উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ শেখ হাসিনাকে ভারত না ফেরালেও বাংলাদেশের এই সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বিচার হবে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে। এ কথা স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছে ঢাকা। ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘আগামী এক-দেড় মাসের মধ্যে বিচার শুরু হবে হাসিনার। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগের তদন্ত চলছে। সেই তদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলেই আনুষ্ঠানিক বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যাবে। তাঁর অনুপস্থিতিতেই চলবে বিচার।’
বাংলাদেশে কোটা আন্দোলনের পরেই ক্ষমতাচ্যুত হন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেষ হাসিনা। তড়িঘড়ি দেশ ছাড়তে বাধ্য হন মুজিব কন্যা। আশ্রয় নেন ভারতে। হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংক্রান্ত মামলায় পরোয়ানা জারি করে ঢাকা। তার পরেই হাসিনাকে ফেরত চেয়ে ভারত সরকারের কাছে আবেদন করে ঢাকা। কিন্তু সেই আবেদনে সারা দেয়নি ভারতের বিদেশ মন্ত্রক।
বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকারের অভিযোগ ভারতের মাটি ব্যবহার করে বাংলাদেশে অশান্তির প্ররোচনা দিচ্ছেন হাসিনা। যাতে ভারতে থেকে এই কোনও প্ররোচনামূলক মন্তব্য যাতে হাসিনা না-করেন, সেটা দেখার জন্য ভারতের কাছে নোট পাঠায় ইউনূস সরকার। তবে দিল্লি জানিয়ে দেয়, হাসিনা নিজস্ব এক্তিয়ারে নিজের পরিকাঠামো ব্যবহার করে কোনও মন্তব্য করে থাকলে তার দায় ভারতের নয়।
হাসিনাকে ফেরাতে ঢাকার তরফে বারংবার ভারতের কাছে আবেদন করা হলেও কোনও গুরুত্বই দেয়নি দিল্লি। তবুও হাল ছাড়তে নারাজ ঢাকা। এই চাপানউতোর চলাকালীনই তাজুল বলেন, ‘ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড নোটিস জারি করে হাসিনাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা সরকারের পক্ষ থেকে অব্যাহত আছে। গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ট্রাইব্যুনাল থেকে পেয়েছি। সেটা ইন্টারপোলের কাছে পাঠানো হবে, যাতে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।’
তাঁর সংযোজন, ‘হাসিনা ভারতে আছেন এবং সে দেশের সঙ্গে আমাদের বহিঃসমর্পণ চুক্তি রয়েছে। সেই চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে যাওয়া হাসিনাকে ফেরাতে বাধ্য ভারত। একজন অপরাধীর পক্ষ না নিয়ে ভারতের উচিত হাসিনাকে ফিরিয়ে দিয়ে আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া।’
আজুল আরও বলেন, ‘ভারতের জানা উচিত এটা সাধারণ একটা খুনের বা গুলি করার মামলা নয়। ৫৬ হাজার বর্গ মাইলজুড়ে মানবতাবিরোধী অপরাধ হয়েছে। দু’হাজারের মতো মানুষ শহিদ হয়েছেন। ২৫ হাজারের মতো মানুষ আহত হয়েছেন। আমাদের প্রধান চ্যালেঞ্জ হলো ন্যায়বিচার ও অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করা। আমরা সে কাজটা করে যাচ্ছি।’
