Previous Malda | পদ্মপুকুর থেকে প্রজাপতি সংরক্ষণকেন্দ্র, অভিনব শিক্ষাঙ্গন

Previous Malda | পদ্মপুকুর থেকে প্রজাপতি সংরক্ষণকেন্দ্র, অভিনব শিক্ষাঙ্গন

ব্যবসা-বাণিজ্যের /BUSINESS
Spread the love


সিদ্ধার্থশংকর সরকার, পুরাতন মালদা: স্কুলের ক্লাসরুমে উড়ে বেড়াচ্ছে প্রজাপতি। কাঠবিড়ালীর আনাগোনাও লেগে রয়েছে স্কুলে, যা দেখে উৎসাহিত হচ্ছে পড়ুয়া থেকে শিক্ষকরা। বাইরে থেকে কেউ এলে স্কুলের এই পরিবেশ দেখে মুগ্ধ হয়ে যাচ্ছেন। পুরাতন মালদা (Previous Malda) শহরের ওল্ড মালদা কালাচাঁদ হাইস্কুল এখন আর শুধু ইট-কাঠের ভবন নয়, এটি যেন আস্ত একটি প্রকৃতির পাঠশালা।

পদ্মপুকুর, প্রজাপতি সংরক্ষণকেন্দ্র, ভেষজ উদ্যান, সবজি বাগান আর ফুল বাগানের সমন্বয়ে এই স্কুলটি কার্যত এক জীবন্ত সংরক্ষণকেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ জীববৈচিত্র্য পর্ষদ ও স্কুলের যৌথ উদ্যোগে এই প্রকল্পগুলি হয়েছে বলে জানিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ।

স্কুলের প্রতিটি কোণেই যেন প্রকৃতির ছোঁয়া। সবকিছুই পড়ুয়াদের রক্ষণাবেক্ষণ এবং পর্যবেক্ষণের আওতায় রয়েছে। শিক্ষকদের উৎসাহে ছাত্রছাত্রীরাই এই প্রকৃতির পাঠশালায় প্রতিদিনই নতুন কিছু শিখছে। প্রজাপতির জীবনচক্র সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা দেওয়ার জন্য গড়ে তোলা হয়েছে একটি বিশেষ প্রজাপতি সংরক্ষণকেন্দ্র। এর পাশেই রয়েছে শান্ত পদ্মপুকুর, যা স্কুলের পরিবেশকে আরও মনোরম করে তুলেছে।

একাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র দেব হালদার এই অভিনব উদ্যোগ সম্পর্কে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছে। সে বলে, ‘আমরা এখানে হাতেকলমে প্রজাপতির জীবনচক্র থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের উদ্ভিদ সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা তৈরি করতে পারছি। সবমিলিয়ে বলা যায়, আমরা ইকোসিস্টেম সম্পর্কে একটি বাস্তব ধারণা পাচ্ছি।’

শিক্ষকরা জানিয়েছেন, পাঠ্যবইয়ের তাত্ত্বিক জ্ঞানের পাশাপাশি পড়ুয়াদের প্রত্যক্ষভাবে ইকোসিস্টেমের ধারণা দিতেই এধরনের অভিনব উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা কেবল প্রকৃতির সৌন্দর্যই উপভোগ করছে না, বরং পরিবেশের বিভিন্ন উপাদান এবং তাদের পারস্পরিক সম্পর্ক হাতেকলমে শিখছে। এটি তাদের মধ্যে পরিবেশ সচেতনতা এবং প্রকৃতির প্রতি ভালোবাসা জাগিয়ে তুলছে।

স্কুলের প্রধান শিক্ষক রাহুল রঞ্জন দাসের কথায়, ‘প্রজাপতি সংরক্ষণকেন্দ্র, পদ্মপুকুর, ভেষজ উদ্যান, ফুল বাগান, সবজি বাগান, সবকিছুই ছাত্রছাত্রীরা উপভোগ করে। তারাই এগুলোর দেখাশোনা করে এবং এখান থেকে শিক্ষা নিয়ে থাকে। প্রকৃতি সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা দিতেই আমরা এ ধরনের উদ্যোগ নিয়েছি।’

স্থানীয় বাসিন্দা ব্যোমকেশ ঘোষ স্কুলের এই উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন। স্কুলের ভিতরে গেলে তাঁর মনে হচ্ছে, স্কুল যেন আস্ত একটি প্রকৃতির পাঠশালা। স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির অন্যতম কর্তা বৈদ্য ঘোষ জানিয়েছেন, ছাত্রছাত্রীদের প্রত্যক্ষ পাঠশালার ধারণা তৈরির জন্য এগুলি করা হয়েছে।

শিক্ষাকে কেবল শ্রেণিকক্ষের চার দেওয়ালের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে প্রকৃতির বিশাল ক্যানভাসে ছড়িয়ে দিলে তা শিক্ষার্থীদের জন্য ফলপ্রসূ হতে পারে বলে জানিয়েছেন এলাকার বাসিন্দা থেকে ওয়াকিবহাল মহল। এটি কেবল পরিবেশ সচেতনতা বৃদ্ধি করছে না, বরং শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রকৃতিপ্রেম এবং দায়িত্ববোধও জাগিয়ে তুলছে বলে তাঁদের মত। এই স্কুল এখন জেলার শিক্ষাঙ্গনে এক নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে, যা অন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলির জন্য অনুপ্রেরণা হতে পারে।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *