অনুপ সাহা, ওদলাবাড়ি: কর্তৃত্বের রাশ দখলে রাখতে ওদলাবাড়িতে (Oodlabari) তৃণমূলের অন্দরে জোর লড়াই শুরু হয়েছে। গত ১১ মার্চ থেকে এই লড়াই শুরু হয়। সেদিন তৃণমূলের ওদলাবাড়ি অঞ্চল কমিটিকে পাশ কাটিয়ে দলের কাজকর্ম পরিচালনার জন্য মাল গ্রামীণ ব্লক কমিটির সভাপতি সুশীলকুমার প্রসাদ নতুন আহ্বায়ক পদ তৈরি করেন। এরপর আনন্দ মুন্ডার হাতে সমস্ত দায়িত্ব তুলে দেন। এই সিদ্ধান্ত ওদলাবাড়ি অঞ্চল কমিটির সভাপতি সুকান্ত চৌধুরী মেনে নিতে পারেননি। তিনি প্রকাশ্যে দলের এই সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করেছিলেন। সুকান্ত আদতে ওদলাবাড়ির আরেক বরিষ্ঠ তৃণমূল নেতা তমাল ঘোষের অনুগামী।
সেই থেকে নিজের পায়ের তলার জমি শক্ত করতে তমাল উঠেপড়ে লেগেছেন। ব্লক কমিটির অধীন ছয়টি গ্রাম পঞ্চায়েতে ঘনিষ্ঠ অনুগামীদের সঙ্গে তিনি যোগাযোগ করেছেন। পাশাপাশি মাল বিধানসভার অন্তর্গত ওদলাবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের কর্তৃত্বের রাশ টেনে রাখতে গ্রাম পঞ্চায়েতের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের নিয়ে তিনি গোপন বৈঠক করছেন। আগামী মঙ্গলবার ওদলাবাড়িতে প্রকাশ্যে বড়মাপের সভার প্রস্তুতিও শুরু হয়েছে। একইসঙ্গে আহ্বায়ক আনন্দ মুন্ডাকে ওদলাবাড়িতে দল পরিচালনায় কোনও রকম সহযোগিতা করতে তমাল-সুকান্ত জুটি একেবারে রাজি নন।
যা নিয়ে অবশ্য আনন্দ নিজের হতাশা গোপন করেননি। এদিন আনন্দ বলেন, ‘দলের নির্দেশ মেনে ভোটার তালিকা যাচাইয়ের কাজে বিএলএ নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। প্রতিটি বুথ থেকে দুজন করে কর্মীকে এই কাজের দায়িত্ব দেওয়া হবে। এব্যাপারে তমাল ও সুকান্তদা’র সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিলাম। ওঁরা গুরুত্ব দেননি। শুক্রবার বিএলএ তালিকা ব্লক কমিটির কাছে পাঠিয়ে দিয়েছি।’
রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন, ঘনিষ্ঠ অনুগামী আনন্দকে আহ্বায়ক পদে বসিয়ে সুশীল এক ঢিলে দুই পাখি মারার কৌশল নিয়েছিলেন। প্রথমত, ব্লক সভাপতি পদে আসীন হওয়ার পর থেকে নাগালের বাইরে থাকা ওদলাবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের রাজনৈতিক কর্তৃত্ব হাতে রাখা। দ্বিতীয়ত, গোষ্ঠী রাজনীতিতে সুশীলের ঘোর বিরোধী প্রাক্তন ব্লক সভাপতি তমাল ঘোষকে স্পষ্ট বার্তা দিয়ে দলে আরও কোণঠাসা করা। যা ঝানু রাজনীতিবিদ তমালের বুঝতে অসুবিধা হয়নি। এরপর তিনি দলে নিজের জায়গা শক্ত করতে উঠেপড়ে লেগেছেন। অঞ্চল কমিটির সভাপতি সুকান্ত চৌধুরীর কথায়, ‘বুথ লেভেলে কারও সঙ্গে আলোচনা না করে ঘরে বসে বিএলএ তালিকা তৈরি করা হয়েছে। যা মেনে নেওয়া হবে না। আমরাও অঞ্চল কমিটির তরফে সকলের সঙ্গে আলোচনা করে অবিলম্বে বিএলএ তালিকা জমা দেব।’
যদিও এদিন বিষয়টি নিয়ে তমাল মুখ খুলতে চাননি। তিনি বলেন, ‘যা বলার আগামী মঙ্গলবার বলব।’