অকল্যান্ড: অবসর ভেঙে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরছেন রস টেলর।তবে নিউজিল্যান্ড নয়, নিজের মাতৃভূমি ছোট্ট দ্বীপরাষ্ট্র সামোয়ার হয়ে! কিউয়ি ক্রিকেটের অন্যতম কিংবদন্তি টেলর। নিউজিল্যান্ডের হয়ে খেলেছেন ১১২টি টেস্ট। ২৩৬টি ওডিআই এবং ১০২টি টি২০ ম্যাচে প্রতিনিধিত্ব করেছেন ব্ল্যাক ক্যাপসদের। ২০২২ সালে নিজের যে আকর্ষণীয় কেরিয়ারে ইতি টানেন। বছর তিনেকের বিশ্রাম কাটিয়ে ফের বাইশ গজে দেখা যাবে টেলর-ঝলক।
নিউজিল্যান্ডের জার্সি বদলে নামবেন ওশেনিয়ার মাত্র ২ লক্ষ মানুষের সামোয়া দ্বীপের হয়ে। ওমানে ৮ অক্টোবর থেকে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এশিয়া-ইস্ট এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে ২০২৬ টি২০ বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জন পর্বে অংশ নেবে ক্রিকেট দুনিয়ার অখ্যাত, অপরিচিত সামোয়া। সেই সামোয়ার জার্সিতেই দেখা যাবে ক্রিকেট বিশ্বের অত্যন্ত পরিচিত মুখ রস টেলরকে। লক্ষ্য, নিজের মায়ের জন্মভূমিকে বিশ্বকাপের মূলপর্বে পৌঁছে দেওয়া।
ইতালির হয়ে যে কাজটা কয়েকদিন আগে করে দেখিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন টেস্ট ক্রিকেটার জো বার্নস। পারিবারিক দায়বদ্ধতা, আবেগের টানে ইতালির জার্সিতে শুধু মাঠেই নামেননি, নেতৃত্ব দিয়ে দলকে পৌঁছে দিয়েছেন ভারত-শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া টি২০ বিশ্বকাপের মূলপর্বে। টেলর চান তারই পুনরাবৃত্তি ঘটাতে। নিজের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে সামোয়ার জার্সি হাতে সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের ছবি পোস্ট করেছেন টেলর।
টেলরের মায়ের জন্মভূমি সামোয়া। সেই সুবাদে নিউজিল্যান্ডের পাশাপাশি সামোয়ার দ্বৈত নাগরিকত্ব রয়েছে টেলরের। সামোয়া ক্রিকেটের সঙ্গে যুক্ত বন্ধু তথা প্রাক্তন নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটার তরুণ নেথুলার অনুরোধ করেন, সামোয়ার বিশ্বকাপ অভিযানে শামিল হতে। সেই ডাকে সাড়া দিয়ে অবসর ভেঙে ৪১ বছর বয়সে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার সিদ্ধান্ত।
নিউজিল্যান্ড তথা বিশ্ব ক্রিকেটের অন্যতম কিংবদন্তি টেলর বলেছেন, ‘গর্বের সঙ্গে ঘোষণা করছি, আমি ব্লু জার্সিতে সামোয়া ক্রিকেটের হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রত্যাবর্তন করছি। এটা শুধু ফেরা নয়, তার চেয়েও অনেক বেশি। আমার নিজস্ব সংস্কৃতি, গ্রাম, পরিবারের প্রতিনিধিত্ব করা আমার কাছে গর্বের। আর যখন কেউ বলে অবসর ভেঙে ফিরে এসে তাদের পাশে দাঁড়াতে, তা এড়িয়ে যাওয়া কঠিন। আশা করি, ওদের প্রত্যাশার সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারব।’
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১৮ হাজারের বেশি রান রয়েছে তিন ফরম্যাট মিলিয়ে। চল্লিশটা সেঞ্চুরি। দীর্ঘদিন সুনামের সঙ্গে নেতৃত্ব দিয়েছেন নিউজিল্যান্ডের মতো দলকেও। এহেন টেলরের উপস্থিতি নিশ্চিতভাবে সামোয়ার অখ্যাত বাকি খেলোয়াড়ের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দেবে। টেলরও আত্মবিশ্বাসী। বলছিলেন, ‘আবার মাঠে ফিরব, নতুন দলের হয়ে নামব। ভিতরে ভিতরে উত্তেজনা অনুভব করছি। মুখিয়ে রয়েছি মাঠে ফেরার সঙ্গে সঙ্গে নিজের অভিজ্ঞতা সবার সঙ্গে ভাগ করে নিতে। একইসঙ্গে বিশ্বাস, এখনও রান করার ক্ষমতা রয়েছে আমার মধ্যে।’