মিঠুন ভট্টাচার্য, শিলিগুড়ি : আরজি করের ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত সঞ্জয় রায়ের সাজা নিয়ে নানা মত প্রকাশ করছেন মানুষ। এত আন্দোলন, নিরাপত্তার দাবিতে রাত দখল ইত্যাদির পরও কি সমাজের ছবিটা বদলেছে?
এবার ধর্ষণের পর প্রেমিকাকে জোর করে দু’দিন আটকে রেখে শারীরিক নির্যাতন চালানোর অভিযোগ উঠল শিলিগুড়ি শহরে। এই ঘটনায় সোমবার গভীর রাতে মাটিগাড়া থানা এলাকা থেকে বিশাল সাহানি নামের এক তরুণকে গ্রেপ্তার করে শিলিগুড়ি মহিলা থানার পুলিশ। মঙ্গলবার তাকে শিলিগুড়ি মহকুমা আদালতে তোলা হয়েছিল। বিচারক ধৃতের ১৪ দিনের জেল হেপাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।
ঘটনায় তাজ্জব বনে গিয়েছেন পুলিশ আধিকারিকরাও। শহরের মাঝে গোপন জায়গায় দু’দিন ধরে আটকে রাখার মতো ঘটনা কার্যত নজিরবিহীন বলে দাবি একাংশের। এক আধিকারিকের কথায়, ‘নজিরবিহীন ঘটনা। অভিযোগ দায়ের হওয়ার পর থেকে পুলিশ তৎপর ছিল। অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তদন্ত চলছে।’ পুলিশের তরফে তরুণীর শারীরিক পরীক্ষা করানো হয়। ডিজেল শেড এলাকায় গিয়েও ঘটনাস্থল দেখে এসেছেন তদন্তকারীরা।
প্রায় মাসছয়েক আগে তরুণীর সঙ্গে পরিচয় হয় বিশালের। ধীরে ধীরে দুজনের মধ্যে সম্পর্ক প্রণয়ে পরিণত হয়েছিল। এরপর কেটে যায় কয়েক মাস। অভিযোগ, বিশাল কয়েকদিন আগে দেখা করতে ডাকে প্রেমিকাকে। শিলিগুড়ি জংশনের ডিজেল শেড এলাকায় দেখা করে দুজন। সেখানে একটি পরিত্যক্ত আবাসনে নিয়ে গিয়ে অভিযুক্ত তরুণীকে ধর্ষণ করে। এখানেই শেষ নয়, তরুণী বাড়ি ফিরতে চাইলে বিশাল তাঁর ওপর শারীরিক নির্যাতন চালিয়েছিল বলেও অভিযোগ।
১১ জানুয়ারি থেকে পরপর দু’দিন ধরে আটকে রাখা হয়েছিল তরুণীকে। ১৩ জানুয়ারি তিনি কোনওক্রমে সেখান থেকে পালিয়ে যান। এরপর পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে গা-ঢাকা দেয় বিশাল। সেদিনই তরুণী শিলিগুড়ি মহিলা থানায় এসে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ধর্ষণ, মারধর সহ শারীরিক নির্যাতন এবং আরও একাধিক বিষয়ে লিখিত অভিযোগ জানান। অভিযোগ পেয়েই তদন্তে নামে পুলিশ। শুরু হয় তল্লাশি। বিশালের হদিস প্রথমেই মেলেনি। গত সোমবার পুলিশের কাছে গোপন সূত্রে খবর আসে, বিশাল ফিরেছে এলাকায়। খবর পেয়ে ফাঁদ পাতেন তদন্তকারীরা। সেদিন রাতে গ্রেপ্তার করা হয় বিশালকে।
পুলিশের একাংশ মনে করছে, পাকড়াও হওয়ার ভয়ে বিশাল এলাকা ছেড়ে পালিয়েছিল বটে, তবে বেশিদিন গা-ঢাকা দিয়ে থাকা সম্ভব নয় বুঝে ফেরে সে।