উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: সকলের চোখে ধুলো দিয়ে দিনের পর দিন ধরে চলছিল ভুয়ো দূতাবাস (Pretend Embassy)। সম্প্রতি গাজিয়াবাদে (Ghaziabad) এক ভাড়া করা বাংলোতে এই দূতাবাস চলছে বলে খোঁজ পায় উত্তরপ্রদেশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স (Uttar Pradesh STF)। এরপরই অভিযান চালিয়ে ‘ওয়েস্টার্কটিকা’ (West Arctica) নামে আন্টার্কটিকা মহাদেশের এক ক্ষুদ্র দেশের ভুয়ো দূতাবাস চালানোর অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে মূল অভিযুক্ত হর্ষবর্ধন জৈনকে।
পুলিশ আধিকারিকদের সূত্রে খবর, গাজিয়াবাদের কবিনগর এলাকায় একটি বাংলো ভাড়া নিয়ে সেটিকে ওয়েস্টার্কটিকার দূতাবাসে রূপান্তরিত করেছিলেন হর্ষবর্ধন। এমনকি তিনি সাবোরগা, পুলভিয়া, লোডোনিয়ার মতো অন্যান্য স্বঘোষিত ক্ষুদ্র রাষ্ট্রের কূটনীতিক বলে মিথ্যা দাবিও করেছিলেন। নিজের রাষ্ট্রদূত হিসেবে ভুয়ো পরিচয়কে বৈধতা দেওয়ার জন্য জাল কূটনৈতিক নম্বরপ্লেট লাগানো বিলাসবহুল গাড়ি ব্যবহার করতেন। সেই বিলাসবহুল গাড়িগুলি ওই ভুয়ো দূতাবাসের বাইরেই রাখা থাকত।
এরপর কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলি থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে গত ২২ জুলাই অভিযান চালিয়ে হর্ষবর্ধনকে গ্রেপ্তার করে এসটিএফ। তল্লাশি চলাকালীন কূটনৈতিক নম্বরপ্লেটযুক্ত চারটি বিলাসবহুল গাড়ি উদ্ধার করা হয়েছে। সেই সঙ্গে ১২টি কূটনৈতিক পাসপোর্ট, বিদেশ মন্ত্রকের স্ট্যাম্প সহ জাল নথি, দু’টি জাল প্যানকার্ড, বিভিন্ন দেশ ও সংস্থার ৩৪টি জাল রবার স্ট্যাম্প, দুটি জাল প্রেস কার্ড, নগদ ৪৪.৭ লক্ষ টাকা, একাধিক দেশের বৈদেশিক মুদ্রা এবং আরও ১৮টি জাল কূটনৈতিক নম্বরপ্লেট উদ্ধার করা হয়েছে। এমনকি
প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত ব্যক্তি মূলত বিদেশে ব্যবসায়িক চুক্তি এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিভিন্ন ব্যক্তি এবং সংস্থাগুলির সঙ্গে প্রতারণা করতেন। তিনি ভুয়ো সংস্থার মাধ্যমে একটি হাওয়ালা নেটওয়ার্কও পরিচালনা করতেন বলে অভিযোগ। শুধু তাই নয়, অতীতে বিতর্কিত স্বঘোষিত ধর্মগুরু চন্দ্রস্বামী এবং আন্তর্জাতিক অস্ত্র ব্যবসায়ী আদনান খাশোগির সঙ্গেও সন্দেহভাজন যোগ ছিল তাঁর। ২০১১ সালে একটি অবৈধ স্যাটেলাইট ফোন রাখার অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে একটি মামলাও দায়ের করা হয়েছিল। ইতিমধ্যেই কবিনগর থানায় হর্ষবর্ধনের বিরুদ্ধে একটি নতুন মামলা দায়ের করা হয়েছে। বাকি আইনি প্রক্রিয়া চলছে। পুলিশ জানিয়েছে, হর্ষবর্ধন বড় কোনও আন্তর্জাতিক প্রতারণা চক্রের সঙ্গে জড়িত বলে মনে করা হচ্ছে। তাই তাঁকে জেরা করে এই চক্রে জড়িত থাকা বাকিদেরও খোঁজ মিলতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।