উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার ঘটনার প্রতিবাদে ইংল্যান্ডের মাটিতে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে খেলবে না ভারত। ভারতীয় ক্রিকেটারদের আপত্তিতে ম্যাচ বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে আয়োজকরা। ইতিমধ্যেই বিক্রি হয়ে যাওয়া ম্যাচের টিকিটের টাকা ফেরাতে শুরুও করে দিয়েছে উদ্যোক্তারা। ভারতীয় ক্রিকেটারদের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রামদাস আতাওয়ালে। তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য, খেলার মধ্যে রাজনীতি জড়ানো উচিত নয়।
ভারতীয় ক্রিকেটারদের অনেকেই পহেলগাঁও হামলার প্রতিবাদে সরব হন। ক্রিকেট মহলের একাংশ থেকেও বলা হচ্ছিল, সন্ত্রাসবাদ আর খেলাধুলো একসঙ্গে চলতে পারে না। তারই প্রতিফলন ঘটল ইংল্যান্ডের বার্মিংহামে শাহিদ আফ্রিদির পাকিস্তান লেজেন্ডদের বিরুদ্ধে ম্যাচে। রবিবার রাতেই ইংল্যান্ডের বার্মিংহামে শাহিদ আফ্রিদির পাকিস্তান লেজেন্ডদের বিরুদ্ধে নামার কথা ছিল অবসরপ্রাপ্ত ভারতীয়দের দলের। ভারতীয় দলে রয়েছেন শিখর ধাওয়ান, স্টুয়ার্ট বিনি, বরুণ অ্যারন, ইরফান পাঠান, ইউসুফ পাঠান, হরভজন সিং, অম্বাতি রায়ডু, ইউসুফ পাঠান, রবিন উথাপ্পারা। অন্যদিকে পাকিস্তান দলে শাহিদ আফ্রিদির নেতৃত্ব ছিলেন খেলার কথা ছিল সরফরাজ খান, সইদ আজমল, সোহেল খান এবং আমির ইয়ামিনের মতো ক্রিকেটারদের। আর এই ম্যাচেই বিতর্ক চরম আকার নেয়।
ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে এই ম্যাচ বাতিল হওয়ায় ক্ষুব্ধ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রামদাস আতাওয়ালে। তিনি বলেন, ‘রাজনীতির সঙ্গে খেলাকে জড়ানো একেবারেই উচিত নয়। খেলা যদি ভারতের মাটিতে হত, তাহলে বিষয়টি নিয়ে বিবেচনা করা যেত। কিন্তু ইংল্যান্ডের মাটিতে হতে চলা ম্যাচ বাতিল করার কোনও প্রয়োজন ছিল না। তিনি আরও বলেন, “খেলাধুলার ক্ষেত্রে রাজনীতি থাকা একেবারেই কাম্য নয়। খেলা ভারতে হলে বিষয়টি গুরুতর হতে পারত। কিন্তু ম্যাচটি হচ্ছে ইংল্যান্ডে। আমরা পাকিস্তানকে যুদ্ধে হারিয়েছি। ওদের ক্রিকেট দলকেও হারিয়েছি। তাই বিরোধীদের খেলার মাঠে রাজনীতি টেনে আনা একেবারেই উচিৎ নয়।”
পাশাপাশি জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এটা ঠিক যে পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলা হয়েছিল। তার জবাবে আমরা ওদের জঙ্গি ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দিয়েছি। কিন্তু তার সঙ্গে খেলাকে জড়িয়ে ফেলা ঠিক নয়।”
পহেলগাঁও হামলার ঘটনায় ভারতীয় ক্রিকেটার প্রতিবাদের জেরেই পিছু হটতে হল উদ্যোক্তাদের। প্রথম শিখর ধাওয়ান ওই ম্যাচে নামতে আপত্তি জানিয়ে আয়োজকদের চিঠি লেখেন। এরপর একে একে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে খেলতে আপত্তি জানান হরভজন সিং, ইউসুফ পাঠান, ইরফান পাঠানরা। শেষমেশ আয়োজকরা ওই ম্যাচ বাতিল করতে বাধ্য হন। আয়োজকদের তরফে এক বিবৃতি দিয়ে ওই ম্যাচ বাতিলের কথা ঘোষণা করা হয়েছে। দর্শকদের কাছে ক্ষমা চেয়ে আয়োজকরা জানিয়েছেন, টুর্নামেন্টের বাকি অংশ সূচি অনুযায়ী চলবে। তবে এই ম্যাচটি বাতিল। আয়জোকদের দাবি, “আমরা ভালো কিছু মুহূর্ত ক্রিকেটপ্রেমীদের উপহার দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তাতে লক্ষ লক্ষ মানুষ আঘাত পেয়েছেন। সর্বোপরি ভারতীয় কিংবদন্তিরা আঘাত পেয়েছেন। তাই আমরা ক্ষমাপ্রার্থী।”