Siliguri | একচিলতে ঘরে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা ভারতীর 

Siliguri | একচিলতে ঘরে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা ভারতীর 

শিক্ষা
Spread the love


ভাস্কর বাগচী, শিলিগুড়ি: শিলিগুড়ির (Siliguri) দেশবন্ধুপাড়ার আকাশ সমান উঁচু বহুতলের নীচতলায় নিরাপত্তারক্ষীর জন্য রাখা একচিলতে ঘরে ঠাঁই হয়েছে। সেই ঘরেই গত ১৫ দিন ধরে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন টেবিল টেনিস তারকা তথা প্রশিক্ষক বছর তিরাশির ভারতী ঘোষ। খাওয়াদাওয়া প্রায় বন্ধ। অল্প কিছু খাবার পেটে পড়লেই তা বমি হয়ে যাচ্ছে। বেশ কিছুদিন থেকেই বিছানায় উঠে বসারও শক্তি হারিয়েছেন। অর্থের অভাবে তিনি ভর্তি হতে পারেননি শহরের কোনও বড় নার্সিংহোমে। দীর্ঘদিন ধরে এভাবে পড়ে থাকলেও কেউ খোঁজ নেয়নি তাঁর।

বৃহস্পতিবার দার্জিলিং জেলা লিগ্যাল এইড ফোরামের সাধারণ সম্পাদক অমিত সরকার ভারতীদেবীর অসুস্থতার বিষয়টি জানান শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেবকে (Goutam Deb)। খবর পেয়ে উদ্যোগী হন গৌতম। বিকেলে ভারতীদেবীকে মাটিগাড়ার একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়।

বেশ কিছুদিন ধরেই বার্ধক্যজনিত অসুখে ভুগছিলেন ভারতী। এই অবস্থাতেও বিশেষভাবে সক্ষম খেলোয়াড়দের নিয়ে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। মাঝে একবার হিলকার্ট রোডের একটি নার্সিংহোমে তাঁকে ভর্তি করা হলেও সেখানকার চিকিৎসায় সন্তুষ্ট ছিলেন না তিনি। এরপর থেকে বাড়িতেই ছিলেন। তবে ছোট একচিলতে ঘরে এত বড়মাপের একজন প্রশিক্ষক যেভাবে অতি সাধারণ জীবনযাপন করতেন তা নিয়ে হতবাক হয়ে যান ক্রীড়াপ্রেমীরাও। দীর্ঘ প্রায় ৮-১০ বছর ধরে তিনি ওই নিরাপত্তারক্ষীর ছোট ঘরেই রয়েছেন। শারীরিক অসুস্থতার কারণে বেশ কিছুদিন ধরে হাঁটাচলা প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল বঙ্গরত্ন পুরস্কারপ্রাপ্ত ওই প্রশিক্ষকের। বিছানা ছেড়ে ওঠার ক্ষমতাও হারিয়েছিলেন। গত দিন পনেরো হল শরীর আরও বেশি খারাপ হয়ে পড়ে। খাওয়াদাওয়াও করতে পারছেন না। কথাবার্তাও প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ওই অবস্থাতেই একচিলতে ঘরে পড়ে ছিলেন প্রাক্তন ওই রেলকর্মী। অর্থের অভাব থাকায় চিকিৎসাও ঠিকমতো করাতে পারেননি। অমিত বলেন, ‘খাওয়াদাওয়া করতে পারছেন না ভারতীদি। সামান্য কিছু খেলেও বমি হয়ে যাচ্ছে। উনি পেনশন পান ঠিকই, কিন্তু তাঁর জমানো টাকা কিছু নেই বললেই চলে। প্রায় ১৫ দিনেরও বেশি সময় ধরে বিছানাতেই শুয়ে রয়েছেন। এখন কথাও বলতে পারছেন না তেমন।’

বয়সের ভারে বহুদিন থেকে একপ্রকার শয্যাশায়ীই ছিলেন ভারতী। তবু তার মধ্যেই বিশেষভাবে সক্ষম টেবিল টেনিস খেলোয়াড়দের নিয়ে চিন্তা করে গিয়েছেন। তারা যাতে সরকারি সাহায্য পায় সেই ব্যাপারে উদ্যোগী হয়েছিলেন এর মধ্যেও। এদিন বিকেলে মেয়র তাঁর বাড়িতে গেলে সেখানে ভারতীর বর্তমান শারীরিক অবস্থার কথা তাঁকে জানানো হয়। এরপরেই মেয়র মাটিগাড়ার একটি নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেন। সেখানে ভারতীকে ভর্তির ব্যবস্থা করেন।

গৌতম বলেন, ‘ভারতী ঘোষ শিলিগুড়ি তথা উত্তরবঙ্গের গর্ব। তাঁর শারীরিক অবস্থার কথা শুনেই বিকেলে তাঁর বাড়ি গিয়েছি। নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলি। সেখানে তাঁকে ভর্তি করা হয়েছে। শুক্রবার আমি নার্সিংহোমে গিয়ে চিকিৎসকদের সঙ্গেও কথা বলব।’

এদিন সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয় ভারতীকে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত নার্সিংহোমে ইমার্জেন্সি বিভাগে নিয়ে গিয়ে তাঁর চিকিৎসা শুরু করেছেন চিকিৎসকেরা।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *