উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: ভারতীয় বিমানবাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল এপি সিং (AP Singh) শুক্রবার দাবি করেছেন যে, ‘অপারেশন সিঁদুর’ চলাকালীন ভারত, আমেরিকার তৈরি এফ-১৬ (F-16) এবং চিনের তৈরি জে-১৭ (J-17) সহ একাধিক পাকিস্তানি যুদ্ধবিমান ধ্বংস করেছে। একইসঙ্গে ভারতীয় বিমান ধ্বংসের বিষয়ে পাকিস্তানের প্রচারকে তিনি সরাসরি ‘মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে উড়িয়ে দেন।
বায়ুসেনা প্রধানের দাবি, প্রায় ১০০ ঘণ্টার এই সংঘাতের সময় যুদ্ধবিরতির জন্য ভারতের কাছে পাকিস্তানই অনুরোধ করেছিল। তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতার দাবিকে সম্পূর্ণ খারিজ করে দেন। ট্রাম্প বারবার দাবি করেছেন যে, তিনি বাণিজ্যকে হাতিয়ার করে দুই দেশকে সংঘাত থামাতে বাধ্য করেছিলেন। কিন্তু বায়ুসেনা প্রধান স্পষ্ট করেন, ১০ মে সংঘর্ষ বিরতি ঘটেছিল কারণ ইসলামাবাদ ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়ে শান্তি চেয়েছিল, কোনও আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপের ফলে নয়।
এয়ার চিফ মার্শাল এপি সিং উল্লেখ করেন, জম্মু ও কাশ্মীর-এর পাহেলগাঁওয়ে সাধারণ নাগরিকদের উপর হওয়া হামলার জবাবে ভারতীয় সামরিক বাহিনী পাকিস্তান ও পাক-অধিকৃত কাশ্মীরের (PoK) মধ্যে থাকা ৯ টি জঙ্গি শিবির এবং ঘাঁটি ধ্বংস করে দেয়।
তিনি বলেন, “অপারেশন সিঁদুরের সময় আপনারা দেখলেন যে, যারা নিরীহ মানুষ হত্যা করেছে, তাদের মূল্য দিতে হয়েছে এবং বিশ্ব দেখেছে যে, আমরা আমাদের লক্ষ্য অর্জন করেছি। আমরা ৩০০ কিলোমিটার দূরত্বেও আঘাত হেনেছি, তারপরেই তারা (পাকিস্তান) যুদ্ধবিরতির অনুরোধ করেছিল।” তিনি দেশের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থারও প্রশংসা করেন, যা সংঘর্ষের সময় পাকিস্তানি ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন সফলভাবে প্রতিহত বা ধ্বংস করেছিল।
সংঘাতের এই বিশ্লেষণের পাশাপাশি, বায়ুসেনা প্রধান আগামী দিনের সামরিক সংঘাতের বিবর্তন নিয়ে গুরুতর সতর্কবার্তা দেন। তিনি বলেন, ‘পরবর্তী যুদ্ধ আগের যুদ্ধের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা হবে। আমাদের এখন থেকেই ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।’
এই মন্তব্যে গত মাসে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং-এর মন্তব্যের প্রতিধ্বনি শোনা যায়। প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেছিলেন, “আজ একবিংশ শতাব্দীতে সামরিক কৌশল দ্রুত পরিবর্তিত হয়েছে। শুধুমাত্র সৈন্য সংখ্যা বা অস্ত্রের মজুত যথেষ্ট নয়। সাইবার যুদ্ধ (Cyber Warfare), কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI), চালকবিহীন আকাশযান (UAV) এবং স্যাটেলাইট-ভিত্তিক নজরদারি ভবিষ্যতের যুদ্ধকে রূপ দিচ্ছে। নির্ভুলভাবে লক্ষ্যভেদী অস্ত্র, রিয়েল-টাইম ইন্টেলিজেন্স এবং ডেটা-চালিত তথ্য এখন যে কোনও সংঘাতের সাফল্যের মূল ভিত্তি।”