রায়গঞ্জ: প্রায় আড়াইমাস পর বিশ্ববিদ্যালয়ে পা রাখলেন উপাচার্য দীপক কুমার রায়। এদিন তিনি এসেছিলেন আন্তজার্তিক মাতৃভাষা দিবস অনুষ্ঠানে যোগ দিতে। অনুষ্ঠানের মাঝপথে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বেরোনোর সময় তাঁর পথ আটকায় তৃণমূল শিক্ষা বন্ধু সমিতির সদস্যরা। উপাচার্যকে ঘিরে বেশ কিছুক্ষণ বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। তাঁদের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়ের বহিষ্কৃত এক কর্মীর সাসপেনশন প্রত্যাহার করতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্মীকে ৬ মাস আগে বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। আর এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বহিষ্কৃত কর্মীকে কাজে ফেরাতে বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে তৃণমূল শিক্ষা বন্ধু সমিতি। এই সংগঠনের অভিযোগ, উপাচার্য দীপক কুমার রায় অন্যায়ভাবে বহিষ্কার করেছেন ওই কর্মীকে। বিভিন্ন সময়ে সংগঠনের তরফে উপাচার্যের সঙ্গে আলোচনায় বসার ইচ্ছে প্রকাশ করলেও উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ে না আসার কারণে সেটা সম্ভব হয়নি। জানা গিয়েছে, দীর্ঘ প্রায় আড়াইমাস পর শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন উপাচার্য। তিনি যোগ দেন আন্তজার্তিক মাতৃভাষা দিবসের অনুষ্ঠানে। বেলা ১টা নাগাদ উপাচার্য অনুষ্ঠানের মাঝপথে বেরিয়ে যাওয়ার সময় তাঁর পথ আটকায় তৃণমূল শিক্ষা বন্ধু সমিতির সদস্যরা। বেশ কিছুক্ষণ তাঁর ঘিরে বিক্ষোভ দেখানো হয়। শিক্ষাকর্মীরা ক্ষোভের সঙ্গে উপাচার্যকে বলেন, ‘আপনি আড়াই মাস পর বিশ্ববিদ্যালয়ে আসায় আমরা স্বাগত জানিয়েছি, আপনি আজ বেলা ১ টা নাগাদ আমাদের সঙ্গে বসবেন বললেও শেষ পর্যন্ত না বসে বেরিয়ে যাচ্ছেন। এটা ঠিক করেননি। প্রায় ছয় মাস হল একজন শিক্ষাকর্মীকে সাসপেন্ড করে রেখেছেন। তদন্ত কমিটি গঠিত হলেও আজ পর্যন্ত কোনও তদন্ত হয়নি।’ এরপর উপাচার্য তাঁদের বলেন, ‘জেলাশাসকের সঙ্গে একটি বৈঠক রয়েছে। সোমবার বহিষ্কারের বিষয় নিয়ে রেজস্ট্রারের সঙ্গে কথা বলুন।’
শিক্ষাকর্মীরা প্রতিবাদের স্বরে বলেন, ‘রেজিস্ট্রার দেখাচ্ছেন উপাচার্য, আর উপাচার্য দেখাচ্ছেন রেজিস্ট্রার। এভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ে শান্তির পরিবেশ ফিরে আসতে পারে না।’ বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃণমূল শিক্ষা বন্ধু সমিতির পর্যবেক্ষক বিজয় দাস বলেন, ‘আমরা আজ সৌজন্যতা দেখিয়েছি, কিন্তু উনি ভেবেছেন দূর্বলতা। আজ আন্তর্জাতিক ভাষা দিবস হওয়ায় শান্তিপূর্ণ ভাবেই ওনাকে যেতে দিয়েছি। তপন নাগের সাসপেনশনের প্রত্যাহারের ব্যাপারে সোমবার রেজিস্ট্রারের সঙ্গে কথা বলতে বলেছেন।’
প্রায় আড়াই মাস পর ক্যাম্পাসে যোগ দেওয়া প্রসঙ্গে রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তী উপাচার্য দীপককুমার রায় বলেন, “আমি কোনও ছুটি নেইনি। কিছু সমস্যার জন্য বাংলো থেকেই বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করছিলাম। বিভিন্ন আধিকারিক সহ অধ্যাপকরা বিভিন্ন কাজে বাংলোতে গিয়ে আমার সঙ্গে কথা বলতেন। তাছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার যাবতীয় কাজ করে চলেছি। তবে এখন থেকে ক্যাম্পাসে আসব। কিন্তু শিক্ষাকর্মীরা আমার সঙ্গে দেখা করেছিলেন। যা বলার বলেছি।”