Periodontal Illness | মাড়ির রোগ থেকে হৃদরোগের ঝুঁকি

Periodontal Illness | মাড়ির রোগ থেকে হৃদরোগের ঝুঁকি

ব্যবসা-বাণিজ্যের /BUSINESS
Spread the love


উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: মাড়ির রোগ পিরিয়ডন্টাল ডিজিজ (Periodontal Illness) নামে পরিচিত। এই রোগ বিশ্বজুড়ে কয়েক লক্ষ মানুষের মধ্যে দেখা যায়। তবে এই রোগ শুধু মুখেরই সমস্যা নয়, বরং গবেষণা বলছে, মাড়ির রোগের সঙ্গে হৃদরোগের উচ্চ ঝুঁকির সম্পর্ক রয়েছে। হার্ভার্ড হেলথের একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে, যাদের মুখের স্বাস্থ্য ভালো নয় তাঁদের হৃদরোগের হার বেশি।

মাড়ির রোগ এবং হৃদরোগের মধ্যে সম্পর্ক বেশ জটিল। যদিও গবেষণা অনুযায়ী, এদের মধ্যে সম্ভাব্য সংযোগ রয়েছে। তবে এটা স্পষ্ট নয় যে, মাড়ির রোগ কি সরাসরি হৃদরোগের কারণ, নাকি কিছু সাধারণ ঝুঁকির কারণ উভয় ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলে। কিছু বিজ্ঞানীর মতে, মাড়ির রোগের জন্য দায়ী ব্যাকটিরিয়া রক্তপ্রবাহে প্রবেশ করে এবং রক্তনালিতে প্রদাহ তৈরি করে, যা থেকে সম্ভবত হার্টের সমস্যা হতে পারে। আবার অন্য বিজ্ঞানীদের মতে, এর জন্য ব্যাকিটিরিয়া নিজে দায়ী নয়, বরং দায়ী মাড়ির রোগের প্রতি রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতার প্রতিক্রিয়া যা রক্তনালির ক্ষতি করতে পারে। এটাও হতে পারে, মাড়ির রোগ ও হৃদরোেগর মধ্যে সরাসরি কোনও সংযোগ নেই, কিন্তু এদের ঝুঁকির কারণগুলি একই। যেমন- ধূমপান মাড়ি ও হার্ট উভয়ের জন্য খারাপ। কারও বা পারিবারিক ইতিহাসের কারণে উভয় রোগ হওয়ার প্রবণতা থাকে। এছাড়া সামগ্রিক স্বাস্থ্যের যত্ন না নিলে, নিয়মিত শরীরচর্চা না করলে মাড়ি ও হৃদরোগ, উভয়েরই ঝুঁকি বাড়তে পারে।

মাড়ির রোগের লক্ষণ

মাড়ি থেকে রক্ত পড়া, বিশেষ করে ব্রাশ বা ফ্লসিং করার পরে

অবিরাম দুর্গন্ধ

ফুলে যাওয়া, প্রদাহ, সংক্রমণ ও মাড়ি লাল হয়ে যাওয়া

দাঁতের থেকে মাড়ির রেখা সরে যাওয়া

আলগা বা নড়াচড়া দাঁত

মাড়ি ও হার্টের রোগের ঝুঁকির কারণ

ধূমপান – তামাকের ব্যবহার মুখের ব্যাকটিরিয়ার প্রতি রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতার প্রতিক্রিয়াকে দুর্বল করে দেয় এবং হৃদরোগে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখে।

ডায়াবিটিস – যাদের ডায়াবিটিস রয়েছে তাদের মাড়ির রোগের ঝুঁকির পাশাপাশি হৃদযন্ত্রেও সমস্যা হতে পারে।

ওবেসিটি – শরীরের অতিরিক্ত চর্বি সিস্টেমিক ইনফ্ল্যামেশন ও ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্সকে উত্তেজিত করে, যা হৃদরোগে অবদান রাখে।

খারাপ খাদ্যাভ্যাস – খাদ্যতালিকায় যদি অত্যধিক শর্করা, অস্বাস্থ্যকর ফ্যাট রাখেন, প্রক্রিয়াজাত খাবার খান তাহলে মাড়ি ও হৃদরোগ হতে পারে।

প্রতিরোধ ও চিকিৎসা

মাড়ির রোগ প্রতিরোধে ও হৃদরোেগর ঝুঁকি কমাতে মুখের স্বাস্থ্য ভালো রাখা একান্ত জরুরি। এজন্য যা করবেন –

দু’বেলা ব্রাশ করা – সফট-ব্রিসলযুক্ত টুথব্রাশ ও ফ্লুরাইডযুক্ত টুথপেস্ট ব্যবহার করুন।

নিয়মিত ফ্লস করা – প্লাক ও দাঁতের মাঝে আটকে থাকা খাবারের কণা সরাতে ফ্লস বেশ উপযোগী।

মাউথওয়াশ ব্যবহার – ব্যাকটিরিয়া কমাতে অ্যান্টিব্যাকটিরিয়াল মাউথওয়াশ দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন।

নিয়মিত দন্ত বিশেষজ্ঞের কাছে যাওয়া – মাড়ির রোগ শনাক্ত ও চিকিৎসা করাতে নিয়মিত চেকআপ করাবেন।

মাড়ির রোগ সারে কি না

মাড়ির রোগ একেবারে সারে না, তবে চিকিৎসার মাধ্যমে একে কার্যকরীভাবে সামলানো যায়। যদিও দাঁতের চারপাশের কাঠামোয় হওয়ার ক্ষতি পুনরুদ্ধার করা সম্ভব নয়। পিরিয়ডন্টাল ট্রিটমেন্ট সংক্রমণ কমাতে পারে এবং আংশিকভাবে হাড় ও টিস্যু পুনরায় গঠন করতে পারে। এছাড়া জেনেটিক্সের একটা ভূমিকা রয়েছে, যে কারণে কারও কারও ওরাল ব্যাকটিরিয়া বা মাড়ির রোগ হওয়ার প্রবণতা বেশি। তবে মাড়ির রোগের প্রাথমিক পর্যায়ে যে জিঞ্জিভাইটিস হয়ে থাকে, সেটা সেরে উঠতে পারে যদি নিয়মিত দাঁত পরিষ্কার রাখেন এবং মুখের ভালো স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলেন। জিঞ্জিভাইটিস যত তাড়াতাড়ি ধরা পড়বে তত ভালো, তাতে পরবর্তী ক্ষতি প্রতিরোধ করা যায়।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *