Siliguri | ভেজাল পনিরে জীবন সংশয়, তবুও দেদারে বিকোচ্ছে শিলিগুড়িতে

Siliguri | ভেজাল পনিরে জীবন সংশয়, তবুও দেদারে বিকোচ্ছে শিলিগুড়িতে

ব্যবসা-বাণিজ্যের /BUSINESS
Spread the love


রণজিৎ ঘোষ, শিলিগুড়ি : বাজার থেকে কম দামে পনির কিনে বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছেন। আর সেই পনির বয়স্ক থেকে শিশু সবাই মিলে খাচ্ছেন? তাহলে সাবধান হয়ে যান। এই ভেজাল পনিরে শরীরে জটিল রোগ বাসা বঁাধতে পারে। বিশেষ করে লিভার এবং চোখ নষ্ট হওয়ার কারণ হতে পারে এই ভেজাল পনির। অথচ শহরের অলিগলিতে দোকান খুলে এই পনিরই বিক্রি হচ্ছে দেদার। দাম অনেকটা কম হওয়ায় অনেকেই তা কিনছেন। একইভাবে ভেজাল ছানাতেও ভরেছে গোটা বাজার।

পুষ্টিবিদ দীপিকা ব্যানার্জি বলেন, ‘ভেজাল পনির থেকে শরীরে মারাত্মক ক্ষতির আশঙ্কা থাকছে। বিশেষ করে ডায়াবিটিক রোগীদের খুব দ্রুত ক্ষতি হবে। এছাড়া শিশু থেকে বয়স্ক সবারই ক্ষতির সম্ভাবনা থাকছে।’ শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব বলেছেন, ‘বিষয়টি আমার জানা ছিল না। আমি পুরনিগমের স্বাস্থ্য বিভাগের ইনস্পেকটরদের এই বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য বলব।’

দীর্ঘদিন সরকারি দুগ্ধ প্রকল্প হিমুল এবং বাংলার ডেয়ারির সঙ্গে যুক্ত আধিকারিকরা জানিয়েছেন, ভালো ফ্যাটযুক্ত এক লিটার দুধ থেকে খুব বেশি হলে ২০০-২২৫ গ্রাম ছানা তৈরি হয়। তবে, সেই দুধে অন্তত ৬.৫ শতাংশ ফ্যাট থাকতেই হবে। সেই ছানা থেকে জল পুরোপুরি ঝরিয়ে বিশেষ উপায়ে অল্প লবণ জল দিয়ে নির্দিষ্ট পনির চেম্বারে চাপা দিয়ে রাখতে হয়। রাতভর এভাবে থাকার পরে সকালে সেটা জমাট পনিরের আকার নেয়। এরপর সেই পনির বাজারজাত করা হয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভালো ফ্যাটযুক্ত দুধ কেনার জন্য অন্তত ৬০ টাকা লিটার দাম পড়ে। অর্থাৎ এক কেজি পনির তৈরি করতে পাঁচ-ছয় লিটার বা তার বেশি দুধ প্রয়োজন হয়। অর্থাৎ তৈরির খরচ, সেটিকে বাজারজাত করা সহ সমস্ত খরচ ধরে এক কেজি পনির তৈরির জন্য ৩০০ টাকার বেশি খরচ হয়।

অথচ শিলিগুড়ির বাজারে বর্তমানে ২০০ টাকা কেজিতেও পনির পাওয়া যাচ্ছে। হাকিমপাড়ার হরেন মুখার্জি রোজ, হায়দরপাড়া, সুভাষপল্লি, মিলনপল্লি, লেকটাউন সহ শহরের বিভিন্ন জায়গায় নতুন নতুন পনিরের দোকান খুলছে। বেশিরভাগ ব্যবসায়ীই পনির প্রস্তুতকারীদের কাছে কেজি হিসাবে কিনে এনে বিক্রি করছেন। অর্থাৎ যে পনির খুচরো বিক্রেতাদের কাছে ২০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে সেটা ওই ব্যবসায়ী যে আরও কম দামে কিনেছেন, সেটা বুঝতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়।

তাহলে কীভাবে এত কম দামে পনির বিক্রি সম্ভব হচ্ছে? জানা গিয়েছে, কম দামে দুধ কিনে তার সঙ্গে পাউডার দুধ, ময়দা এবং অ্যারারুট পাউডার মেশানো হচ্ছে। বেশিদিন সংরক্ষণে রাখতে এই কৃত্রিম পনিরে বিভিন্ন প্রিজারভেটিভ এবং রাসায়নিক মেশানো হচ্ছে। এই পনির তৈরির জন্য ১০-১২ ঘণ্টা সংরক্ষণের প্রয়োজনও হচ্ছে না। যার জেরে এগুলি অজান্তেই মানুষের শরীরে মারাত্মক ক্ষতি ডেকে নিয়ে আসছে।

জলপাইগুড়ি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের প্রধান ডাঃ স্মরজিৎ বণিকের বক্তব্য, ‘এসব কৃত্রিম পনির থেকে লিভার এবং কিডনি প্রথমে নষ্ট হতে পারে। ফ্যাটি লিভারের সমস্যা দেখা দেবে। এর পরে ত্বক থেকে চোখ সহ শরীরের অন্যান্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গও নষ্ট হবে। তাই কম দামে পাওয়া যাচ্ছে ভেবে যেখান সেখান থেকে পনির কেনা উচিত নয়।’ দার্জিলিংয়ের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ তুলসী প্রামাণিক বলেছেন, ‘আমরা দু’-একদিনের মধ্যেই শিলিগুড়ি শহরে অভিযানে নামছি। ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান থেকে পনিরের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হবে।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *