রণজিৎ ঘোষ, শিলিগুড়ি: পর্যটকদের কাছে সান্দাকফু (Sandakphu) ও ফালুটের আকর্ষণ বাড়াতে রবিবার থেকে ইয়াক বা চমরিগাই পর্যটন উৎসব শুরু হয়েছে। আর দু’দিনের এই উৎসবের সূচনাতেই সান্দাকফুতে তুষারপাত পর্যটকদের বাড়তি উৎসাহ জুগিয়েছে। এই উৎসবে অংশ নিতে সান্দাকফু ও ফালুটের বিভিন্ন হোটেল ও হোমস্টেতে এখন পর্যটকদের ভিড় উপচে পড়ছে। গোটা এপ্রিল মাস জুড়েই এই অঞ্চলে হোটেল, লজগুলির বুকিং পূর্ণ হয়ে গিয়েছে বলে জানিয়েছেন সিঙ্গালিলা ল্যান্ড রোভার্স ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের কর্তা চন্দন প্রধান।
প্রতি বছর থাকুমে চমরিগাই পর্যটন উৎসবের আয়োজন করা হয়। এবার এই উৎসব অষ্টম বর্ষে পা দিয়েছে। এবারের উৎসবে পর্যটকরা প্রায় ১৩০টি চমরিগাইয়ের দর্শন পাবেন। পাশাপাশি চমরিগাইয়ের দুধ থেকে তৈরি সুরপি, দই, ঘি, চিজ সহ বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রীর প্রদর্শনী ও বিক্রির ব্যবস্থাও থাকছে। উৎসবের শুরুতেই রবিবার সান্দাকফুতে বছরের দ্বিতীয় তুষারপাত চাক্ষুস করে পর্যটকরা ব্যাপক খুশি।
সিঙ্গালিলা ল্যান্ড রোভার্স ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের কোঅর্ডিনেটর অনিল তামাং বলেন, ‘সিঙ্গালিলা বনাঞ্চলে চমরিগাই অত্যন্ত পরিচিত নাম। আগে এই চমরিগাইকে ব্যবহার করেই পণ্য আনা নেওয়ার কাজ হত। সান্দাকফুতে ট্রেকিংয়ে যাওয়া পর্যটকদের ব্যাগপত্রও এই চমরিগাইয়ের পিঠে চাপিয়েই দুর্গম পথ বয়ে নিয়ে যাওয়া হত। তবে বছর কয়েক আগে চমরিগাইয়ে পণ্য পরিবহণের ওপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করে দার্জিলিং জেলা প্রশাসন।’
সিঙ্গালিলার বনবস্তিতে বসবাসকারীদের বক্তব্য, অনেকেই বাড়িতে চমরিগাই পালন করে সংসার চালান। চমরিগাই নিয়ে বাড়ির কর্তাই গাইড হিসাবে ট্রেকারদের সঙ্গ দিয়ে রোজগারের সুযোগ পেতেন। কিন্তু এখন সেই পথ বন্ধ হয়ে গিয়েছে।
চমরিগাইকে ঘিরে পর্যটকদের মধ্যে যথেষ্ট কৌতূহল রয়েছে। সান্দাকফু, ফালুট পর্যটনস্থলের আকর্ষণ পর্যটকদের কাছে আরও বাড়াতেই এই চমরিগাই উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে বলে আয়োজকরা জানিয়েছেন। পাশাপাশি সান্দাকফুর ঐতিহ্যবাহী ল্যান্ড রোভার গাড়িতে চড়ার সুযোগও মিলছে।
এই উৎসবের যোগ দিতে শনিবার সকালে দার্জিলিং থেকে ঘুম হয়ে প্রচুর পর্যটক ল্যান্ড রোভারে চেপে ফালুটে পৌঁছেছেন। রবিবার তাঁরা ফালুট থেকে প্রায় ৬ কিলোমিটার উচ্চতায় থাকুমে উৎসবে যোগ দেন। সেখান থেকে পর্যটকরা সান্দাকফুতেও যাবেন বলে জানা গিয়েছে।
উৎসবে অংশ নিয়ে চমরিগাই দেখার আনন্দ নিতে সান্দাকফুতে অনেক পর্যটক আগেই পৌঁছে গিয়েছেন। তবে সান্দাকফু, থাকুম, ফালুটে খুব বেশি পরিমাণে হোটেল, লজের ব্যবস্থা না থাকায় বহু পর্যটককে জায়গা দেওয়া যাচ্ছে না বলে উৎসবের আয়োজকরা জানিয়েছেন।
সিঙ্গালিলা ল্যান্ড রোভার্স ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের কোঅর্ডিনেটর অনিল তামাংয়ের কথায়, ‘এখন যে পর্যটকরা উৎসবে যেতে চাইছেন, তাঁদের সকালে গিয়ে বিকেলে দার্জিলিং ফিরে আসতে হবে। কেননা আগামী কয়েকদিন ওই এলাকায় রাত্রীযাপনের জন্য কোনও হোটেল, লজে আর জায়গা নেই।’