দীপঙ্কর মিত্র, রায়গঞ্জ: রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের (Raiganj College) স্নাতকের চতুর্থ সিমেস্টারের কমপালসারি ইংরেজি-২ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র বিভ্রাটের জেরে চরম হয়রানির শিকার হতে হল পড়ুয়াদের। বুধবার সকাল ১১টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত পরীক্ষার নির্ধারিত সময় ছিল। প্রশ্নপত্রে তিনটি প্রশ্নের তিনটিরই উত্তর দেওয়ার জন্য নির্দেশ ছিল, কোনও অপশন ছিল না। কিন্তু পরীক্ষার শেষমুহূর্তে আরও দুটি প্রশ্ন অপশন হিসেবে দিতেই বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয় ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে। কারণ সেই সময়ে অনেকেই উত্তরপত্র জমা দিয়ে পরীক্ষা কক্ষ থেকে বেরিয়ে যান। ফলে তাঁরা সেই সুযোগ থেকে বঞ্চিত হন।
পড়ুয়াদের অভিযোগ, পরীক্ষা শেষ হওয়ার ১০ মিনিট আগে অপশন দুটি প্রশ্ন দেওয়া হয়। অনেকে লিখেছেন, আবার অনেকে আগেই বেরিয়ে গিয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া অভীক সাহা, দীপালি কুণ্ডু সহ অনেকের অভিযোগ, কমপালসারি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে কোনও অপশন থাকবে কি না সেটা অনেক আগেই সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত ছিল। পরীক্ষা নিয়ে এভাবে ছেলেখেলা ঠিক হয়নি। পরীক্ষার শুরুতে দুটি অপশন প্রশ্ন দেওয়া থাকলে এভাবে ছুটোছুটি করতে হত না।
পড়ুয়াদের অভিযোগের কথা স্বীকার করে নিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ামক শুভময় ভৌমিক। তিনি বলেন, ‘বিভ্রান্তি কিছু হয়নি, তবে অভিযোগ এসেছে। বোর্ড অফ স্টাডিজের মিটিংয়ে এই বিষয়ে আলোচনা করা হবে। সেখানে যাবতীয় বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে। সাধারণত বোর্ড অফ স্টাডিজের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী যে কোনও প্রশ্নপত্র তৈরি হয়। সেই সময়ে কী সিদ্ধান্ত হয়েছিল, তার সঙ্গে ছাত্রছাত্রীদের অভিযোগগুলি খতিয়ে দেখা হবে।’
অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক নির্ঝর সরকারের দাবি, পরীক্ষা শুরুর এক ঘণ্টা পর দুটি অপশন দেওয়া হয়। ১২টার মধ্যে অপশন দেওয়া হয়। এই বিষয়ে কোনও টেক্সট থাকে না বলে অপশন কম থাকে। নোটিশ রাইটিং, লেটার রাইটিং থাকে বলে অপশন থাকে না। তিনি আরও বলেন, ‘দূরবর্তী পড়ুয়াদের অসুবিধা হয়েছিল বলে দুটি করে অপশন দিয়েছি। তার ভিত্তিতে মূল্যায়ন হবে। এটা একটা নর্মাল বিষয়। তবে ছাত্রছাত্রীদের অভিযোগগুলি খতিয়ে দেখা হবে।’
প্রায় দুই হাজার ছাত্রছাত্রী পরীক্ষায় বসেছিলেন। ৩০ নম্বরের বাধ্যতামূলক পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে শুধুমাত্র তিনটি প্রশ্ন থাকায় এবং কোনও অপশন না থাকায় ছাত্রছাত্রীরা বিভ্রান্তির মধ্যে পড়েন। শেষমুহূর্তে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দুটি অপশন প্রশ্ন দিয়ে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করে। এমনকি বাড়তি সময় পর্যন্তও দেয়। কিন্তু সেই সুযোগ পাওয়ার আগেই অনেকে পরীক্ষাকেন্দ্র থেকে বেরিয়ে যাওয়ায় ক্ষোভ তৈরি হয়েছে পড়ুয়াদের মধ্যে।