মুম্বই: টি২০-র পর টেস্ট অবসর। লাল বলের ক্রিকেট থেকে বিদায়ের নেপথ্য কারণ নিয়ে জল্পনার শেষ নেই। বাস্তব যাই হোক, সিদ্ধান্তটা একান্তভাবে তাঁর নিজস্ব। তবে ছেলে রোহিত শর্মার যে সিদ্ধান্তে একেবারেই খুশি নন বাবা গুরুনাথ শর্মা। বরাবর টেস্টের পক্ষে ছিলেন। টি২০ ক্রিকেট খুব একটা পছন্দ করেন না। ভেবেছিলেন লাল বলের ক্রিকেটে আরও কিছুদিন খেলবেন রোহিত।
টেস্ট অবসর নিয়ে প্রথমবার মুখ খুলে যে কথা জানালেন স্বয়ং রোহিত। দীর্ঘদিনের প্রাক্তন সতীর্থ চেতেশ্বর পূজারার স্ত্রী পূজা পূজারার নতুন বই ‘দ্য ডায়ারি অফ আ ক্রিকেটার্স ওয়াইফ’ প্রকাশের অনুষ্ঠানে একথা জানান হিটম্যান। বলেছেন, ‘ওডিআই ক্রিকেটে যখন ২৬৪ রান করি, তখন বাবার প্রতিক্রিয়া মনে আছে। বলেছিলেন, ভালো খেলেছি, ঠিক আছে, সাবাস। ব্যাস ওইটুকু। বাড়তি উত্তেজনা দেখিনি। অথচ, যখন টেস্টে ৩০, ৪০, ৬০ করতাম, খুঁটিয়ে সবকিছু জানতে চাইতেন। টেস্টের প্রতি এতটাই টান ছিল তাঁর। সবসময় টেস্টে আমার সাফল্যের জন্য মুখিয়ে থাকতেন। লাল বলের ফর্ম্যাটে আমার প্রচুর ম্যাচ দেখেছেন বাবা। সবসময় উৎসাহ জোগাতেন। আমি যখন টেস্ট অবসরের সিদ্ধান্ত নিই, তাই খুশি হতে পারেননি।’
সাদা বলের ফর্ম্যাটে রোহিত যতটা সফল, টেস্টে অবশ্য ততটা নন। ৬৭টি টেস্টে ৪০.৫৭ গড়ে করেছেন ৪৩০১ রান। ১২টি শতরান ও ১৮টি হাফ সেঞ্চুরি। অভিষেক টেস্টে শতরান করলেও মিডল অর্ডারে নিজের পায়ের জমি কখনই পাকা করতে পারেননি। পরে বিরাট কোহলি-রবি শাস্ত্রী জুটি ওপেনিংয়ে তুলে আনার পর সাফল্যের মুখ দেখা। ২০২২ সালে কোহলি অধিনায়কত্ব ছাড়ার পর হটসিটে বসেন রোহিত।
বাবা গুরুনাথ শর্মা চেয়েছিলেন, ছেলের কেরিয়ার আরও লম্বা হোক। পরিসংখ্যান আরও উজ্জ্বল হোক। স্কুল ক্রিকেট থেকে অনূর্ধ্ব-১৯, রনজি ট্রফি, দলীপ ট্রফি, ইরানি থেকে ইন্ডিয়া ‘এ’, সবসময় ছেলের পাশে থেকে সেই স্বপ্নটা দেখেছেন। অফিসের কাজের মাঝেই সময় করে ছেলের খেলা দেখতে ছুটে যেতেন মাঠে। রোহিতের কথায়, তাঁর কেরিয়ারের শুরু থেকে শীর্ষে উত্তরণ-পুরো অধ্যায়ের সাক্ষী তাঁর বাবা। বাবার উৎসাহ, পাশে থাকা আজ তাঁকে এই উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছে। পেয়েছেন দেশের হয়ে খেলার সুযোগ।
রোহিত আরও বলেছেন, ‘আমার বাবা ট্রান্সপোর্ট কোম্পানিতে কাজ করতেন। মায়ের মতো বাবাও প্রচুর ত্যাগ করেছেন। আমার কেরিয়ারে ওঁর অবদান অনস্বীকার্য। তবে বাবা প্রথম দিন থেকে টেস্টের বড় ভক্ত। নতুন ফর্ম্যাট সেভাবে পছন্দ করতেন না। তারপরও সবসময় পাশে থেকেছেন, উৎসাহ জুগিয়েছেন এগিয়ে যাওয়ার।’