সায়নদীপ ভট্টাচার্য, বক্সিরহাট: নৌকায় চেপে রসিকবিলে (Rasikbil) পাখিশুমারি করবে কোচবিহার (Cooch Behar) বন দপ্তর। শুক্রবার সকাল থেকে সেই কাজ শুরু হবে, চলবে দিনভর। বৃহস্পতিবার পাখিশুমারির দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিবেশপ্রেমী সংস্থার কর্মীরা রসিকবিলে পৌঁছেছেন। বনকর্তা এবং কর্মীদের সঙ্গে কাজের রূপরেখা নিয়ে বৈঠক করেন তাঁরা।
রসিকবিলের বিশাল জলাভূমির কয়েকটি অংশে নৌকায় যাতায়াত করতে হবে। সেই কথা ভেবে রাখা হয়েছে একাধিক নৌকা। বন দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বছর পাখিশুমারির দায়িত্বে রয়েছেন ২৫ জন। তাঁদের মধ্যে শিলিগুড়ির পরিবেশপ্রেমী সংস্থার তরফে আটজন থাকছেন। বাকি ১৭ জন বন দপ্তরের কর্মী এবং আধিকারিক।কোচবিহারের ডিএফও অসিতাভ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘রসিকবিলে পাখিশুমারির প্রস্তুতি অনেকটাই এগিয়েছে। নৌকা চেপে ওই কর্মীদের পাখিশুমারির কাজে ঘুরতে হবে।’
এই রসিকবিল প্রকৃতি পর্যটনকেন্দ্রের মূল আকর্ষণ শীতকালে আসা পরিযায়ী পাখিরা৷ এছাড়া অন্য নানা প্রজাতির পাখিও নজর কাড়ে। এই পরিযায়ী পাখিদের ভিড়ের জন্য ওই এলাকা শুরুতে পরিচিতি লাভ করে। পরবর্তীতে সেখানকার বিশাল জলাশয় লাগোয়া চত্বরে গড়ে ওঠে মিনি জু। এবছরও শীত পড়তেই ঝাঁকে ঝাঁকে পরিযায়ী পাখি আসতে শুরু করেছে রসিকবিলে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পরিযায়ী পাখিদের কলরবে মুখরিত হয়ে উঠেছে গোটা রসিকবিল চত্বর। তাদের আতিথেয়তায় কোনওরকম খামতি রাখেনি বন দপ্তর। ইতিমধ্যে রসিকবিল জলাশয়ে শীতের মরশুমে মাছ ধরার বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছে। যাতে অতিথিদের খাবারে কোনও অসুবিধা না হয়। জেলেদের আনাগোনা থাকলে পাখিরা বিরক্ত বোধ করতে পারে। তাই আপাতত রসিকবিলে মাছ ধরা নিষিদ্ধ। শুধু তাই নয়, মাছ ধরার জালে যাতে কোনও পাখি আটকে না যায়, সেইজন্য জলাশয় চত্বরে জাল শুকোতে দেওয়ার ব্যাপারেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, আগে শীতের মরশুমে গ্যাডওয়াল, গ্রে হেডেড ল্যাপউইং, রেড কেস্টেড প্রোচার্ড, কমন প্রোচার্ড, ফেরুজিনিয়াস, ফ্যালকেটেড ডাক-এর মতো হরেক প্রজাতির পাখির দেখা মিলেছে। গতবছর সেখানে স্মল প্রাটিনকোল পাখি, গারগেনি হাঁস এবং নর্দার্ন পিনটেইলের মতো পরিযায়ী পাখির সন্ধানও পান গণনাকর্মীরা। ৫০ প্রজাতির প্রায় ছয় হাজার পাখির সন্ধান মিলেছিল সেবার।
জেলা বন বিভাগের এডিএফও বিজনকুমার নাথ বলেন, ‘নির্দিষ্ট সময়ে কচুরিপানা পরিষ্কার করায় এবার ঝিলে পাখি বেশি দেখা যাচ্ছে। পাখিশুমারিতে তা স্পষ্ট হবে।’ শুমারির দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা ন্যাফের মুখপাত্র অনিমেষ বসু অবশ্য জানালেন, কুয়াশা থাকলে দৃশ্যমানতা কমে যায়। ফলে পাখি দেখার ক্ষেত্রেও সমস্যা হয়। এটাই এখন চিন্তার।