দেবদর্শন চন্দ, কোচবিহার: পথ দুর্ঘটনায় লাগাম টানতে পেট্রোল পাম্পগুলিতে (Petrol Pump) ‘নো হেলমেট, নো পেট্রোল’ কর্মসূচি চালু করেছিল জেলা পুলিশ। কিন্তু সরকারি নিয়মকে কার্যত বুড়ো আঙুল দেখিয়ে পাম্পগুলিতে বিনা হেলমেটে আসা বাইক আরোহীদেরও পেট্রোল দেওয়া হচ্ছে। পাম্পগুলোতে সচেতনতামূলক বোর্ড লাগানো থাকলেও তা কেন বাস্তবে মানা হচ্ছে না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এদিন শহর ঘুরে দেখা গিয়েছে, কোনও পাম্পে হেলমেট ছাড়া বাইক আরোহীদের পেট্রোল দেওয়া হচ্ছে। কোথাও আবার লাইনে দাঁড়ানো অন্য চালকদের থেকে হেলমেট ধার নিয়েও পেট্রোল ভরছেন কেউ কেউ।
ট্রাফিক ওসি (সদর) সুরেশ দাস বলেন, ‘সাধারণ মানুষ এবং পাম্প কর্তৃপক্ষকে সচেতন করতে সর্বত্রই পোস্টারিং করা হয়েছে। যদি নিয়ম না মানা হয় তাহলে সেই চালক এবং পাম্পের বিরুদ্ধেও প্রয়োজনে পদক্ষেপ করা হবে।’ নর্থবেঙ্গল পেট্রোল ডিলার অ্যাসোসিয়েশনের জোনাল চেয়ারম্যান দীপঙ্কর বণিক বলেন, ‘পাম্পগুলিতে হেলমেট ছাড়া পেট্রোল দেওয়া হচ্ছে না। সারাদিনে বিনা হেলমেটে দু’-একজন এলেও তাদের ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।’
শহরের কেশব রোড এলাকার একটি পেট্রোল পাম্পে বিনা হেলমেটে পেট্রোল নিতে দেখা গেল দুজন বাইক আরোহীকে। তাঁদের ঠিক সামনেই পোস্টারে লেখা রয়েছে ‘নো হেলমেট, নো পেট্রোল।’ সেই নির্দেশকে কার্যত উপেক্ষা করে পেট্রোল বিক্রি করায় পাম্প কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। একই চিত্র দেখা গিয়েছে খাগড়াবাড়ি এলাকার আরেকটি পাম্পেও। কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতেই দেখা গেল, পাম্পে এক তরুণ হেলমেট ছাড়া পেট্রোল নিতে এসেছেন। সেখানে সরকারি নির্দেশ টাঙানো থাকলেও তার বাস্তবে প্রয়োগ না থাকায় মানুষের সচেতনতার অভাবকে দায়ী করছেন সচেতন নাগরিকরা। কিছুক্ষণ পর অবশ্য দিব্যি পেট্রোল নিয়ে চলে যেতে দেখা গেল সেই তরুণকে। বিষয়টি নিয়ে তাঁকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি অবশ্য কোনও উত্তর দিতে চাননি।
সচেতনতার অভাব যে সবক্ষেত্রেই রয়েছে, এদিন সে কথাই জানিয়েছেন জনৈক মিঠুন সাহা। গুঞ্জবাড়িতে তিনি বলেন, ‘প্রায়দিনই হেলমেট ছাড়া অনেককে পেট্রোল নিতে দেখা যায়। চালকরা যতদিন না সচেতন হচ্ছে, ততদিন প্রচার চালিয়েও কিছু হবে না।’ শহরের এক পেট্রোল পাম্পের কর্ণধার নবনীত জৈন বলেন, ‘যাঁরা হেলমেট ছাড়া পাম্পে আসছেন তাঁদের সচেতন করা হচ্ছে। আমরা তো তাঁদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করতে পারি না। সেকারণে পরের বার যাতে তাঁরা হেলমেট পরে তেল নিতে আসেন, সে বিষয়ে তাঁদের অনুরোধ করা হচ্ছে।’