শিলিগুড়ি ও বাগডোগরা: সিকিমকে পর্যটনে গোটা বিশ্বের সেরার সেরা করা হবে। সিকিম শুধু একটি পার্বত্য শহর নয়, বিশ্বের পর্যটনের গন্তব্য হিসাবে বিবেচিত হবে। এখানে অ্যাডভেঞ্চার এবং স্পোর্টস ট্যুরিজমেরও ভালো সুযোগ রয়েছে। বৃহস্পতিবার সিকিমের ৫০ বছর পূর্তি উৎসবে ভার্চুয়ালি অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (PM Narendra Modi) তাঁর বক্তব্যে সিকিমের পর্যটনকেই (Sikkim Tourism) বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘সিকিম শুধু ভারতবর্ষ নয়, গোটা বিশ্বের কাছেই গর্ব। পর্যটনের দিক থেকে এখানে এত সম্পদ রয়েছে যা বিশ্বের আর কোনও জায়গায় নেই।’ আবহাওয়া খারাপ থাকায় এদিন প্রধানমন্ত্রী সিকিমে যেতে পারেননি। বাগডোগরায় বায়ুসেনার ঘাঁটি থেকেই ভার্চুয়ালি তিনি সিকিমের অনুষ্ঠানে অংশ নেন এবং বিভিন্ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করেন।
সিকিম রাজ্যের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে বৃহস্পতিবার গ্যাংটকে আয়োজিত উৎসবে প্রধানমন্ত্রীর অংশ নেওয়ার কথা ছিল। সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার জন্য তিনি সাতসকালের বিমানে দিল্লি থেকে রওনা হয়ে সকাল ৯.২২ মিনিটে বাগডোগরায় বায়ুসেনার আলফাজোনে পৌঁছান। বিমানবন্দরে মোদিকে স্বাগত জানাতে সাংসদ রাজু বিস্ট, রাজ্যের তরফে মেয়র গৌতম দেব, বিজেপির দুই বিধায়ক আনন্দময় বর্মন এবং দুর্গা মুর্মু, জেলা শাসক প্রীতি গোয়েল, শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার সি সুধাকর সহ অন্যরা সেখানে উপস্থিত ছিলেন। এখান থেকেই হেলিকপ্টারে প্রধানমন্ত্রীর সিকিমে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু খারাপ আবহাওয়ার জন্য বায়ুসেনা কোনও ঝুঁকি নেয়নি। ফলে বায়ুসেনার ছাউনি থেকেই প্রধানমন্ত্রী ভার্চুয়ালি সিকিমের উৎসবে ভাষণ দেন। এদিন অনুষ্ঠানে নামচিতে ৫০০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা হাসপাতাল, পেলিংয়ে তিনটি রোপওয়ে, গ্যাংটকে ভারতরত্ন অটলবিহারী বাজপেয়ীর মূর্তির উন্মোচন, পাকিয়ং জেলার মামরিং পশুপালন ও পশুচিকিৎসা পরিষেবা বিভাগের অধীনে গোশালা প্রকল্পের উন্মোচন করা হয়েছে।
ভার্চুয়াল ভাষণে প্রধানমন্ত্রী সিকিমের পর্যটন এবং কর্মসংস্থানের ওপরে জোর দেন। মোদির বক্তব্য, ‘সিকিমকে বিশ্বের সেরার সেরা পর্যটন গন্তব্য হিসাবে গড়ে তুলতে হবে। সিকিম পর্যটনের একটা পরিপূর্ণ প্যাকেজ। পর্যটনে সিকিমে যা রয়েছে সেটা বিশ্বের আর কোনও জায়গায় নেই। এখানে ঝিল, ঝরনা, অদ্ভুত সুন্দর প্রকৃতি, পাহাড়, বৌদ্ধ মঠ সবকিছুই রয়েছে। সিকিম শুধু ভারত নয়, গোটা বিশ্বের গর্ব। এখানে নতুন নতুন স্কাইওয়াক হচ্ছে, রোপওয়ে হচ্ছে।’ তিনি বলেছেন, ‘সিকিমে অ্যাডভেঞ্চার এবং স্পোর্টস ট্যুরিজমেরও প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে। ট্রেকিং, মাউন্টেন বাইকিং সহ অন্যান্য পর্যটনের সুযোগ রয়েছে। আমরা সিকিমকে ওয়েলনেস এবং কনসার্ট ট্যুরিজমের হাব হিসাবে তৈরি করতে চাই।’ সেবক-রংপো রেলপ্রকল্পের প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সিকিমকে রেলপথের সঙ্গে জোড়া হচ্ছে। সেবক-রংপো রেলপ্রকল্প তৈরি হয়ে গেলে সিকিমের সঙ্গে দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও উন্নত হবে। সিকিমের যে অঞ্চলগুলির সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা তৈরি করা সম্ভব নয় সেখানে রোপওয়ে তৈরি করা হোক আমরা চাই।’ গত ১০ বছরে সিকিমের উন্নয়ন এবং অগ্রগতির প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কেন্দ্রীয় সরকার সিকিমের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করছে। সিকিমের ভেষজ কৃষিকাজকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে এখানে ভেষজ মৎস্য চাষকেও উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে।’