NBMC | মেলেনি ট্রলি, দেখলেন না চিকিৎসক! অবহেলায় রোগী মৃত্যু উত্তরবঙ্গ মেডিকেলে  

NBMC | মেলেনি ট্রলি, দেখলেন না চিকিৎসক! অবহেলায় রোগী মৃত্যু উত্তরবঙ্গ মেডিকেলে  

ব্যবসা-বাণিজ্যের /BUSINESS
Spread the love


শিলিগুড়ি: বিনা চিকিৎসায় রোগী মৃত্যুর অভিযোগ উঠল উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বিরুদ্ধে। রোগীকে জরুরি বিভাগে নিয়ে যাওয়ার সময় মেলেনি ট্রলি। বার বার ডাকার পরেও রোগী দেখতে আসেননি চিকিৎসকরা। চূড়ান্ত অবহেলায় জরুরি বিভাগের বাইরে দীর্ঘক্ষণ পড়ে থেকেই মৃত্যু মহিলার। এমনই অভিযোগ মৃতার পরিবারের।

বুধবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে। মৃতের পরিবারের অভিযোগ, চিকিৎসকরা জরুরি বিভাগে বসে গল্পে মশগুল হয়ে ছিলেন। পরিজনদের আকুতি মিনতির পরেও তাঁরা রোগীকে পরিক্ষার জন্য এগিয়ে আসেননি। অথচ জরুরি বিভাগে বর্তমানে একাধিক চিকিৎসক, নার্স, চতুর্থ শ্রেণির কর্মী ডিউটিতে থাকেন। অনেক দেরিতে একটি ট্রলি  পাওয়া গেলেও আধার কার্ড জমা না দেওয়ায় সেই ট্রলি  কেড়ে নেওয়া হয়। এমনকি অবহেলায় চিকিত্সার সুযোগ না পেয়ে  রোগী মৃত্যুর পর পরিবারের সদস্যরা চিৎকার চেঁচামেচি করায় পুলিশ ডেকে মিথ্যা অভিযোগ করে সেখানকার চিকিৎসকরা ঘার ধাক্কা দিয়ে তাঁদের সরিয়ে দেন। দিনের আলোয় মেডিকেলের চিকিৎসক ও কর্মচারীদের এমন অমানবিক চিত্র দেখে থ বনে গিয়েছেন অন্য রোগী এবং পরিজনরাও। হাসপাতাল সুপার ডাঃ সঞ্জয় মল্লিক  বলেছেন, ‘অভিযোগ পেয়েই কর্তব্যরত চিকিৎসক, নার্স সবাইকে ডেকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। প্রয়োজনে সেখানকার ভিডিও ফুটেজও দেখা হবে।’

তবে, এদিন ঘটনার তদন্তে কোনও কমিটি তৈরি হয়নি। প্রশ্ন উঠছে, পরিবারের অভিযোগকে মান্যতা দিয়ে এদিনই কেন তদন্ত কমিটি তৈরি হল না? ওই পরিবার বার বার দাবি করলেও কেন এদিনের ঘটনার ভিডিও ফুটেজ খতিয়ে দেখা হল না? হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে এর কোনও জবাব মেলেনি।

এর আগেও বহুবার মেডিকেলের চিকিৎসক, নার্স, চিকিৎসাকর্মীদের অমানবিক চেহারা দেখেছেন রোগীর পরিজনরা। এদিনও ফের একই চিত্র দেখা গেল। ফাঁসিদেওয়া ব্লকের চটেরহাটের তেবারিগছ এলাকার বাসিন্দা দবিরুননেসা (৫০) নামে এক মহিলার এদিন সকালে বাড়িতেই প্রচন্ড শ্মাসকষ্ট শুরু হয়। তাঁকে সঙ্গে সঙ্গে ফাঁসিদেওয়া গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানকার চিকিৎসকরা মেডিকেলে রেফার করে দেন। রোগীকে অ্যাম্বুলেন্সে চাপিয়ে মেডিকেলে নিয়ে আসা হয়। মেডিকেলের জরুরি বিভাগের সামনে অ্যাম্বুলেন্স দাঁড় করিয়ে ট্রলি জন্য ছুটে যান মহিলার ছেলে মহঃ বিলাল এবং কাকা মহঃ আলম। কিন্তু জরুরি বিভাগে সেই সময় ট্রলি ছিল না। সেখান থেকে বলা হয়, ২৫ নম্বর ঘরে গিয়ে ট্রলি নিয়ে আসুন। ২৫ নম্বর ঘরে প্রথমে ট্রলি ছিল না। মৃতার ভাই মহঃ আলম বলেন, ‘১০ মিনিট অপেক্ষা করার পর একটি ট্রলি এলে আমরা সেটি নিয়ে জরুরি বিভাগের দিকে এগোই। কিন্তু ট্রলি বিভাগ থেকে একজন দৌড়ে এসে আমাদের হাত থেকে ট্রলি কেড়ে নিয়ে আগে আধার কার্ড এনে জমা দিলে তার পরেই ট্রলি দেওয়া হবে বলে জানান। আমরা সেখান থেকে দৌড়ে জরুরি বিভাগে এসে আবার চিকিৎসকদের একটু বাইরে বেরিয়ে আমাদের রোগীকে দেখার অনুরোধ করি।  কিন্তু তাঁরা বের হননি। আমরাই বাধ্য হয়ে কলে করে তাঁকে অ্যাম্বুলেন্স থেকে নামিয়ে জরুরি বিভাগে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি। সেই সময়ই রোগী শরীর পুরো ছেড়ে দেয়। জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন।

মৃতার ছেলে মহঃ বিলাল এই ঘটনার পর চিৎকার করে চিকিত্সকদের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলতে থাকেন। অভিযোগ, সেই সময় জরুরি বিভাগ থেকে কয়েকজন বেরিয়ে মহঃ বিলালের জামার কলার ধরে বাইরে বের করে দিয়ে পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ এসে প্রথমে বিলালকে হেপাজতে নেয়। কিন্তু পরিবারের বক্তব্য শুনে এবং সিসিটিভি ফুটেজ দেখার পর তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। অর্থাৎ পুলিশও বুঝে যায় যে, মৃতার পরিবারের কোনও দোষ নেই। এর পরেই পরিবারের তরফে হাসপাতাল সুপারের কাছে চিকিৎসায় গাফিলতিতে রোগী মৃত্যুর লিখিত অভিযোগ জানায় পরিবার।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *