Siliguri | মেয়রের হুঁশিয়ারি সার, লাগাম নেই পাব-বারে

Siliguri | মেয়রের হুঁশিয়ারি সার, লাগাম নেই পাব-বারে

শিক্ষা
Spread the love


রাহুল মজুমদার, শিলিগুড়ি: নিয়মে বাধার কথা দিয়েছিলেন মেয়র, সেই কথা অবশ্য বাস্তবের মুখ দেখেনি আজ অবধি। শিলিগুড়ি শহরে (Siliguri) লাইসেন্সবিহীন পাব-বার রমরমিয়ে চলা হোক কিংবা লাইসেন্সপ্রাপ্তগুলো ভোররাত অবধি খোলা থাকার অভিযোগ দিনের আলোর মতো সত্যি। পুলিশ-প্রশাসনিক কর্তা থেকে জনপ্রতিনিধি, সবাই সবটা জানেন। মাঝেমধ্যে অভিযান হয়। তাতে অবশ্য নিয়ম ভাঙার প্রবণতায় লাগাম পরানো যায় না।

শিলিগুড়ি শহরে রাত বারোটার মধ্যে যাতে সমস্ত বার ও পাব বন্ধ করা হয়- সে বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া হবে, জানিয়েছিলেন শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব। সেইমতো পুরনিগমের বোর্ড সভায় বিষয়টি পাশ করিয়ে রাজ্য সরকারের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়। তারপরেও সেবক রোডের বার ও পাবগুলোকে নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি। অভিযোগ, বড় শপিং মলে লাইসেন্স ছাড়া অবাধে চলছে বার। কোথাও আবার নির্দিষ্ট সময়সীমা পেরিয়ে রাত তিনটে বাজলেও বন্ধ হচ্ছে না পার্টি।

সম্প্রতি কমিশনারেটের স্পেশাল উইং অভিযান চালিয়ে সেবক রোডে একটি বার ও একটি পাবের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করে। দুটোরই মালিককে আটক করে ভক্তিনগর থানার হাতে তুলে দেওয়া হয়। তাঁদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরদিন আদালত থেকে জামিন পান তাঁরা। অভিযোগ ওঠে, ভক্তিনগর থানা থেকে অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ ধারায় মামলা দেওয়াতেই সহজে পার পেয়ে গিয়েছিলেন। ঘটনায় স্থানীয় থানার আধিকারিকদের ভূমিকায় প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে স্বাভাবিকভাবে। এপ্রসঙ্গে শিলিগুড়ির ডেপুটি পুলিশ কমিশনার জোন (১) রাকেশ সিংয়ের বক্তব্য, ‘যে সমস্ত বার এবং পাব বারবার নিয়ম ভাঙছে, তাদের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসনের কাছে রিপোর্ট পাঠাচ্ছি।’ যে কথা বলেছিলেন মেয়র, সেটা বাস্তবের মুখ দেখবে কবে? গৌতমের সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়া, ‘আমরা আবগারি দপ্তরে চিঠি দিয়েছিলাম। আমি শিলিগুড়ি ফিরে ফলো আপ করব।’

বার, পাবগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করতে শিলিগুড়ির বিধায়ক শংকর ঘোষ পুলিশ কমিশনারকে চিঠি দিয়েছিলেন। মঙ্গলবার বললেন, ‘যারা বারবার আইন ভাঙছে, তারা আইনের ফাঁকফোকরের খোঁজ জানে। তাই জেলা শাসক আর পুলিশের কর্তাদের কাছে অনুরোধ এদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করুন।’

সেবক রোডে কমপক্ষে ৫০টি বার এবং পাব রয়েছে। এর মধ্যে বেশিরভাগ পাব মধ্যরাত অবধি খোলা রাখা হয়। আবগারি দপ্তর থেকে অনুমতি নিয়ে বাড়তি ফি কেটে সর্বোচ্চ রাত দুটো অবধি পাব খোলা রাখা যেতে পারে। উৎসবের দিনে সেই সময়সীমা আরও একটু বাড়ানো হয়। অভিযোগ, দুটো পর্যন্ত অনুমতি থাকলেও একাংশ ভোর তিনটে-চারটে পর্যন্ত পাব চলছে। এর আগে শিলিগুড়ি পুলিশের ডিটেকটিভ ডিপার্টমেন্ট (ডিডি), স্পেশাল অপারেশন গ্রুপের (এসওজি) মতো স্পেশাল ইউনিট অভিযান চালিয়ে থানার হাতে অভিযুক্তদের তুলে দিয়েছে। একই পাবে একাধিকবার অভিযান হয়েছে। কিন্তু কিছুতেই অভিযুক্তদের বাগে আনা যাচ্ছে না।

বেশি রাতে মদ্যপ অবস্থায় পাব থেকে বের হয়ে অনেকে ঝামেলায় জড়াচ্ছেন। কেউ কেউ আবার অপরাধমূলক কার্যকলাপে যুক্ত হচ্ছেন। গত শনিবার সেবক রোডে চেকপোস্ট সংলগ্ন একটি শপিং মলের দ্বিতীয় তলে থাকা একটি বারে হানা দেয় শিলিগুড়ি পুলিশের এসওজি। আগাম খবর ছিল, লাইসেন্স ছাড়া ওই বিলাসবহুল পাবটি চলছে। গিয়ে দেখা যায়, শুধুমাত্র ট্রেড লাইসেন্স নিয়েই চলছে বার। সঙ্গে সঙ্গে বার বন্ধ করে মালিককে আটক করে ভক্তিনগর থানার পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। এরপর সেখান থেকে বেরিয়ে সেবক রোডের অপর একটি শপিং মলে থাকা পাবে যায় এসওজি। রাত তখন ২.৪৫ মিনিট এবং পাবটি চলছিল। অনুমতি ছিল রাত দুটো পর্যন্ত। সেই পাবের মালিককে আটক করে ভক্তিনগর থানার পুলিশের হাতে তুলে দেয় এসওজি। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করে পরদিন আদালতে তোলা হলে জামিন মঞ্জুর করেন বিচারক।

লাইসেন্স ছাড়া বারটি এখনও চলছে বলে অভিযোগ। প্রশ্ন উঠছে, কেন বারবার একই বার ও পাবের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলেও, অভিযান চালানো হলেও কড়া পদক্ষেপ করার পথে হাঁটছে না শিলিগুড়ি পুলিশ? কেন বা কোন জাদুবলে লঘু হয়ে পড়ছে এধরনের অপরাধ?



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *