রতুয়া: ’২৬-এ নজর রেখে জনতার মন জয়ের চেষ্টায় তৃণমূল, বিজেপি সহ বাকি রাজনৈতিক দলগুলি। তৃণমূলের হাতে থাকবে ক্ষমতা, নাকি মসনদ দখল করবে বিজেপি, চর্চা রয়েছে সাধারণের মধ্যেও। কিন্তু ১০ মাস আগেই ‘আগে রাস্তা, পরে ভোট’, স্পষ্ট করে দিলেন রতুয়া-১ ব্লকের রতুয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের পশ্চিম রুকুন্দিপুর গ্রামের ডুলিপাড়ার বাসিন্দারা৷ জনতার কঠোর মনোভাব বুঝতে পেরে রাস্তা তৈরির আশ্বাস দিচ্ছেন গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান।
এক কিলোমিটারের চার ভাগের এক ভাগ রাস্তা। কিন্তু ২৫০ মিটার রাস্তা তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়নি দুই দশকেও। তাই রাস্তা না হলে ভোট নয়, সিদ্ধান্ত নিয়েছে ডুলিপাড়া। গ্রামের বাসিন্দা রতন চৌধুরী বলছেন, ‘রাস্তার দাবিতে সকলের কাছেই যাওয়া হয়েছে। মিলেছে প্রতিশ্রুতি। কিন্তু ২০ বছরেও রাস্তা মেরামতি করা হয়নি। তাই আমরা গ্রামের সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, যতদিন পর্যন্ত না রাস্তা করা হচ্ছে, ততদিন আমরা কেউ ভোট দেব না৷ আমাদের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেওয়া হবে প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দলকে।’ বর্ষা শুরু হওয়ায় রাস্তাটি আরও বেহাল হয়ে পড়েছে। যার জন্য এলাকায় থাকা শিশুকেন্দ্রটিতে যেতে পারছে না বাচ্চারা। পথ চলতে সমস্যায় পড়ছেন বড়রাও।
শকুন্তলা সাহার বক্তব্য, ‘বৃষ্টির জন্য রাস্তাটি দিয়ে হাঁটাও যাচ্ছে না৷ সাইকেল চালানো যাচ্ছে না৷ পিছল রাস্তায় পা হড়কে পড়তে হচ্ছে। অনেক নেতাই রাস্তার হাল দেখে গিয়েছেন৷ রাস্তা করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু একের পর এক ভোট চলে গেলেও রাস্তা হয়নি।’ সুভাষ চৌধুরীর বক্তব্য, ‘গ্রামে স্কুল আছে৷ ২৫০ মিটার রাস্তাও আছে৷ কিন্তু বর্ষায় রাস্তার হাল এমন হয় যে, শিক্ষক আর ছাত্র, সবাইকেই দুর্ভোগ পোহাতে হয়৷ ইতিমধ্যে পিছল রাস্তায় আছাড় খেয়ে কয়েকজনের হাত, পা ভেঙেছে৷ রাস্তা সংস্কারের জন্য গ্রাম পঞ্চায়েত, ব্লক প্রশাসনকে অনেকবার বলা হয়েছে৷ কিন্তু তারা শুধু দায়িত্ব এড়িয়ে যাচ্ছে।’ নেতাদের শিক্ষা দিতে তাঁদের ভোট না দেওয়ার সিদ্ধান্ত, বলছেন গ্রামবাসীরা।
রতুয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান শেখ আবু শোয়েব আলি বলছেন, ‘কিছুদিন আগে ওই রাস্তাটি তৈরির জন্য আমি পঞ্চায়েত সমিতিতে প্রস্তাব পাঠাই। রাস্তাটির টেন্ডারও হয়েছিল৷ কিন্তু দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদার সংস্থা কাজ করতে গিয়ে বাধার মুখে পড়ে৷ সেই কারণেই রাস্তার কাজ করা যায়নি৷ ওই গ্রামে যাতায়াতের যে সমস্যা রয়েছে, সেটা ঠিক৷ বর্ষার সময় রাস্তায় ভীষণ কাদা জমে যাচ্ছে৷ ওখানে একটা স্কুলও আছে৷ বাচ্চারা স্কুলে যেতে পারে না৷ আমি আবার পথশ্রী প্রকল্পে রাস্তাটির কাজ ধরেছি৷ টেন্ডার হলেই রাস্তার কাজ হবে৷ কিন্তু ওই গ্রামের মানুষজনের কাছে আমার আবেদন, তাঁরা যেন রাস্তার কাজে ঠিকাদার সংস্থাকে বাধা না দেন৷’