Siliguri | তরুণীরা উদ্ধার হতেই বাড়িতে ফোনে হুমকি

Siliguri | তরুণীরা উদ্ধার হতেই বাড়িতে ফোনে হুমকি

ব্লগ/BLOG
Spread the love


রাহুল মজুমদার, শিলিগুড়ি: নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে ক্যাপিটাল এক্সপ্রেস থেকে তরুণী উদ্ধার কাণ্ডে রহস্য বাড়ছে। অভিযোগ, তরুণীরা উদ্ধার হওয়ার পরেই তাঁদের বাড়িতে ফোন করে হুমকি দিচ্ছে চক্রের মাথারা। ইতিমধ্যে ময়নাগুড়ি এলাকার এক তরুণীর পরিবারকে ফোন করে হুমকি দেওয়া হয়েছে। ঘটনার পর আতঙ্কে রয়েছে ওই তরুণীর পরিবার। তারা ময়নাগুড়ি (Mainaguri) থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। এদিকে, শিলিগুড়ির (Siliguri) ভবেশ মোড়ের কাছে একটি বাড়িভাড়া নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারি স্কিম দীনদয়াল উপাধ্যায় গ্রামীণ কৌশল্য যোজনার বোর্ড টাঙিয়ে অবৈধ প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছিল ওই তরুণীদের। প্রশিক্ষণের নামে স্পায়ের কাজ এবং রিসেপশনিস্টের কাজ শেখানো হত তাঁদের। প্রতি মাসে এক লক্ষ টাকা বাড়িভাড়া দিত অভিযুক্তরা।

তদন্তে নেমে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য পাচ্ছেন তদন্তকারীরা। সোমবার যে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তারা ওই সংস্থার কর্মী ছিল বলে জানা গিয়েছে। ধৃতদের মঙ্গলবার জলপাইগুড়ি জেলা আদালতে তুলে ছয়দিনের হেপাজতে নিয়েছে জিআরপি থানা। বিষয়টির গুরুত্ব বুঝে একজন ইনস্পেকটর পদমর্যাদার পুলিশকর্মীকে তদন্তকারী অফিসারের দায়িত্ব দিয়েছে জিআরপি। জলপাইগুড়ি জেলা আদালতের সরকারি আইনজীবী মৃন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘আদালত অভিযুক্তদের জামিনের আবেদন খারিজ করে পুলিশ হেপাজতে পাঠিয়েছে।’ জিআরপির ডিএসপি পারিজাত সরকার বলেন, ‘অভিযুক্তদের হেপাজতে নিয়ে আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করছি। অনেক তথ্য পাওয়া গিয়েছে। সেগুলি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’

কাজ দেওয়ার নাম করে তামিলনাডুর হসুর জেলায় পাচারের আগে ৫৬ জন তরুণীকে উদ্ধার করেছে জিআরপি এবং আরপিএফের বিশেষ দল। সোমবার বিকেলে ডাউন ক্যাপিটাল এক্সপ্রেসে অভিযান চালিয়ে ওই তরুণীদের উদ্ধার করা হয়েছে। পাশাপাশি একজন তরুণ ও এক তরুণীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তরুণ দক্ষিণবঙ্গের বাসিন্দা হলেও তরুণী শিলিগুড়ির এনজেপি থানার পোড়াঝাড় এলাকার বাসিন্দা বলে পুলিশকে জানিয়েছে। পুলিশ ওই ঠিকানাও যাচাই করছে।

প্রাথমিকভাবে পুলিশ জানতে পেরেছে, গত তিন বছর ধরে শিলিগুড়িতে এই ভুয়ো ব্যবসা পেতে বসেছে একটি চক্র। ভবেশ মোড়ের কাছে পেট্রোল পাম্পের কাছে বাঁ-দিকে তিনতলা বাড়িভাড়া নেয় তারা। মাসে এক লক্ষ টাকা ভাড়া দিত অভিযুক্তরা। সেখানেই চলত প্রশিক্ষণ।

অভিযোগ, উত্তরবঙ্গের আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি এবং কোচবিহার থেকে মূলত চা বাগান এবং আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া পরিবারের মেয়েদের টার্গেট করা হত। প্রশিক্ষণের পর বেঙ্গালুরুতে পাঠানোর নামে হসুরে পাঠিয়ে দেওয়া হত। সেখানে যৌন ব্যবসায় নামতে বাধ্য করা হত। এর আগেও এই জেলাগুলি থেকে ২০০-রও বেশি তরুণীকে পাচার করা হয়েছে। অনেকেই ফিরে এসে ভয়ানক অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন। ইতিমধ্যে জিআরপির হাতে সেই তথ্যও এসেছে।

যে এলাকায় ভাড়া নিয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হত সেখানকার স্থানীয়দের বক্তব্য, এর আগেও অনেক মেয়ে যাতায়াত করত। তদন্তকারীরা মনে করছেন গোটা ঘটনায় আন্তর্জাতিক নারী পাচারচক্র জড়িত রয়েছে। কারণ ইতিমধ্যে মুখ না খোলার জন্যে তরুণীদের পরিবারকে ফোন করে হুমকি দেওয়া শুরু হয়েছে। একাধিক তরুণীর পরিবারকে ফোন করা হয়েছে। তারা সকলেই পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছে। উত্তরের জেলাগুলি থেকে এভাবে দিনের পর দিন তরুণীদের পাচার করে দেওয়া হলেও কোনও নজরদারি না থাকায় জেলা প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। ঘটনার তদন্তে আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি ও কোচবিহার জেলা পুলিশের সঙ্গেও যোগাযোগ শুরু করেছে জিআরপি।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *