উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্কের কারণে ভারতের উপর শুল্ক চাপিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald Trump)। যার জেরে ভারত ও আমেরিকার সম্পর্কের (US-India Relation) যে টানাপোড়েন চলছে, তা কার্যত স্পষ্ট। আর ট্রাম্পের এই পদক্ষেপে ক্ষুব্ধ রাষ্ট্রপুঞ্জে নিযুক্ত প্রাক্তন মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিকি হ্যালি (Nikki Haley)। ট্রাম্পকে সতর্ক করে তিনি জানিয়েছেন, আমেরিকা ও ভারতের সম্পর্ক ভাঙনের পর্যায়ে এসে দাঁড়িয়েছে। তাই চিনকে (China) নিয়ন্ত্রণ করতে হলে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক দ্রুত ঠিক করতে হবে আমেরিকাকে।
ভারত ও আমেরিকার সম্পর্কের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে নিকির দাবি, ভারতকে চিনের মতো প্রতিপক্ষ হিসেবে বিবেচনা করা উচিত নয় আমেরিকার। তাছাড়া ট্রাম্প প্রশাসন শুল্ক বা ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষবিরতিতে মার্কিন ভূমিকাকে হাতিয়ার করে বিশ্বের দু’টি বৃহত্তম গণতন্ত্রের মধ্যে বিভেদ তৈরি করতে পারে না। ট্রাম্পকে সতর্ক করে নিকি বলেছেন, ‘চিনের বাণিজ্যিক আগ্রাসন নিয়ন্ত্রণ করতে হলে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক ঠিক করতে হবে আমেরিকার। চিনের সঙ্গে লড়তে হলে আমেরিকার ভারতের মতো বন্ধুর দরকার। এশিয়ায় চিনা আধিপত্যের বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারে এমন একমাত্র দেশ হল ভারত। তাই এমন একটি দেশের সঙ্গে ২৫ বছরের সুসম্পর্ক নষ্ট করা একটি কৌশলগত বিপর্যয় হবে।’
ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য প্রসঙ্গেও নিকির দাবি, চিন থেকে আমদানি বন্ধ করতে বা সাপ্লাই চেইন সরিয়ে নিতে ওয়াশিংটনের নয়াদিল্লির সাহায্যের দরকার। তিনি বলেন, ‘ট্রাম্প প্রশাসন আমাদের দেশে উৎপাদন ফিরিয়ে আনার কাজ করছে। কিন্তু চিনের মতো বিপুল পরিমাণ পণ্য উৎপাদনের সম্ভাবনার দিক থেকে ভারতই একমাত্র রয়েছে। কারণ সেখানেই জামাকাপড়, সস্তায় ফোন এবং সৌর প্যানেলের মতো দ্রুত বা দক্ষতার সঙ্গে উৎপাদন করা যায় না এমন পণ্য তৈরি করা সম্ভব। যা দ্রুত আমেরিকায় তৈরি করা সম্ভব নয়।’ দীর্ঘকালীন মেয়াদে ভারতের তাৎপর্য আরও গভীর বলেই মত নিকির।
উল্লেখ্য, গত কয়েক সপ্তাহে ভারত ও আমেরিকার সম্পর্কের ক্রমশই অবনতি হয়েছে। রাশিয়ার থেকে তেল কেনার জন্য ভারতের উপর শুল্ক আরোপ করেছে। এর আগেও ভারত-পাকিস্তান সংঘাত থামানোর কৃতিত্ব নিয়েছেন ট্রাম্প। যা সরাসরি খারিজ করেছে নয়াদিল্লি। কিন্তু ভারতের সঙ্গে আমেরিকার সম্পর্কের টানাপোড়েনকে চিন কাজে লাগাতে পারে বলেই আশঙ্কা নিকির। তাই বর্তমান পরিস্থিতিতে ভারতের সঙ্গে আমেরিকার সম্পর্ক ঠিক করে নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ বলে মনে করছেন তিনি। উল্লেখ্য, ২০২৪ সালে ট্রাম্পের হয়ে নির্বাচনি প্রচার করেছিলেন নিকি। তবে সম্প্রতি ভারতের সঙ্গে ট্রাম্পের আচরণ নিয়ে ক্ষুব্ধ তিনি।