উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ আর শেষ রক্ষা হল না। ইয়েমেনি নাগরিককে হত্যার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত কেরলের নার্স নিমিশা প্রিয়ার ফাঁসি কার্যকর করা হবে ১৬ জুলাই। কূটনৈতিক স্তরে বারবার হস্তক্ষেপ করে নিমিশার ফাঁসি রদের চেষ্টা করেছিল ভারতের বিদেশ মন্ত্রক। কিন্তু ইয়েমেনের আইনি প্রক্রিয়ায় সব চেষ্টাই ব্যর্থ হয়। শেষ পর্যন্ত ভারতীয় নার্সের ফাঁসি কার্যকর হওয়ার কথা জানিয়ে দিয়েছে ইয়েমেন সরকার।
২০০৮ সাল থেকে স্বামী ও কন্যার সঙ্গে ইয়েমেনে বসবাস করছেন কেরলের পালাক্কড় জেলার বাসিন্দা নিমিশা। তিনি পেশায় একজন নার্স। সেখানে একটি বেসরকারি হাসপাতালে কাজ করতেন নিমিশা। ২০১৪ সালে স্বামী টমি থমাস ও কন্যা ভারতে ফিরে এলেও, ইয়েমেনে থেকে যান নিমিশা। সেখানে তিনি ইয়েমেনি নাগরিক তালাল আবদো মাহদির সঙ্গে একটি ক্লিনিক খোলেন। মাহদিকে নিমিশার বিজনেস পার্টনার নেওয়ার পিছনে অন্যতম কারণ ইয়েমেনের আইন। ইয়েমেনের আইন অনুযায়ী, কোনও বিদেশিকে ব্যবসা শুরু করতে হলে দেশের নাগরিককে অংশীদার করতে হয়। সেই মতো ২০১৫ সালে দু’জনে মিলে একটি ক্লিনিক শুরু করেন। কিন্তু ব্যবসায়িক সম্পর্কে শিগগিরই ফাটল ধরে।
নিমিশার পরিবারের অভিযোগ, নিমিশার ব্যাবসায়িক অংশীদার মাহদি ধীরে ধীরে ব্যবসার সব টাকা আত্মসাৎ করেন। তাঁকে মাদক সেবনে বাধ্য করার পাশাপাশি নিমিশার পাসপোর্ট কেড়ে নেওয়া হয় যাতে সে ভারতে ফিরতে না পারেন। মাহদি আইনি নথিতে তাঁকে স্ত্রী বলেও দাবি করেন বলে অভিযোগ। ফলে প্রশাসনিক সাহায্য পাওয়াও কঠিন হয়ে দাঁড়ায় নিমিশার পক্ষে।
পরবর্তীতে খুন হয়ে যান তালাল আবদো মাহদি। মাহদি হত্যাকাণ্ডে ২০১৭ সালে গ্রপ্তার হন নিমিশা প্রিয়া। বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয় নিমিশার। ২০২২ সালে তাঁকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করে ইয়েমেনের আদালত। ২০২৩ সালের ৩০ ডিসেম্বর ইয়েমেনের প্রেসিডেন্ট রাশাদ আল আলিমি সেই সাজায় অনুমোদন দেন। তখন থেকেই মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার জন্য সময়সীমা ছিল ৩০ জানুয়ারির মধ্যে।
নিমিশা প্রিয়ার মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার পরেই তাঁর পরিবারের তরফে ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। যাতে ভারতের বিদেশ মন্ত্রক বারবার কূটনৈতিক স্তরে হস্তক্ষেপ করে নিমিশার ফাঁসি রদের বিষয়ে। কিন্তু ইয়েমেনের আইনি প্রক্রিয়ায় কোনওরকম ছাড় পাওয়া যায়নি। শেষ পর্যন্ত আগামী ১৬ জুলাই ফাঁসি কার্যকর হওয়ার কথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।