পতিরাম: বোল্লা অঞ্চলে মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর নির্বাচনে প্রকাশ্যে তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল। গ্রামীণ মহিলা উন্নয়ণ সংঘের বহুমুখি সমবায় সমিতিতে নির্বাচনে তৃণমূলের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল তৃণমূলই। নির্বাচন হয় ১৯টি পদে। এই নির্বাচনে তৃণমূলের প্রধান গোষ্ঠীর প্রার্থী তথা অঞ্চল চেয়ারম্যানের স্ত্রী মমতা পাল জয়ী হলেও, পরাজিত হয়েছেন তৃণমূলের বিরোধী গোষ্ঠীর প্রার্থী সঙ্গীতা রায়।
মূলত স্বনির্ভর গোষ্ঠীর কমিটি নির্বাচন হলেও, এর রাজনৈতিক তাৎপর্য গভীর। বর্তমানে সংঘে ৪১৫টি স্বনির্ভর দল লিপিবদ্ধ রয়েছে। ১৯টি আসনের মধ্যে ১৬টি আসনে আগেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় পেয়েছে তৃণমূলের প্রধান গোষ্ঠী। দুটি পদে কোনও প্রার্থী নমিনেশন জমা দেয়নি। একমাত্র মল্লিকপুরে ভোট হয়, যেখানে ৯-৪ ভোটে মমতা পাল জয়ী হন। বিরোধী গোষ্ঠীর দাবি, কাশিয়াবাটির আসনে তাদের রেজিনা সুলতানা বিবি প্রার্থীকে নাম প্রত্যাহারে বাধ্য করেছে অরধান গোষ্ঠী।
এই সামান্য নির্বাচনকে ঘিরেই তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল ফের মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। বিরোধী গোষ্ঠীর অভিযোগ, বর্তমান বোর্ডে তৃণমূলের মাত্র চারজন পঞ্চায়েত সদস্য রয়েছেন। তাদের সঙ্গে বিজেপির পঞ্চায়েত সদস্যরা বোর্ড চালাচ্ছেন। তৃণমূলের অধিকাংশ নির্বাচিত প্রতিনিধি কোনও সিদ্ধান্তে যুক্ত নন, এমনকি পঞ্চায়েতের কাজও পাচ্ছেন না।
বিরোধী গোষ্ঠীর নেতা নুরুল সর্দারের দাবি, ১৬ তারিখে নির্বাচন সংক্রান্ত তথ্য জানানো হয়েছে, আর ১৭ তারিখে ছিল নমিনেশন জমার শেষ দিন। এত কম সময়ে প্রার্থী দেওয়া সম্ভব ছিল না বলেই তারা প্রতীকী প্রতিবাদের অংশ হিসেবে একটি প্রার্থী দাঁড় করিয়েছিলেন। এর মাধ্যমে তারা বোঝাতে চেয়েছেন যে, দলের অন্দরে স্বচ্ছতা ও গণতন্ত্রের অভাব প্রকট হচ্ছে। তাঁর আরও অভিযোগ, ‘তৃণমূলের অঞ্চল চলছে কিন্তু তৃণমূলের ছেলেরা কাজ পাচ্ছে না। বিজেপির ছেলেরা কাজ পায়। এমনকী তৃণমূলের বেশীরভাগ মেম্বারদের অন্ধকারে রেখে অঞ্চল চালানো হচ্ছে। একুশে জুলাইয়ের সভাতে আমাদেরকে খবরই দেওয়া হয়নি! তাই আমরা এই প্রার্থী দিয়ে একটা প্রতিবাদ জানালাম। এখানে হার জিত ফ্যাক্টর নয়।’
অন্যদিকে প্রধান গোষ্ঠীর বক্তব্য, বিরোধীরা রাজনৈতিক জমি হারাচ্ছে বলেই হঠকারি মন্তব্য করছে। তাঁদের দাবি, প্রকৃত গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতেই নির্বাচন হয়েছে, এবং দলীয় নেতৃত্বের অনুমোদন নিয়েই প্রার্থী মনোনীত করা হয়েছিল।
সব মিলিয়ে, বোল্লা অঞ্চলে তৃণমূল কংগ্রেসের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ফের প্রকট হয়ে উঠল এই নির্বাচনের মাধ্যমেই। দলের একাংশের মধ্যে ক্ষোভ ও অবসাদ ক্রমেই ঘনীভূত হচ্ছে—যা ভবিষ্যতে তৃণমূলের সাংগঠনিক শক্তির উপর প্রভাব ফেলতে পারে বলে রাজনৈতিক মহলের ধারণা।