রাহুল মজুমদার, শিলিগুড়ি: পুজোর আগেই ভাঙাচোরা রাস্তা মেরামত করবে শিলিগুড়ি পুরনিগম (Siliguri)। তবে পুজোর আগে এই কাজ শুরু হলেও শেষ হবে পুজোর পর। মনে করা হচ্ছে, সব ভাঙা রাস্তার কাজ কোনওভাবেই নভেম্বরের আগে শেষ করতে পারবে না পুরনিগম। আর এই বিষয়টিকে কেন্দ্র করেই শুরু হয়েছে বিতর্ক।
বিরোধীদের মতে, পুজোয় যদি ভাঙা রাস্তাই থাকে তবে যানজট অনেক বেশি হবে। বর্তমান বোর্ড পুরোপুরি ব্যর্থ বলেই সময়মতো ন্যূনতম নাগরিক পরিষেবা দিতে পারছে না। বিরোধী দলনেতা অমিত জৈনের বক্তব্য, ‘পুরনিগম জানত যে পুজোর আগে রাস্তাগুলি সব মেরামত করতে পারবে না। তাহলে গেইল কিংবা রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানিকে কিছুদিন কাজ বন্ধ রাখতে বলতে পারত। পুজোর পর আবার কাজ হত।’
মেয়র গৌতম দেবের বক্তব্য, ‘আমরা বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানির সঙ্গে কথা বলেছি। সমীক্ষা শুরু হয়ে গিয়েছে। কলেজপাড়া থেকে আমরা রাস্তা মেরামতির কাজ শুরু করছি। নভেম্বরের শেষ কিংবা ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে কাজ শেষ হয়ে যাবে।’
পুরনিগম এলাকায় আন্ডারগ্রাউন্ড কেবলিং এবং গ্যাসের পাইপলাইন বসানোর কাজের জন্যে শহরজুড়ে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির কাজ শুরু হয়েছে। কলেজপাড়া, বাগরাকোট, সেবক রোড, হাকিমপাড়া সহ একাধিক এলাকায় রাস্তার হাল বেহাল। এমনভাবে রাস্তা খোঁড়া হয়েছে যে, কোথাও মাটি বসে গিয়ে বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। আবার কোথাও ফাঁকা হয়ে রয়েছে। যে কোনওদিন এই এলাকাগুলিতে বড় ধরনের দুর্ঘটনাও ঘটতে পারে।
এসবের বাইরে শহরের একাধিক ওয়ার্ডে রাস্তা এমনিই খারাপ হয়ে গিয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে রাস্তার কাজ না হওয়ায় রাস্তাগুলির অবস্থা বেহাল। যে রাস্তাগুলি দীর্ঘদিন ধরে মেরামত না করায় খারাপ হয়েছে, সেগুলিকে আপাতত তাপ্পি দিয়ে ঠিক করা হচ্ছে। যেমন শক্তিগড় পাঁচ নম্বর রাস্তা এতটাই বেহাল হয়ে গিয়েছিল যে, মঙ্গলবার বিকেলে সেখানে পাথর এবং বালি দিয়ে রোলিং করে তাপ্পি দেওয়া হয়েছে।
তবে যে রাস্তাগুলি ইউজি কেবল কিংবা গ্যাসের পাইপলাইন বসানোর জন্যে কাটা হয়েছে সেগুলির সমীক্ষা শুরু করেছে পুরনিগম। পূর্ত দপ্তরের এলাকায় থাকা রাস্তা পূর্ত দপ্তর সমীক্ষা করবে এবং পুরনিগম এলাকায় থাকা রাস্তা পুরনিগম সমীক্ষা করবে। তার জন্যে পুর ও নগরোন্নয়ন দপ্তর পুরনিগমকে আর্থিক বরাদ্দ দেবে। পাশাপাশি বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানি থেকে প্রায় আড়াই কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে বলে পুরনিগম সূত্রে জানা গিয়েছে। সেই টাকা দিয়েই রাস্তা মেরামত করা হবে। কিন্তু পুজো আসতে হাতে আর মাত্র ৩৯ দিন। এই সময়কালে সমীক্ষা করে শহরের এতগুলি রাস্তা মেরামত করা সম্ভব নয়। তাই পুরো বিষয়টি নিয়ে বিরোধীরা প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে। পুজোর সময় কি তবে সাধারণ মানুষ ভাঙা রাস্তা দিয়েই যাতায়াত করবেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে বিরোধীরা।