শিলিগুড়িঃ টাকার জন্য প্রতিবেশীকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে কুপিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠল এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। শনিবার বিকেলে ঘটনাটি ঘটেছে শিলিগুড়ি সংলগ্ন ফুলবাড়ি ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তগর্ত পোড়াঝাড়ের মহাকাল মন্দির এলাকায়। মৃতের নাম সজল কর্মকার (৫৫)। তিনি পেশায় রাজমিস্ত্রি ছিলেন। এদিনের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত মন্টু বর্মনকে গ্রেপ্তার করেছে নিউ জলপাইগুড়ি থানার পুলিশ। রবিবার ময়নাতদন্তের পর মৃতদেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
জানা গিয়েছে, শনিবার বিকাল পাঁচটা নাগাদ সজল বাড়িতে একাই ছিলেন। সেই সময় মন্টু তাঁকে বাড়ি থেকে ডেকে পাশের একটি বাগানে নিয়ে যায়। সেখানে ধারাল অস্ত্র দিয়ে গলায়, পেটে ও হাতে আঘাত করে বলে অভিযোগ। অতর্কিত হামলায় সজল মাটিতে লুটিয়ে পরেন। বিষয়টি দেখতে পেয়ে এক মহিলা চিৎকার শুরু করেন। প্রত্যক্ষদর্শী বিশাখা মহন্ত নামে ওই মহিলা দাবি করেন, ‘বাড়ির পাশে বাগানে ছাগল বেঁধে রেখেছিলাম। বিকালে ছাগল আনতে গিয়ে দেখি মন্টু ধারাল অস্ত্র নিয়ে এসে সজলকে কোপাচ্ছে। তখন চিৎকার করতে থাকি। কিন্তু ততক্ষনে রক্তাত্ব অবস্থায় সজল মাটিতে লুটিয়ে পরেছিলেন।’
ঘটনার পর ওই ব্যক্তিকে গুরুতর জখম অবস্থায় উদ্ধার করে স্থানীয়রা উত্তরবঙ্গে মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে যায়। কিন্তু চিকিৎসক সজলকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। প্রতিবেশীরাই মৃতের পরিবারের সদস্যদের ফোন করে বিষয়টি জানান হয়। শনিবার রাতেই মৃতার পরিবারের তরফে এনজেপি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। রাতেই এনজেপি থানার পুলিশ শম্ভুকে গ্রেপ্তার করে। মৃতার মেয়ে শুক্লা সাহার বক্তব্য, ‘শুনেছিলাম বাবা মন্টুর কাছ থেকে ১২০০ টাকা নিয়েছিল। যার মধ্যে এক হাজার টাকা আগেই ফিরিয়ে দিয়েছিল। টাকার জন্য বাবাকে খুন করেছে। খুনির আমরা ফাঁসির দাবি জানাচ্ছি।’
যদিও মৃতের পরিবার সূত্রে খবর, সজল ও শম্ভু শনিবার সকাল থেকে একসঙ্গে বাড়ি থেকে বেরিয়ে ছিল। এরপর দুজনে বসে মদ্যপান করে বলে খবর। এদিকে, দুপুরে সজলের স্ত্রী বিনা কর্মকার বলেন, ‘সবকিছু ঠিকই ছিল। এভাবে স্বামীকে খুন করে দেবে ভাবিনি। এর আগে মন্টুর সঙ্গে স্বামীর ঝগড়া হয়েছিল। কিন্তু পরে তা আবার মিটমাট হয়ে যায়। তিন মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি। আমিও দিনমজুরের কাজ করি। কিন্তু এভাবে সব শেষ হয়ে যাবে ভাবতে পারিনি।’ রবিবার অভিযুক্তকে জলপাইগুড়ি আদালতে তোলা হয়। বিচারক অভিযুক্তকে পুলিশ হেপাজতের নির্দেশ দেন। পুলিশ গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।