী দত্তকে

Siliguri | মেয়র পারিষদ পদ থেকে সরানো হল শ্রাবণী দত্তকে

খেলাধুলা/SPORTS
Spread the love


শিলিগুড়ি : ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার শ্রাবণী দত্তকে মেয়র পারিষদ পদ থেকে সরানো হল। এনিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে শিলিগুড়ির রাজনীতিতে। তবে এবিষয়ে এখনও শ্রাবণীর কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।

তৃণমূল কংগ্রেসের দুই গোষ্ঠীর বিরোধে রবিবার মধ্যরাতে শিলিগুড়ি পুরনিগমের ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের রাজীব মোড়ে উত্তেজনা ছড়ায়। ওয়ার্ডের কাউন্সিলার শ্রাবণীর সঙ্গে দলেরই অপর গোষ্ঠীর নেতা রাজু দাস এবং তাঁর দলবলের বচসা বাধে। সেই বচসা একটা সময় হাতাহাতিতে পৌঁছায় বলে অভিযোগ।

ওয়ার্ড কাউন্সিলারের অভিযোগ, ‘রাজীব মোড়ে গভীর রাত পর্যন্ত দু’-একটি দোকান খোলা রেখে সেখানে স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে বহিরাগতরা হুজ্জুতি করে। প্রকাশ্যে মদের আসর বসে। মানুষজন অতিষ্ঠ। রবিবার গণেশমূর্তির বিসর্জন দিয়ে ফেরার সময় এসব দেখে প্রতিবাদ করতে গেলে আমার শ্লীলতাহানি করেছে।’ এই ঘটনার দ্রুত প্রশাসনিক পদক্ষেপ না হলে অনশনে বসার হুমকি দিয়েছেন শ্রাবণী। পুলিশের ভূমিকা নিয়েও তিনি প্রশ্ন তুলেছেন।

রাজু দাসের গোষ্ঠীর পালটা অভিযোগ, কাউন্সিলার মদ্যপ অবস্থায় সেখানে এসে গালিগালাজ শুরু করেন। একজন ভিডিও রেকর্ডিং করতে গেলে তাঁকে মারধর করা হয়। খোদ কাউন্সিলার লাথি মারেন। সমস্ত ঘটনারই সিসিটিভি ফুটেজ রয়েছে।

ঘটনার খবর পেয়ে গভীর রাতে মেয়র গৌতম দেব রাজীব মোড়ে পৌঁছান। তিনি পুলিশকে ফোন করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের নির্দেশ দেন। বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়ে স্থানীয়দেরও সেখান থেকে সরিয়ে দেন। গৌতম বলেছিলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে পরিষদীয় দলের বৈঠকে আলোচনা করা হবে।’

১৪ নম্বর ওয়ার্ডে ১০০ মিটার এলাকার মধ্যেই দুটি গণেশপুজো হয়। দুটি পুজোরই এবার ১১তম বর্ষ ছিল। রাজীব মোড়ের পুজোর উদ্যোক্তা দলের যুব নেতা রাজু দাসের গোষ্ঠী। অপর পুজোর মূল উদ্যোক্তা কাউন্সিলার শ্রাবণী দত্ত। গতবছরও এই দুটি পুজো কমিটির মধ্যে গণ্ডগোল হয়েছিল। এবারও পুজোকে ঘিরেই বিরোধের সূত্রপাত।

রবিবার রাতে দুটি পুজোরই প্রতিমা বিসর্জন ছিল। রাজীব মোড়ের পুজো উদ্যোক্তারা প্রতিমা বিসর্জন দিয়ে পুজোমণ্ডপের সামনে এসে জমায়েত হন। সেখানে তাঁরা মিষ্টিমুখ সারছিলেন বলে জানিয়েছেন। অভিযোগ, সেই সময় পুরনিগমের গাড়ি নিয়ে অপর পুজোর বিসর্জন থেকে ফিরছিলেন ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলার তথা মেয়র পারিষদ শ্রাবণী দত্ত। রাজীব মোড়ে গাড়ি থেকে নেমেই তিনি এবং তাঁর মেয়ে মোবাইলে ভিডিও করতে শুরু করেন। তিনি প্রশ্ন তোলেন, এত রাতে কেন দোকান খোলা? এখানে এত লোকের জটলা কেন? বহুবার বলার পরেও রাত দেড়টা-দুটো পর্যন্ত কেন দোকান খুলে রেখে মদ বিক্রি হয়?

এই সময় দু’পক্ষের মধ্যে বচসা বেধে যায়। শ্রাবণীর সরকারি গাড়ির কাচ ভাঙচুর করা হয়। ঘটনাস্থলেই ছিলেন রাজীব মোড়ের পুজো উদ্যোক্তা তৃণমূল যুব নেতা রাজু দাস। তাঁর সঙ্গেও শ্রাবণীর কথা কাটাকাটি হয়। অভিযোগ, মদ্যপ অবস্থায় টলমল করতে করতে শ্রাবণী সেখানে গালিগালাজ শুরু করেন। ঘটনাস্থলে উপস্থিত মিঠু বসাক বলেন, ‘আমরা রেস্তোরাঁয় খাবারের জন্য দাঁড়িয়েছিলাম। সেই সময় কাউন্সিলার মদ্যপ অবস্থায় এসে মারধর শুরু করেন। দু’তিনজনকে লাথিও মারেন।’

অন্যদিকে, শ্রাবণী সোমবার সাংবাদিক বৈঠকে অভিযোগ করেন, ‘সরকারি গাড়ি নিয়ে আমরা সেখান দিয়ে আসার সময় পিছন থেকে গাড়ির কাচ ভাঙা হয়। আমার মেয়ের মাথায় আঘাত লেগেছে। তার পরেই আমি বেরিয়ে প্রতিবাদ করেছি। বিসর্জনে নাচানাচি করায় ক্লান্ত ছিলাম। মদ্যপানের অভিযোগ ভিত্তিহীন।’ তাঁর অভিযোগ, রাজীব মোড় প্রতিদিন গভীর রাত পর্যন্ত কিছু বহিরাগতকে নিয়ে স্থানীয় কয়েকজন মদ সহ অন্য মাদকের আসর বসায়। এই ঘটনায় স্থানীয়রা অতিষ্ঠ।’ রাত ১০টার পর থেকে দুটো-আড়াইটে পর্যন্ত রাস্তার ওপরে বহিরাগতদের তাণ্ডব চলে বলে অভিযোগ।

কাউন্সিলার বলেন,  ‘বহুবার পানিট্যাঙ্কি ফাঁড়ির পুলিশকে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলেছি। রবিবার রাতেও ফোন করেছিলাম। কিন্তু অনেক পরে পুলিশ এসেছে।’ পুলিশের সহযোগিতা সেভাবে পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ তুলেছেন শ্রাবণী।

অন্যদিকে তৃণমূল যুব নেতা রাজু দাসের বক্তব্য, ‘এলাকায় গভীর রাত পর্যন্ত মদের আসর বসানোর অভিযোগ ভিত্তিহীন। রবিবার রাতের ঘটনা নিয়ে আমরা মেয়র গৌতম দেবের বাড়িতে গিয়েছিলাম। তিনি বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।’

এসবের পর সোমবার দুপুরে জানা যায়, শ্রাবণীকে মেয়র পারিষদ পদ থেকে সরানো হয়েছে।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *