উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: বাংলাদেশের ময়মনসিংয়ে সত্যজিৎ রায়ের দাদু উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর যে বাড়িটি ছিল তা ভেঙে ফেলা হচ্ছে। তবে ইতিমধ্যেই বাড়িটির এক-তৃতীয়াংশ ভেঙে ফেলা হয়েছে। বিষয়টি সামনে আসতেই এনিয়ে মঙ্গলবার প্রতিবাদে সরব হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Bandopadhyay)। এর মধ্যেই বাংলাদেশে ইউনূস সরকারকে (Yunus Authorities) কড়া বার্তা দিল কেন্দ্র সরকার (Central Goverment)। এদিন রাতেই বিদেশ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে বাড়িটি সংরক্ষণ, সংস্কার এবং মেরামতের জন্যে সহযোগিতার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল ইউনূস সরকারকে। তাঁরা বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারকে ওই ঐতিহাসিক বাড়িটি না ভাঙার জন্য অনুরোধ করেছেন। ভারত সরকারের আপত্তির পরেই বাংলাদেশের ময়মনসিংহ জেলায় সত্যজিৎ রায়ের পূর্বপুরুষদের বাড়ি ভাঙার কাজ আপাতত বন্ধ রাখল বাংলাদেশ সরকার। বুধবার বাড়িটি ভাঙার কাজ বন্ধ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার ময়মনসিংয়ে সত্যজিৎ রায়ের দাদু উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর যে বাড়িটি ভাঙা শুরু হতেই তীব্র নিন্দা করে ভারত সরকার। ভারত সরকারের আপত্তি করার পর রাতেই বাড়িটি পরিদর্শনে গিয়েছিলেন জেলা প্রশাসনের কর্তারা। এর পরেই ভাঙাভাঙি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে গত সোমবার ময়মনসিংহের শিশুবিষয়ক কর্তার কাছে একটি লিখিত আবেদন করেছিলেন বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব দপ্তরের শশীলজ জাদুঘরের কর্তা সাবিনা ইয়াসমিন। বাড়িটি রায় পরিবারের ঐতিহাসিক বাড়ি বলে দাবি করে সেটিকে প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন হিসেবে তালিকাভুক্ত করার দাবি জানান তিনি। ময়মনসিংহ জেলার শিশুবিষয়ক কর্তা মেহেদি জামান জানিয়েছেন, জেলা প্রশাসকের নির্দেশেই বাড়িটি ভাঙার কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। এই বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিত ভাবে জানানো হয়েছে। বাড়িটি সংরক্ষণ করা হবে কিনা, সেই বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারই শেষ সিদ্ধান্ত নেবে।
এদিকে, ঢাকার শিশু বিষয়ক আধিকারিক মহম্মদ মেহেদি জামান সেদেশের সংবাদপত্র ডেইলি স্টারকে বলেন, বিগত ১০ বছর ধরে বাড়িটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। যে কোনও মুহূর্তে সেটি ভেঙে পড়ে বিপদ ঘটতে পারে। তাই এর জায়গায় সেমি-কংক্রিটের একটি বিল্ডিং তৈরি করা হবে।
বাংলাদেশের পুরাতত্ত্ব বিভাগের (Division of Archaeology) তথ্য অনুযায়ী, বাড়িটি ১০০ বছরের বেশি পুরনো। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর বাড়িটি সেদেশের সরকারের হাতে আসে। উল্লেখ্য, বাংলাদেশে হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে সাহিত্যিক, সংগীত শিল্পী, সহ বিশিষ্ট ব্যক্তিদের বসতভিটে ভাঙচুর করা হচ্ছে। মাস খানেক আগে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের (Rabindranath tagor) পৈতৃক বাড়িতে ভাঙচুর করেছিল দুষ্কৃতীরা। তারপর এবার সত্যজিৎ রায়ের বাড়ি। কেন্দ্র সরকারের তরফে বাড়িটির ঐতিহাসিক গুরুত্ব উল্লেখ করে বাড়ি ভাঙার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার অনুরোধ করা হয়। বদলে বাড়িটি সংস্কার করে সাহিত্য মিউজিয়াম গড়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়। এর ফলে দুই দেশের সাংস্কৃতিক মেলবন্ধন আরও ভালো হবে।