Saraswati Puja | পাঠশালা বন্ধ হলেও থামেনি বাগদেবীর পুজো

Saraswati Puja | পাঠশালা বন্ধ হলেও থামেনি বাগদেবীর পুজো

শিক্ষা
Spread the love


দীপঙ্কর মিত্র, রায়গঞ্জ: রায়গঞ্জ শহরের বন্দরে অবস্থিত গোপালবান্ধব পাঠশালায় ১৬ বছর আগে পঠনপাঠন বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু রয়ে গিয়েছে সেই পাঠশালার পরিত্যক্ত স্কুলবাড়ি। নিয়ম মেনে সেই পরিত্যক্ত বাড়িতেই এখনও প্রতি বছর সরস্বতীপুজোর আয়োজন করে আসছেন পণ্ডিত গোপালচন্দ্র মণ্ডলের বংশধররা। অন্যথা হয়নি এবারও। চলতি বছরেও সোমবার সকালে সেখানে পুজোর আয়োজন করা হয়েছে।

শিক্ষা বিস্তারের লক্ষ্যে তৎকালীন ব্রিটিশ শাসনের অবিরাম রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে ভারতীয় সংস্কৃতির পরম্পরার সঙ্গী হয়ে ১৯১৫ সালে স্থানীয় বাসিন্দা গোপালচন্দ্র মণ্ডল নিজের ইচ্ছাশক্তিতে গড়ে তুলেছিলেন এই পাঠশালা। এলাকার ছাত্রছাত্রীদের পাশাপাশি গ্রামাঞ্চলের ছেলেমেয়েরাও এখানে পড়তে আসত। ১৯৭৭ সালে রাজ্যে বাম সরকার আসার পর পাঠশালায় ৪ জন শিক্ষক নিয়োগ করে। তবে বিদ্যালয়ের জন্য মেলেনি কোনও অনুদান।

কিন্তু দেখা যায় ২০০০ সালের পর থেকে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা কমতে শুরু করে। ২০০৯ সালে পুরোপুরিভাবে বন্ধ হয়ে যায়। প্রায় ১৬ বছর হয়ে গেলেও সেই স্কুলে আজও বাগদেবীর আরাধনায় শামিল হয় এ’প্রজন্মের পড়ুয়া থেকে প্রাক্তন ছাত্রছাত্রীরা। এই পাঠশালা থেকে একদিকে শিক্ষাবিদ, সাহিত্যিক, সুপ্রতিষ্ঠিত ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার ও ব্যবসায়ী তৈরি হয়েছে। রায়গঞ্জের বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণীর বাবা প্রাক্তন প্রয়াত পুরচেয়ারম্যান দীনদয়াল কল্যাণী এই পাঠশালার ছাত্র ছিলেন। পাঠশালার  প্রতিষ্ঠাতা গোপালচন্দ্র মণ্ডলের তিন পুত্র মানিকলাল মণ্ডল, বলাইচাঁদ মণ্ডল এবং কানাইলাল মণ্ডল। তিন ছেলেই ইতিমধ্যে প্রয়াত হয়েছেন। প্রয়াত কানাইলাল মণ্ডলের ছেলে রামনারায়ণ মণ্ডল নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়া পাঠশালার স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে  বলেন, ‘একসময় রায়গঞ্জের বিহার সংলগ্ন বাহিন, ভিটিহার, সুভাষগঞ্জ সহ কুলিক নদীর পাড়ে বসবাসকারী প্রচুর ছেলেমেয়ে এই পাঠশালায় পড়তে আসতেন। কোনও ছাত্র পড়াশোনায় পিছিয়ে পড়লে, তাদের বাড়িতে গিয়ে আলাদা করে রাতে পড়িয়ে আসতেন তিনি।

দুই প্রাক্তন পড়ুয়া রাজকুমার সাহা এবং তপন দাস জানান, ‘আমরা এক হাতে চটের বস্তা আর অন্য হাতে বই,খাতা নিয়ে এই পাঠশালায় পড়তে আসতাম। আমরা কেউ ১০ পয়সা, কেউ ২৫ পয়সা করে মাসে দিতাম। এলাকার কোঅর্ডিনেটর চৈতালি ঘোষ সাহা বলেন, ‘পাঠশালার ঐতিহ্য আজও ধরে রেখেছেন পণ্ডিত গোপালচন্দ্র মণ্ডলের বংশধররা এবং স্থানীয় বাসিন্দারা। আমরাও সরস্বতীপুজোয় শামিল হই প্রতি বছর।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *