Siliguri | দুষ্কৃতীদের মুক্তাঞ্চলে পুলিশের ঘুম ভাঙবে কবে?

Siliguri | দুষ্কৃতীদের মুক্তাঞ্চলে পুলিশের ঘুম ভাঙবে কবে?

ভিডিও/VIDEO
Spread the love


শমিদীপ দত্ত, শিলিগুড়ি: ব্যর্থতা কোথায়? নজরদারি, না কি তাতে ফাঁক খুঁজে মেরামতের সদিচ্ছায়? একের পর এক ঘটনা শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটান পুলিশকে আয়নার সামনে এনে দঁাড় করিয়ে দিচ্ছে। তবুও দুষ্কৃতীমূলক কর্মকাণ্ডে লাগাম পরানো যাচ্ছে না। গ্যাংয়ের দাপাদাপি থেকে জমির কারবার নিয়ে গণ্ডগোলের জেরে গুলি ছোড়া। এটিএম কাউন্টার লুট থেকে তালিকায় সাম্প্রতিকতম সংযোজন সোনার দোকানে ডাকাতি। এটিএম লুটে অভিযুক্তদের নাগাল মেলেনি এখনও, এরমধ্যেই সোনার দোকান থেকে বিপুল অঙ্কের সামগ্রী নিয়ে পগারপার হল দুষ্কৃতীরা।

দুষ্কর্মের আগে অপরাধীরা একাধিকবার রেইকি চালালেও পুলিশের কাছে সেই খবর পৌঁছাল না কেন? সোর্স নেটওয়ার্ক কি এতটাই দুর্বল হয়ে পড়েছে? এটিএম লুটের পরও শহরের নিরাপত্তা জোরদার করা হল না কেন? বুধবার রাতের ঘটনার রেশ না কাটতেই ডাকাতি, তবে কি শহরের ঢিলেঢালা নিরাপত্তা ব্যবস্থা দুষ্কৃতীদের সাহস জুগিয়েছে এমন কাণ্ড ঘটানোর? একাধিক প্রশ্নবাণে বিদ্ধ পুলিশকর্তারা। তাঁদের অবশ্য একটাই দায়সারা বক্তব্য, ‘তদন্ত চলছে। দুষ্কৃতীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।’

গত কয়েক মাসের ঘটনা শহর শিলিগুড়ির (Siliguri) নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। বাংলাদেশি গ্রেপ্তারির ঘটনায় আলোচনায় উঠে এসেছিল ফ্ল্যাট ও বাড়িভাড়ার প্রসঙ্গ। বিভিন্ন জায়গা থেকে মানুষ শিক্ষা বা কর্মসূত্রে এখানে এসে ভাড়ায় থাকছেন। তাঁরা কোথা থেকে আসছেন, কবে থেকে থাকছেন, আদৌ ভাড়া নেওয়ার আগে নথি জমা দিয়েছেন কি না ইত্যাদি প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে। পুলিশ-প্রশাসনের কাছে এই সমস্ত ভাড়াটিয়াদের সঠিক তথ্য নেই।

জাল আধার কার্ড চক্রের রমরমা শহর ও সংলগ্ন এলাকায়। ফকদইবাড়িতে দীর্ঘদিন ধরে ভুয়ো নথির কারবার চলার পর টের পায় পুলিশ। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশি ছাত্রটির কাছেও ভারতীয় নথি রয়েছে। সে শহরে একটি ফ্ল্যাটও কিনেছে। ঠাকুরনগরে মুখিয়া গ্যাংয়ের দৌরাত্ম্যও না কি অজানা ছিল পুলিশের। ঝামেলার তদন্ত করতে গিয়ে বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। শহরবাসী বিশ্বজিৎ দাসের কটাক্ষ, ‘আসলে শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটান পুলিশের নজরদারির ফঁাকফোকরগুলো এখন জনসমক্ষে প্রকাশ পাচ্ছে। কোনও ধরনের সোর্স কাজে আসছে না আর। এদিকে, মানুষের বিপদ বাড়ছে।’

শিলিগুড়িতে বিভিন্ন সময় কাজ করা বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত পুলিশকর্মীরা একটি বিষয়ে সহমত, আর তা হল, শহর বরাবরই সেনসিটিভ জায়গা। তাই আপাতদৃষ্টিতে শান্ত বলে মনে হলেও নজরদারিতে একটু ঢিলেমি দিলে যে কোনও মুহূর্তে বড় বিপদ হয়ে যেতে পারে। সবসময় পুলিশকে সতর্ক থাকতে হবে। এক মাসের মধ্যে চারটে বড় ঘটনা মোটেই পুলিশের পক্ষে সুখকর পরিস্থিতি নয়।

মজার ব্যাপার হল, দক্ষিণবঙ্গে একের পর এক সোনার দোকানে ডাকাতির সময় প্রতিটি সোনার দোকানে পুলিশকর্মী মোতায়েন করেছিল শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটান পুলিশ। সেনসিটিভ জায়গা হিসেবে চিহ্নিত করে বিশেষ নজরদারির চালানোর কথা বলা হয়েছিল। এরপর সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নজরদারি শিথিল হয়ে যায়। রবিবার তাই কার্যত বিনা বাধায় সোনার দোকানে লুটপাট চালায় ডাকাতরা।

ঘটনার পর পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সমাজমাধ্যমে একের পর এক পোস্ট করেন শহরবাসী। নিজেদের ক্ষোভ উগড়ে দেন সাধারণ মানুষ। এই যেমন শুভ্রদীপ ভট্টাচার্য নামে এক তরুণের পোস্ট, ‘প্রাণের প্রিয় শহর শিলিগুড়ি অপরাধীদের মুক্তাঞ্চলে পরিণত হয়েছে। গ্যাংবাজি, দিনদুপুরে ডাকাতি, নির্ভয়ে অপরাধীরা অপরাধ করবে আর মানুষ ভয়ে ভয়ে দিন কাটাবে! চরম প্রশাসনিক ব্যর্থতা!’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *