North Bengal | সক্রিয় জাল ওষুধের রুট, উত্তর ভারত থেকে নেপাল হয়ে ঢুকছে উত্তরবঙ্গে

North Bengal | সক্রিয় জাল ওষুধের রুট, উত্তর ভারত থেকে নেপাল হয়ে ঢুকছে উত্তরবঙ্গে

শিক্ষা
Spread the love


মোস্তাক মোরশেদ হোসেন, বীরপাড়া: ভিনরাজ্য থেকে নেপাল হয়ে লক্ষ লক্ষ সিডেটিভ ট্যাবলেট ঢুকছে উত্তরবঙ্গে (North Bengal)। যে কোনও ওষুধেরই রোগনিরাময় গুণ থাকে। কিন্তু নেশার জন্য ব্যবহৃত এই ট্যাবলেটগুলির সিংহভাগই নকল বা জাল, বলছে পুলিশ (Counterfeit medication)। সূত্রের খবর, নয়ডা, উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ডে তৈরি নকল ট্যাবলেটগুলির একটা বড় অংশ আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার রুটে পাচার হয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশে। আরেকটি অংশ ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে ওই দুটি জেলার আনাচে-কানাচে।

মদের বেআইনি কারবার বরাবরই ছিল। তবে আলিপুরদুয়ারে দিন-দিন পুলিশের মাথাব্যথা বাড়ছে সিডেটিভ ট্যাবলেট নিয়ে। লাগাতার অভিযান, গ্রেপ্তারির পরও জেলায় সক্রিয় সিডেটিভ ট্যাবলেট পাচারচক্রগুলি। ওষুধ ব্যবসায়ী সংগঠনের একটি সূত্র মোতাবেক, উত্তরাখণ্ড, উত্তরপ্রদেশ থেকে নেপালকে সহজ রুট হিসেবে ব্যবহার করে উত্তরবঙ্গে পাচার করা হচ্ছে এইসব ট্যাবলেট যেগুলি মূলত নেশা করতেই কাজে লাগে। সেসব ট্যাবলেট ওষুধ হিসেবে নকল হতে পারে কিন্তু নেশার বাজারে সেগুলির চাহিদা তুঙ্গে। নকল হলেও এসব ট্যাবলেটের পাতার গায়ে এমআরপি লেখা থাকে। তবে মুদ্রিত এমআরপি অনুযায়ী বিক্রি করার থেকে হোলসেলেই এধরনের ওষুধ বেশি দামে বিক্রি হয়। একাধিকবার হাতবদল হয়ে বেশ কয়েকগুণ বেশি দামে সেগুলি পৌঁছায় নেশাখোরদের হাতে। আলিপুরদুয়ার জেলা পুলিশের এক কর্তা বলছেন, ‘উত্তরাখণ্ডে এধরনের নেশার জন্য ট্যাবলেট তৈরি একপ্রকার কুটিরশিল্পে পরিণত হয়েছে। এগুলি মূলত জাল ওষুধ। ওই ওষুধ সেবনে কড়া নেশা হয়। অথচ এগুলি আদৌ ওষুধই নয়। জাল ওষুধ হিসেবে এগুলি কেবলমাত্র নেশা করার জন্যই ব্যবহৃত হয়।’

পুলিশ লাগাতার অভিযান চালাচ্ছে। ধরা পড়ছে পাচারকারীরা। বাজেয়াপ্ত করা হচ্ছে হাজার হাজার সিডেটিভ ট্যাবলেট। কিন্তু সিংহভাগ সামগ্রী যে নাগালের বাইরে থেকে যাচ্ছে তা মানছে পুলিশও। কারণ একেক সময় একেক ধরনের পরিবহণ ব্যবহার করে ট্যাবলেট পাচার করছে চক্রগুলি। পুলিশি অভিযানে দেখা গিয়েছে, পরিস্থিতি বুঝে বাস, ট্রেন, ট্রাক সবই ব্যবহার করছে পাচারকারীরা। বহু সিডেটিভ ট্যাবলেট পাচারকারীকে বমাল গ্রেপ্তারের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন জেলা পুলিশের সাব-ইনস্পেকটর পদমর্যাদার এক পুলিশ আধিকারিক বলছেন, ‘কখন কী ধরনের পরিবহণ ব্যবহার করে ট্যাবলেট পাচার করা হচ্ছে সেটাই বোঝা যাচ্ছে না। কারণ পাচারকারীরা অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নেয়।’

পুলিশ তাহলে আটকাচ্ছে না কেন? এখানে একটা বাস্তব সমস্যা রয়েছে। জয়গাঁর এসডিপিও প্রশান্ত দেবনাথ বলছেন, ‘সড়কপথে হাজার হাজার গাড়ি চলাচল করে। কোন গাড়িতে কে কী পাচার করছে, আগাম খবর না থাকলে বোঝা মুশকিল। কারণ প্রতিটি গাড়ি আটকে তল্লাশি চালানো কার্যত অসম্ভব।’

কয়েক মাস আগে নিশিগঞ্জ থেকে বাসে চাপিয়ে ৩৭ কেজি ৬০ গ্রাম গাঁজা বর্ধমানে পাচারের সময় ফালাকাটায় বমাল ধরা পড়ে ৩ পাচারকারী। তারপর শিলিগুড়ি এলাকায় একটি ভুট্টাবোঝাই ট্রাক থেকে প্রচুর সিডেটিভ ট্যাবলেট বাজেয়াপ্ত করা হয়। এসবের আগে ২০২৩ সালের ২১ অগাস্ট বীরপাড়ায় ২৩ হাজার সিডেটিভ ক্যাপসুল ও ট্যাবলেট সহ পুলিশের হাতে ধরা পড়েছিলেন ২ পাচারকারী। এঁদের মধ্যে একজন বিহারের বাসিন্দা সঞ্জয় কুমার। মহানন্দা এক্সপ্রেস থেকে ট্যাবলেট নিয়ে নামামাত্রই পুলিশ গ্রেপ্তার করেছিল তাঁকে। ওই ঘটনায় বীরপাড়ার বাসিন্দা এক পাচারকারীও ধরা পড়েছিলেন। সঞ্জয়ের অবৈধ কারবারের অংশীদার ছিলেন তিনি।

পুলিশ সূত্রের খবর, ভিনরাজ্যের ট্যাবলেট পাচারকারীরা পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায় স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমেই ট্যাবলেট ছড়িয়ে দিচ্ছে। তবে বেশিরভাগ সময় ধরা পড়ছে স্থানীয় পাচারকারীরাই।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *