Raiganj Medical Faculty | মেডিকেল কলেজের ভেতর হোটেল খুলে ব্যবসা, উদাসীন কর্তৃপক্ষ

Raiganj Medical Faculty | মেডিকেল কলেজের ভেতর হোটেল খুলে ব্যবসা, উদাসীন কর্তৃপক্ষ

ব্যবসা-বাণিজ্যের /BUSINESS
Spread the love


বিশ্বজিৎ সরকার, রায়গঞ্জ: রায়গঞ্জ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ভেতরে ঢুকলে বোঝা দায় যে, এটি হাসপাতাল নাকি কোনও হোটেল না রিসর্ট! হাসপাতালের করিডরে ঝুপড়ির মতো একাধিক খাবারের দোকান। কী পাওয়া যায় না সেখানে। ভাত, রুটি, পরোটা, মাছ, মাংস, ডিম থেকে শুরু করে শাকসবজি সবকিছু।

শিশু বিভাগ, এসএনসিইউ, পিকু ওয়ার্ড সংলগ্ন ক্যাম্পাসের ৩৩ নম্বর ঘরে রান্না হচ্ছে রোগীদের রকমারি খাবার। ওই ঘর সংলগ্ন রয়েছে ওয়ার্ড মাস্টার, পোস্টমর্টেম, জন্মমৃত্যু শংসাপত্রের জরুরি দপ্তর। হাসপাতালের ভেতরে যেখানে-সেখানে রয়েছে একাধিক মোটরবাইক সহ বিভিন্ন গাড়ি। দেখে মনে হবে কোনও পার্কিংয়ের জায়গা। হঠাৎ কোনও অঘটন ঘটলে মুহূর্তের মধ্যে সব শেষ হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা স্থানীয়দের।

যদিও কর্তৃপক্ষের দাবি, উনুন ব্যবহার বন্ধ করতে দফায় দফায় ঝুপড়ি দোকানগুলিতে অভিযান চালানো হয়। কিন্তু কিছুতেই তা রোধ করা যাচ্ছে না।

মেডিকেল কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, এক দশক ধরে সেখানে রয়েছে চা, লুচি, সবজি, ভাত, মাংসের মতো খাবারের দোকান। সেই খাবার তৈরি করতে গ্যাস ওভেন ও স্টোভ ব্যবহার করা হচ্ছে। পাশাপাশি ওই বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের একাধিক দোকান গজিয়ে উঠেছে। ওই অঘোষিত বাজারটি মেডিকেলের করিডর দিয়ে ঘেরা থাকায় দমকলের ইঞ্জিন প্রবেশ করার মতো রাস্তা নেই। যা যথেষ্ট উদ্বেগের বিষয়।

বিগত কয়েক বছরে হাসপাতালের একাধিক প্রশাসনিক বৈঠকে বাজারটি স্থানান্তরিত করা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কিন্তু কাজের কাজ কিছু হয়নি। একইসঙ্গে হাসপাতালের জরুরি বিভাগ, বহির্বিভাগের সামনে হকাররা কর্তৃপক্ষের নজর এড়িয়ে দোকান বসিয়ে রমরমা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ। ওই দোকানগুলিতেও উনুন ব্যবহার করা হচ্ছে।

রায়গঞ্জ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের এমএসভিপি প্রিয়ঙ্কর রায় বলেন, ‘অনেকবার বাজারটি ওই জায়গা থেকে তুলে নেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছি। কিন্তু সম্ভব হয়নি। এই সমস্যার সমাধান মেডিকেল কলেজের একার পক্ষে সম্ভব নয়। এবিষয়ে প্রশাসনকে অনেকবার জানানো হয়েছে।’

তবে হঠাৎ করে ওই বাজারটি তুলে দিলে আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নিত হতে পারে বলে আশঙ্কা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। এছাড়া বহির্বিভাগ, জরুরি বিভাগের সামনে থেকে হকারদের সরাতে মাঝেমধ্যে পুলিশ অভিযান চালায়। কিন্তু পুনরায় হকাররা সেসব জায়গায় ঘাঁটি গেড়ে বসেন। মেডিকেল কলেজের স্টাফ ক্যান্টিন রয়েছে। সেখানে চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীদের পাশাপাশি রোগীর পরিজনরাও যান। এছাড়াও রোগীর পরিজনদের জন্য বাইরে পৃথকভাবে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা, স্বনির্ভর গোষ্ঠী পরিচালিত হোটেলের খাবারের ব্যবস্থা রয়েছে।

বেআইনিভাবে গজিয়ে ওঠা এক দোকানের মালিক উত্তম সরকার বলেন, ‘হাসপাতাল থেকে কিছুটা দূরে আমার দোকান রয়েছে। সাবধানে রান্না করি। পরিবারে ছয়জন সদস্য। তাঁদের মধ্যে আমি একমাত্র উপার্জনকারী।’

হাসপাতালে ক্যান্টিনের কর্মী মন্টু সাহা বললেন, ‘ওই দোকানগুলিতে অগ্নিনির্বাপণের কোনও ব্যবস্থা নেই। যে কোনও দিন বড়সড়ো দুর্ঘটনা হতে পারে। এছাড়াও ওই দোকানগুলির জন্য আমাদের বিক্রি অনেক কমে গিয়েছে।’

হেমতাবাদ থেকে চিকিৎসা করাতে আসা এক রোগীর আত্মীয় আরমান আলির বক্তব্য, ‘হাসপাতালের করিডরের মধ্যে দোকানগুলো বসেছে। দোকানগুলিতে যেভাবে আগুন জ্বালিয়ে রান্না করা হয় তাতে হঠাৎ অগ্নিকাণ্ড হলে সকলে বিপদে পড়বে। দোকানগুলিকে হাসপাতাল থেকে উচ্ছেদ করা উচিত।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *