শিলিগুড়ি: দুই মাস কেটে গিয়েছে, তাই পরিস্থিতি হয়তো ঠান্ডা হয়ে গিয়েছে। আর পুলিশও তার খোঁজ করা ছেড়ে দিয়েছে! এমনটা ভেবেই হয়তো এলাকায় ফিরে এসে আগের মতো দাপিয়ে বেড়ানোর কথা ভেবেছিল শিলিগুড়ির বাড়িভাসা এলাকায় মারামারির ঘটনায় যুক্ত ‘মুখিয়া গ্যাং’-এর অন্যতম পান্ডা লালু সাহানি। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। শুক্রবার রাতে টহলদারির সময় ভবেশ মোড় এলাকায় এনজেপি থানার পুলিশ লালুকে ঘুড়ে বেড়াতে দেখে। সঙ্গে সঙ্গে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। শনিবার ধৃতকে জলপাইগুড়ি আদালতে তোলা হয়। বিচারক ধৃতকে ১৪ দিনের জেল হেপাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত ১৭ জুন বাড়িভাসা এলাকায় একটি দোকানের সামনে কয়েকজন ব্যক্তি এক ডেলিভারি কর্মীর সঙ্গে ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েছিল। সেই সময় ওই ব্যক্তিদের তার দোকানের সামনে থেকে সরে যেতে বলেন ওই দোকানদার। অভিযোগ, এরপরই ‘মুখিয়া গ্যাং’-এর গুন্ডারা এসে ওই ব্যবসায়ী সহ তাঁর পরিবারের সদস্যদের বেধরক মারধর করে। ঘটনার প্রতিবাদে এবং দোষীদের শাস্তির দাবিতে এলাকার মানুষ বনধ ডাকার পাশাপাশি ১৮ জুন ইস্টার্ন বাইপাস মোড় এলাকা অবরোধ করে তুমুল বিক্ষোভ দেখায়। শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেবের আশ্বাসে সেই সময় অবরোধ উঠেছিল।
এদিকে ঘটনার পর পুলিশ মুখিয়া গ্যাং-এর সাত জন সদস্যকে গ্রেপ্তার করে। কিন্তু গ্যাং-এর অন্যতম পান্ডা লালু সাহানি পরিবার নিয়ে গা ঢাকা দেয়। সূত্রের খবর, ঘটনার পরই লালু বিহারে পালিয়ে যায়। লালুর বিরুদ্ধে একাধিক অসামাজিক কাজকর্মে যুক্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে। ঘটনার পর নির্যাতিত ব্যক্তির পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ তুলেছিল,লালু আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে সেইদিন এলাকায় এসেছিল। মারামারির ঘটনা লালু শুরু করেছিল। তার বিরুদ্ধে জমির অবৈধ কারবারের যুক্ত থাকারও অভিযোগ রয়েছে। এর আগেও একাধিক মারামারিতে তার নাম জড়িয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর।
প্রসঙ্গত, বাইপাস এলাকায় কেজিএফ গ্যাং-এর পর মুখিয়া গ্যাং-এর অপরাধীদের অসমাজিক কাজকর্ম চরমে উঠেছিল। অভিযোগ, শাসকদলের একাংশের মদত গ্যাং-এর পান্ডাদের পেছনে ছিল। তবে এক এক করে গ্যাং-এর মাথারা গ্রেপ্তার হওয়ার পর থেকে গ্যাংটি আগের তুলনায় দুর্বল হয়ে পড়ে। এদিকে, পুলিশ লালুকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তদন্তের জন্য আরও তথ্য হাতে পেয়েছে বলে খবর।