সুকুমার বাড়ই, রায়গঞ্জ: সেটাও ছিল এমনই একটা ভালোবাসা যাপনের দিন। সালটা ছিল সেই ২০১৯। কিন্তু এক নিমেষে বদলে যায় গোটা ছবি। ভালোবাসার লাল গোলাপের পাপড়ি থেকে চুইয়ে পড়ে জমাট রক্ত। শহিদের রক্তে রাঙা হয়ে ওঠে ভূস্বর্গের পুলওয়ামার মাটি। হামলায় মৃত্যু হয় ৪০ জন সিআরপিএফ জওয়ানের। মুহূর্তের মধ্যে প্রেম দিবসের আনন্দ যেন ঢেকে যায় শোকের চাদরে। ৬ বছর আগের এই দিনটির কথা স্মরণ করে আজও শিউরে ওঠেন রায়গঞ্জের বর্তমান ও প্রাক্তন সেনারা।
১৩ বছর ধরে সেনাবাহিনীতে কর্মরত রয়েছেন রায়গঞ্জের ছত্রপুরের নারায়ণ বিশ্বাস। সেদিনের ঘটনার স্মৃতি আওড়াতে আওড়াতে নারায়ণের বাকরুদ্ধ হয়ে যাচ্ছিল। জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যের আনন্দনাগ জেলার কোকড়নাগ মহকুমার ১৯ নম্বর রাষ্ট্রীয় রাইফেলে তিনি কর্মরত ছিলেন। সেই ঘটনা বর্ণনা করতে গিয়ে আজও শিউরে উঠেন নারায়ণবাবু। বলেন, ‘কমান্ডার রাহুল শর্মার নেতৃত্বে আমাদের যেতে হয়েছিল ৩০ কিলোমিটার দূরে অকুস্থলে। যেতে যেতে নানা দুশ্চিন্তা ভর করেছিল মনের মাঝে। ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি বডিগুলো নিয়ে যাওয়া হয়েছে। চারিদিক নিস্তব্ধতায় ভরা। দুটো গাড়ির কিছুই আর অবশিষ্ট নেই। বিভিন্ন জায়গায় পিণ্ড পিণ্ড ঝাঁঝরা হওয়া মাংসপিণ্ড। এখন প্রতি বছরই ১৪ ফেব্রুয়ারি এলে মনের মাঝে ভেসে আসে সেই দৃশ্য আর শিউরে উঠি।’
অন্যদিকে, রায়গঞ্জ শহরের বাসিন্দা কমলেশ নন্দী সেনাবাহিনীতে ৩১ বছর কাজ করে অবসরগ্রহণ করেছেন। কমলেশবাবুর কথায়, ‘আজও ১৪ ফেব্রুয়ারি এলে শিউরে উঠি। কর্নেল র্যাংকে অ্যান্টি টেররিস্ট ব্রাঞ্চে দীর্ঘদিন কাজ করেছি। কল অফ ডিউটি পালন করেছি। কিন্তু এমন যে ঘটনা ঘটবে সেদিন আমরা কেউ বুঝতে পারিনি।’