Siliguri | বর্ষার রাতেও দেদারে বালি পাচার

Siliguri | বর্ষার রাতেও দেদারে বালি পাচার

শিক্ষা
Spread the love


রণজিৎ ঘোষ, শিলিগুড়ি : নদীঘাটের রয়্যালটির বালাই নেই। অনেক ঘাটের কথা তো সরকারি সংস্থার খাতায় নথিভুক্তও নেই। অথচ দিব্যি নদী থেকে তুলে ভুয়ো চালান দেখিয়ে প্রতি রাতে পাচার হয়ে যাচ্ছে বালি। গত ছয়-সাত মাস ধরে শিলিগুড়ি মহকুমার বিভিন্ন নদীঘাটে এমন বেআইনি কারবার চলছে।

বর্তমানে বর্ষার জন্য ঘাটগুলি সরকারিভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তার পরেও রাতভর ট্র্যাক্টরে নদী থেকে বালি তুলে সেগুলি বিভিন্ন জায়গায় জমা করা হচ্ছে। সেখান থেকে ডাম্পারে চাপিয়ে বিহার সহ অন্য জায়গায় চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। অভিযোগ, প্রশাসনের শীর্ষস্তরের প্রচ্ছন্ন মদতেই এই কারবার রমরমিয়ে চলছে। আর এর ফলে সরকারের কোটি কোটি টাকার রাজস্ব ক্ষতি হচ্ছে। এই ঘটনায় ওয়েস্ট বেঙ্গল মিনারেল ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড ট্রেডিং কর্পোরেশন লিমিটেডের (ডিব্লউবিএমডিটিসিএল) ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। দার্জিলিং জেলায় অধিকাংশ বালিঘাট এই সংস্থার ওয়েবসাইটে নথিভুক্তই করা হয়নি। ফলে সেই ঘাটগুলি থেকে বালি তুললে কোনও রয়্যালটি নেওয়া হচ্ছে না। বরং মজুত বালি বলে চালিয়ে দেওয়া হচ্ছে। দার্জিলিংয়ের জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক রামকুমার তামাংয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে, জেলা প্রশাসনের অপর এক আধিকারিক বলেছেন, ‘বর্ষার জন্য বর্তমানে দার্জিলিং জেলার সমস্ত নদীঘাট বন্ধ রয়েছে। আর ঘাট লিজ দেওয়ার বিষয়টি পুরোপুরি ডিব্লউবিএমডিটিসিএল থেকে দেখভাল করা হয়।’

বর্ষার জন্য দার্জিলিং জেলায় গত ১ জুলাই থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নদীঘাট থেকে বালি তোলা নিষেধ। অথচ এখনও প্রতি রাতে মহকুমার বিভিন্ন রাস্তা দিয়ে শয়ে-শয়ে ডাম্পার বালি নিয়ে গন্তব্যে পৌঁছে যাচ্ছে। এক ডাম্পার বালি সাধারণত ৯-১০ হাজার টাকায় বিক্রি হয়। কিন্তু নদীঘাট বন্ধ থাকায় বালির দাম আকাশছোঁয়া হয়ে গিয়েছে। এক ডাম্পার বালি খড়িবাড়ির চেকরমারি সীমান্ত দিয়ে বিহারে ১৫ হাজার টাকার বেশি দামে বিক্রি করা হচ্ছে।

শিলিগুড়িকে কেন্দ্র করে মহকুমার চারটি ব্লকের ৩০টির বেশি ঘাট থেকে নিয়মিত বালি ওঠে। কিন্তু তার মধ্যে ১৮-২০টি ঘাট ডিব্লউবিএমডিটিসিএলের কাছে নথিভুক্ত নয়। সূত্রের খবর, ডিব্লউবিএমডিটিসিএল তৈরি হওয়ার পর থেকে বারবার দাবি উঠলেও এই ঘাটগুলিকে নথিভুক্ত করা হয়নি। বাকি যে ঘাটগুলি সরকারিভাবে লিজ দেওয়া হয়, সেই ঘাটগুলিরও লিজ লাইসেন্স পুনর্নবীকরণ হচ্ছে না। কোনও ঘাটের লিজের মেয়াদ ২০২১ সালে শেষ হয়েছে, কোনও ঘাটের লিজের মেয়াদ ২০২৩ সালে শেষ হয়েছে। অথচ সেই ঘাটগুলির লিজ লাইসেন্স পুনর্নবীকরণ না করে কেবল বালি মজুত করার রয়্যালটি দেওয়া হয়েছে। একটি নদীঘাট থেকে বালি তোলার লিজ নিতে অনেক বেশি টাকা লাগে। বালি মজুতের লিজ পেতে তুলনামূলক কম টাকা লাগে। কম টাকায় লিজ নিয়ে আসলে রাতভর বালি তুলে তা মজুত করা হচ্ছে। সেই বালি ডাম্পারে চাপিয়ে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলার পাশাপাশি বিহারে পাচার করা হচ্ছে।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *