রণজিৎ ঘোষ, শিলিগুড়ি: পাহাড়ের ১১টি গোর্খা জনজাতিকে তফশিলি উপজাতির স্বীকৃতি দেওয়ার দাবিতে কাজ করছে কেন্দ্র। দার্জিলিংয়ের বিধায়ক নীরজ জিম্বার (Neeraj Zimba) চিঠির জবাবে এমনটাই জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় উপজাতি বিষয়ক মন্ত্রী জুয়েল ওরাম। নীরজের দাবি, ১১টি গোর্খা জনজাতিকে তফশিলি উপজাতির মর্যাদা দেওয়ার দাবি জানিয়ে তিনি যে চিঠি কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে দিয়েছিলেন, তার প্রাপ্তি স্বীকার করে ওই দাবি নিয়ে কাজ করা হচ্ছে বলে মন্ত্রী জানিয়েছেন। মন্ত্রীর এই চিঠিতে অনেকটাই আশা জাগিয়েছে গোর্খা জনজাতিকে, এমনটাই দাবি করেছেন দার্জিলিংয়ের বিধায়ক। তিনি বলেন, ‘কেন্দ্রীয় সরকারই এই সমস্যা মেটাতে পারে। আমরা কেন্দ্রের সঙ্গে সবসময় সমন্বয় রেখে কাজ করছি। আশা করছি গোর্খা জাতিকে দ্রুত ন্যায়বিচার দেওয়া সম্ভব হবে।’
ভুজেল, রাই, মঙ্গর, গুরুং, খাস, সনোয়ার, থামি, দেওয়ান, ধিমাল সহ ১১টি জনজাতিকে তফশিলি উপজাতির মর্যাদা দেওয়ার দাবি পাহাড়ে দীর্ঘদিন ধরেই উঠছে। ভোট এলে তা আরও প্রাসঙ্গিক হয়ে ওঠে। ২০১২ সালে গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (জিটিএ) তৈরি হওয়ার পর বিমল গুরুংয়ের নেতৃত্বাধীন বোর্ড সর্বসম্মত প্রস্তাব গ্রহণ করে তা রাজ্য সরকারের কাছে পাঠিয়েছিল। রাজ্য সরকার বিধানসভায় এই সংক্রান্ত প্রস্তাব এনে তা পাশ করে অনুমোদনের জন্য ২০১৫ সালে কেন্দ্রের কাছে পাঠিয়ে দেয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত এ ব্যাপারে কেন্দ্র কোনও পদক্ষেপ করেনি। যাকে কেন্দ্র করে বহু আন্দোলন, চিঠিচাপাটি হয়েছে। একবার কেন্দ্র একটি সমীক্ষক দল গঠন করেছে বলে জানানো হয়। কিন্তু বাস্তবে কাজ কিছুই হয়নি।
ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার মুখপাত্র শক্তিপ্রসাদ শর্মা বলেন, ‘বিজেপি ১১টি জনজাতি এবং গোর্খাল্যান্ড এই দুটোকে ভোটের ইস্যু করে রেখেছে। ভোট এলেই ১১ জনজাতিকে তফশিলি উপজাতির মর্যাদা দেওয়ার কথা বলে। গোর্খাল্যান্ড ইস্যু সামনে আনা হয়। পাহাড়ের মানুষকে বোকা বানাতে নির্বাচনি ইস্তাহারেও বিজেপি কথাগুলি লিখে রাখে। কিন্তু বাস্তবে কিছুই করে না।’ সাংসদ রাজু বিস্টের বিরুদ্ধেও তোপ দাগেন তিনি।
এরই মধ্যে গত মাসে দার্জিলিংয়ের বিধায়ক বিজেপির নীরজ কেন্দ্রীয় উপজাতী বিষয়ক মন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে বহুদিন ধরে পড়ে থাকা ১১ জনজাতিকে তফশিলি উপজাতির মর্যাদার দাবি দ্রুত মেটানোর আবেদন জানিয়েছিলেন। তার জবাবে মন্ত্রী লিখেছেন, পশ্চিমবঙ্গের ১১টি এবং সিকিমের ১২টি জনজাতিকে তফশিলি উপজাতির মর্যাদা দেওয়ার বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।